ঢাকা ০৯:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ বোরহানউদ্দিনে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হলেন বিখ্যাত আইটি বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন দক্ষিণ মুগদা থানা ৭১ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সংস্কারের বৈধতা আমরা দিতে পারব না: ফখরুল জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে পদক্ষেপের কথা জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেফতার কোনো দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে মাঠে নামিনি: সিইসি আনিসুল হক আরেক মামলায় গ্রেফতার চান্দিনায় মারুতির পেছনে বাসের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু,অন্তঃসত্ত্বা মা সহ আহত ৩

তাইওয়ানে চীনের আক্রমণ সফল হবে? যা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা

এশিয়ার বৃহৎ সামরিক পরাশক্তি চীন স্বশাসিত প্রতিবেশী দেশ তাইওয়ানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কয়েক বছর ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানকে ঘিরে নিজেদের সামরিক কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করেছে বেইজিং। ধারণা করা হচ্ছে, যদি তাইওয়ান দখলে চীন কোনো আক্রমণ চালায় সেটি হতে পারে ২০২৭ সালে।

চীন যদি সত্যি সত্যি তাইওয়ানে হামলা চালায় তাহলে দেশটি কী সফল হবে? এ নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক সংস্থা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, যুদ্ধের শুরুতেই জাপানে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটিগুলো চীনের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনকি গুয়ামে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালাতে পারে চীন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দুটি রণতরী এবং ১০ থেকে ২০টি যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। বেশ কিছু বিষয় বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি দাবি করেছে, চীনও তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। তাইওয়ানের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করার আগেই চীনের সেনারাও ধ্বংস হয়ে যাবে।

এছাড়া তাইওয়ান চীনের মূল ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালাতে পারে। যা ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব অস্থিতিশীল করে দিতে পারে। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে সহায়তা না করে তাহলে মাত্র তিন মাসের মধ্যে জোরপূর্বক পুরো তাইওয়ান দখল করে ফেলবে চীন।

যুদ্ধের শুরুটা কেমন হবে?

মার্কিন সংস্থাটি ধারণা করছে, তাইওয়ানে চীনের আক্রমণ শুরু হবে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে। এই হামলায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা তাইওয়ানের বেশিরভাগ যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দেবে। এরপর চীনের নৌবাহিনী তাইওয়ানকে ঘিরে ধরবে এবং দেশটিতে পিপলস লিবারেশন আর্মির আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত কয়েক হাজার সেনাকে প্রবেশ করাবে।

তবে তখন চীনের এসব অগ্রসরমান সেনাদের জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ধ্বংস করে দেবে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ এবং জাপানে অবস্থিত ঘাঁটি ধ্বংস করলেও তারা তাইওয়ান দখলে সফল হবে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী যুদ্ধ কলেজের বিশেষজ্ঞ ম্যাথু কানসিয়ান বলেছেন, তাইওয়ানকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্ররা সফল হবে কিনা এগুলো কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে। প্রথমত, চীনকে ঠেকাতে তাইওয়ানকেই সবচেয়ে বেশি বদ্ধপরিকর হতে হবে। দ্বিতীয়ত, জাপানে অবস্থিত বিমান ঘাঁটি থেকে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জাপানের অনুমতি দিতে হবে।

তিনি বলেছেন, এ দুটি বিষয় ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব বেশিদিন রক্ষা করতে পারবে না। মার্কিন ওই পর্যবেক্ষক সংস্থার গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, এই যুদ্ধে অনেক প্রাণহানি ঘটবে। প্রথম কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা যেতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্র ওই মুহূর্তে চীনের বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে কিনা এ নিয়ে পরিষ্কার করে এখনই কিছু বলা যায় না।

এছাড়া সংস্থাটি জানিয়েছে, তাইওয়ান তাদের সামরিক বাজেটের বেশিরভাগ অর্থ জাহাজ ও যুদ্ধবিমানের ওপর খরচ করে। যদি চীন আক্রমণ শুরু করে তাহলে একগুলো মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এ কারণে টিকে থাকার মতো অস্ত্র তৈরি ও সেনা প্রস্তুত করতে হবে দেশটিকে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ

তাইওয়ানে চীনের আক্রমণ সফল হবে? যা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা

আপডেট সময় ০২:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩

এশিয়ার বৃহৎ সামরিক পরাশক্তি চীন স্বশাসিত প্রতিবেশী দেশ তাইওয়ানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কয়েক বছর ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানকে ঘিরে নিজেদের সামরিক কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করেছে বেইজিং। ধারণা করা হচ্ছে, যদি তাইওয়ান দখলে চীন কোনো আক্রমণ চালায় সেটি হতে পারে ২০২৭ সালে।

চীন যদি সত্যি সত্যি তাইওয়ানে হামলা চালায় তাহলে দেশটি কী সফল হবে? এ নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক সংস্থা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, যুদ্ধের শুরুতেই জাপানে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটিগুলো চীনের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনকি গুয়ামে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালাতে পারে চীন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দুটি রণতরী এবং ১০ থেকে ২০টি যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। বেশ কিছু বিষয় বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি দাবি করেছে, চীনও তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। তাইওয়ানের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করার আগেই চীনের সেনারাও ধ্বংস হয়ে যাবে।

এছাড়া তাইওয়ান চীনের মূল ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালাতে পারে। যা ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব অস্থিতিশীল করে দিতে পারে। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে সহায়তা না করে তাহলে মাত্র তিন মাসের মধ্যে জোরপূর্বক পুরো তাইওয়ান দখল করে ফেলবে চীন।

যুদ্ধের শুরুটা কেমন হবে?

মার্কিন সংস্থাটি ধারণা করছে, তাইওয়ানে চীনের আক্রমণ শুরু হবে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে। এই হামলায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা তাইওয়ানের বেশিরভাগ যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দেবে। এরপর চীনের নৌবাহিনী তাইওয়ানকে ঘিরে ধরবে এবং দেশটিতে পিপলস লিবারেশন আর্মির আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত কয়েক হাজার সেনাকে প্রবেশ করাবে।

তবে তখন চীনের এসব অগ্রসরমান সেনাদের জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ধ্বংস করে দেবে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ এবং জাপানে অবস্থিত ঘাঁটি ধ্বংস করলেও তারা তাইওয়ান দখলে সফল হবে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী যুদ্ধ কলেজের বিশেষজ্ঞ ম্যাথু কানসিয়ান বলেছেন, তাইওয়ানকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্ররা সফল হবে কিনা এগুলো কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে। প্রথমত, চীনকে ঠেকাতে তাইওয়ানকেই সবচেয়ে বেশি বদ্ধপরিকর হতে হবে। দ্বিতীয়ত, জাপানে অবস্থিত বিমান ঘাঁটি থেকে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জাপানের অনুমতি দিতে হবে।

তিনি বলেছেন, এ দুটি বিষয় ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব বেশিদিন রক্ষা করতে পারবে না। মার্কিন ওই পর্যবেক্ষক সংস্থার গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, এই যুদ্ধে অনেক প্রাণহানি ঘটবে। প্রথম কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা যেতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্র ওই মুহূর্তে চীনের বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে কিনা এ নিয়ে পরিষ্কার করে এখনই কিছু বলা যায় না।

এছাড়া সংস্থাটি জানিয়েছে, তাইওয়ান তাদের সামরিক বাজেটের বেশিরভাগ অর্থ জাহাজ ও যুদ্ধবিমানের ওপর খরচ করে। যদি চীন আক্রমণ শুরু করে তাহলে একগুলো মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এ কারণে টিকে থাকার মতো অস্ত্র তৈরি ও সেনা প্রস্তুত করতে হবে দেশটিকে।