মাগুরার শ্রীপুরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিজ নির্বাচনি এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য চালের বরাদ্দ দাবি করায় শ্রীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান তিন ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
চেয়ারম্যানের হামলার শিকার ওই তিন ইউপি সদস্য হচ্ছেন- শ্রীপুর সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আবদুল আলিম, ৭নং ওয়ার্ডের মজিদ মোল্যা এবং ৮নং ওয়ার্ডের মকবুল হোসেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ইউপি সদস্যরা জানান, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা বিজয়ী হলেও চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের ঘনিষ্ঠ ৩ প্রার্থীর পরাজয় ঘটে। এ ঘটনার পর থেকেই চেয়ারম্যান ওই তিন ইউপি সদস্যকে নানাভাবে কোণঠাসা করে রেখেছেন। বিভিন্ন সময়ে ওয়ার্ডের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন বরাদ্দ থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে ঈদুল আজহা সমাগত হওয়ায় সরকারি ভিজিএফের চাল পাওয়ার আশায় স্থানীয় দরিদ্র মানুষ তাদের কাছে ভিড় করছেন বিধায় ওই তিন ইউপি সদস্য বুধবার দুপুরে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের কক্ষে গিয়ে নিজেদের দাবি উত্থাপন করেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ওপর হামলা করেন। পরে পরিষদে অবস্থানরত ৮-১০ জন হকিস্টিক ও লোহার রড দিয়ে তাদের পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
এ ঘটনার পর আহত ইউপি সদস্যদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
চেয়ারম্যানের হামলার শিকার ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল আলিম বলেন, বিগত নির্বাচনে আমি বিজয়ী হলেও তার প্রার্থীর পরাজয় ঘটে। অথচ চেয়ারম্যান আমাকে কোনো কাজে না রেখে তার অনুসারী পরাজিত মেম্বার প্রার্থীকে দিয়ে আমার ওয়ার্ডের বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। এতে স্থানীয় ভোটাররা আমাকে ভালোবেসে নির্বাচিত করলেও তাদের কোনো কাজের সুযোগ পাচ্ছি না। একই অবস্থা অন্য দুই মেম্বারেরও। চেয়ারম্যান তাদের দাবি মেনে নেওয়া তো দূরে থাক উলটো নিজে নেতৃত্ব দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, আমি একটি মার্ডার মামলার আসামি। ওই তিন মেম্বার সেই মামলায় আমার বিরোধিতা করেছিল। যে কারণে তাদের সঙ্গে আমার একটু দূরত্ব আছে। এছাড়া তারা গত আড়াই বছরে পরিষদে আসে না। কোনো খোঁজখবরও নেয় না। উলটো বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার জন্য তারা আমাকে চার্জ করেছিল; যা নিয়ে তাদের সঙ্গে ঝামেলা তৈরি হয়েছে কিন্তু মারপিট করা হয়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ তাসমীম আলম বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মধ্যে গ্রুপিং রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে উত্তেজনা নিরসনে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।