রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯ সালের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে সূক্ষ্ম কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং বিভাগের কর্মরত শিক্ষক গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে- যেটা মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে এখন দেশবাসীর নিকট উম্মুক্ত।
অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর গোলাম রব্বানী নামের প্রার্থী চূড়ান্ত নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তার গ্রামের ঠিকানায় ২২/১২/২০০৯ তারিখে নিয়োগ পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু শুধু নামের সঙ্গে মিল থাকায় এবং সিন্ডিকেট কপিতে পিতার নাম না থাকার সুযোগ নিয়ে ঠাকুরগাঁও এর আওয়ামীলগপন্থী গোলাম রব্বানী তৎকালীন প্রশাসনকে বিপুল অর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রাজশাহীর গোলাম রব্বানীকে জামায়াত-বিএনপি ট্যাগ দিয়ে যোগদান করতে না দিয়ে ২৭-১২-২০০৯ ইং তারিখে নিয়োগপত্রে পিতার নাম যুক্ত করে যোগদান করেন ইতিহাস বিভাগে।
এক তথা অনুসন্ধানী রিপোর্টে জানা যায়,২০০৯ সালের ১৭-১২-২০১৯ ইং তারিখে ইতিহাস বিভাগের নিয়োগ বাছাই বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রভাষক পদে গোলাম রব্বানী ও আরা তানজিয়ার নাম চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ১৯/১২/২০০৯ ইং তারিখে একাদশ-তম সিন্ডিকেট সভায় পিতার নাম ছাড়াই শুধু প্রার্থীর নাম রেখে তা অনুমোদন করা হয়। রাজশাহীর গোলাম রব্বানী ও আরা তানজিয়া সহ ওই সিন্ডিকেটে অনুমোদন প্রাপ্ত বিভিন্ন বিভাগের ১৮ জন শিক্ষককে ২২/১২/২০০৯ ইং তারিখে নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়। কিন্তু ইতিহাস বিভাগে আরা তানজিয়া যোগদান করলেও রাজশাহীর গোলাম রব্বানীকে বাদ দিয়ে ২৭-১২-২০০৯ ইং তারিখে পিতার নাম যুক্ত করে ঠাকুরগাঁও এর গোলাম রব্বানীকে নিয়োগ পত্র পাঠিয়ে কিভাবে যোগদান করানো হলো তা নিয়ে জনমনে সূক্ষ্ম কারচুপি ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
আবার ১৯-১২-২০০৯ ইং তারিখের সিন্ডিকেট কপি ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সেখানে কোন প্রার্থীরই পিতার নাম নেই। তাহলে ঠাকুরগাঁও এর গোলাম রব্বানীর নামে কিভাবে পিতার নাম সহ ২৭-১২-২০০৯ ইং তারিখে নিয়োগ পত্র পাঠানো হলো? তিনিই প্রকৃত মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী হলে তাকে কেন আরা তানজিয়া সহ অন্যান্য প্রার্থীদের কে নিয়োগপত্র পাঠানো তারিখে অর্থাৎ ২২/১২/২০০৯ ইং তারিখে নিয়োগ পত্র দেওয়া হলো না তা নিয়েও জনমণে জালিয়াতির প্রশ্ন ধরা দিয়েছে। এদিকে রাজশাহীর গোলাম রব্বানী গত ১৬/০১/২০২৫ ইং তারিখে হাইকোর্টের আদেশের কপি রেজিস্টার মহোদয়ের কাছে জমা দিতে গেলে ঠাকুরগাঁও এর রব্বানী জিয়া নামের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে দিয়ে তাকে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নসহ নানাভাবে হেনস্তা করেন। বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।পত্রিকা রিপোর্টার কে হুমকি ধামকি দিয়েছেন এবং রাজশাহীর রব্বানীর পক্ষে যায় এমন কোন সংবাদ প্রকাশিত না করতে বাধ্য করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভাগীয় কমিশনার সহ তদন্ত কমিটির অনেককেই বিভিন্ন প্রলভোণ দেখিয়ে রিপোর্ট নিজের পক্ষে নেওয়ার ও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্র থেকে।
ঠাকুরগাঁও এর গোলাম রব্বানীর নতুন কুট-কৌশল হচ্ছে রাজশাহীর গোলাম রব্বানী নাকি বাংলায় তার নাম রাব্বানী লিখেন। তাই চাকুরীর প্রকৃত দাবিদার নাকি তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের রব্বানী। কিন্তু তিনি হয়তো এটা জানেন না যে বাংলায় রব্বানী আর রাব্বানী নাম দ্বারা আসলে একজনকে বোঝানো হয় যিনি আমাদের সৃষ্টি কর্তা আল্লাহপাক। তাছাড়া এসএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী দুজনের নাম কিন্তু একই- GOLAM RABBANI সেখানে ঠাকুরগাওয়ের রব্বানী RAরিখে RO লিখেন না। আবার ২২/১২/২০০৯ ইং তারিখে অন্যান্য ১৭ জন প্রার্থীর সঙ্গে রাজশাহীর গোলাম রব্বানীই কিন্তু নিয়োগ পত্র পেয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রকৃত নিয়োগপ্রাপ্ত রাজশাহীর গোলাম রব্বানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আসলে রব্বানী আর রাব্বানী নাম পৃথিবীতে বহু মানুষেরই আছে। কিন্তু কোন মানুষের কাছে চিঠিপত্র যায় তার নামের আকার বা একার ভুলের কারণে নয় বরং চিঠি যায় আর স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী। এছাড়া ৭-১২-২০০৯ ইং তারিখে আমার নাম গোলাম রব্বানী, মনিমুক্তা ছাত্রাবাস, (ফিরোজা মেনশন) ক্রম নং ১০৬, কাজলাগেট, কাজলা, রাজশাহীর ঠিকানায় ভাইভা / সাক্ষাৎকার কাড পাঠানো হয়েছিল। আবার গোলাম রব্বানী নাম দিয়েই আমার গ্রামের ঠিকানায় নিয়োগ পত্র ২২/১২/২০০৯ ইং তারিখে পাঠানো হয়। তাছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো একাধিক ভাইভা কার্ডেও আমার নাম গোলাম রব্বানী লিখে পাঠিয়েছেন, আমার স্থায়ী/অস্থায়ী ঠিকানায়। যা এখনো আমার কাছে সংগ্রহে আহে। আসলে নাম নয়, ঠিকানাই হচ্ছে একজন মানুষকে নির্দিষ্ট করার মূল মাপকাঠি।
তিনি আরো জনান প্রতিবেদক কে, মহামান্য হাইকোর্টের কাছে আমি ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম, মহামান্য হাইর্কোট সুনানী শেষে ০৭-০১-২০২৫ ইং তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি রুলনীশি ও ডাইরেকশন অর্ডার জারি করে ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে আইনানুগ ভাবে নিষপত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এখন বৈষম্যবিরোধী স্বচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমার বিনীত নিবেদন, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।