নোয়াখালী সদর উপজেলার পৌরসভা এলাকায় বাবার রহস্যজনক মৃত্যুর আধঘণ্টা পর ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মেয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে নোয়াখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উকিলপাড়ার নরেশ চন্দ্র দের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন- নোয়াখালীর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উকিলপাড়ার নরেশ চন্দ্র দে (৫০) ও তার মেয়ে তিশা দে (১৯)।
সুধারাম থানার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান পাঠান জানান, নরেশ চন্দ্রের মেয়ে তিশা ফেনীর একটি কলেজে পড়তেন। পড়ালেখা অবস্থায় সেখানে একটি মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করেন। বিষয়টি তার বাবা জানতে পেরে তাকে ফেনী থেকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ নিয়ে মেয়েকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করেন বাবা। সে যেন তার স্বামীর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে; কিন্তু মেয়ে তার স্বামীর পক্ষে অনড় ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ছোট ছেলে স্কুলে যাওয়ার সময় টাকার জন্য বাবার ঘরে গিয়ে দেখে তার বাবার নিথর দেহ পড়ে আছে। আশপাশে রক্ত। তার কিডনি ডায়ালিসিসের ফিস্টুলার স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তার চিৎকার শুনে পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসে। তিশা বাবার এ অবস্থা দেখে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে আলাদা একটা কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেন। পরে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে সুধারাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, নরেশ কিডনি রোগী ছিলেন। তিনি বাসায় ডায়ালিসিস করতেন। তার মেয়ে ফেনী মেডিকেলে পড়তেন। সেখানে একজন মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করেন। বিষয়টি তিনি ভালোভাবে নেননি। এজন্য মেয়েকে ফেনী থেকে নিয়ে আসেন।
ওসি রনি আরও বলেন, এরপর মেয়েকে সারা রাত বুঝানোর চেষ্টা করেন। মেয়ে নাছোড়বান্দা। এ নিয়ে চিল্লাচিল্লি করে তিনি স্ট্রোক করে মারা যান। বাবার মৃত্যুর আধঘণ্টা পর মেয়ে গিয়ে আত্মহত্যা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।