ঢাকা ০১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

একদিনে নিহত ৩ পর্যটক, সেনা-পুলিশ সমাবেশের ঘোষণা নেতানিয়াহুর

অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর এবং তেল আবিব শহরে ৩ বিদেশি পর্যটক নিহত হওয়ার পর কঠোর অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। ভূখণ্ডটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালানা করতে সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন।

গত বুধবার, ১৩ রমজান ছিল ইহুদিদের পবিত্র পাসওভার দিবস। ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের পূর্বে এই দিনে আল আকসা মসজিদ চত্ত্বরে ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী ছাগল জবাই করা হতো।

মঙ্গলবার অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড শাসনকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ইহুদি চরমপন্থীদের হাত থেকে আল আকসাকে রক্ষার আহ্বান জানায়।

কারণ এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছিল যে —ইহুদি চরমপন্থীরা পাসওভার দিবস উপলক্ষে বিরোধপূর্ণ ওই এলাকায় ছাগল জবাই করতে পারে।

এর পর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলো লক্ষ্য করে গাযা থেকে ৯টি রকেট ছোড়া হয়। জবাবে গাযায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।

এদিকে, পাসওভার দিবস উপলক্ষ্যে  ইহুদি চরমপন্থীদের সম্ভাব্য ছাগল জবাই প্রতিহত করতে মঙ্গলবার রাতে তারাবির নামাজের পর কয়েক শ’ মুসল্লি মসজিদের সামনে ব্যরিকেড তৈরি করে অবস্থান নেয়।

সেই রাতেই আল আকসা চত্বরে এসে পৌঁছায় ইসরায়েলি পুলিশ এবং কয়ে ঘণ্টা ধরে মুসল্লিদের মসজিদ চত্বর থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।

সাধারণ মুসল্লিরা যেন ফজরের নামাজ পড়তে পারে এবং মসজিদ চত্বরে যেন কোনো সহিংসতা না ঘটে— নিশ্চিত করতে ভোরের দিকে কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে পুলিশ। তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অবস্থান নেওয়া মুসল্লিদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সংঘাতের চিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি— উভয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে। এই উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার দুপুরের দিকে পশ্চিম তীরের ইফরাত শঞরে দুই ব্রিটিশ তরুণীকে গুলি করে হত্যা করা হয় আহত হন আরও একজন নারী।

তার কয়েক ঘণ্টা পর, সন্ধ্যায় তেল আবিবে একটি পর্যটক দলের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে। এতে নিহত হন এক পর্যটক এবং আহত হন ও দলের বাকি ৫ জন। তাদের সবার বয়স ১৭ থেক ৭৪ বছরের মধ্যে। নিহত ওই পর্যটক ছিলেন ইতালির নাগরিক, আর আহতরা সবাই ব্রিটেনের।

ইফরাত শহরের ইহুদি অধ্যুষিত এলাকার মেয়ল ওদেদ রেভিভি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিহত দুই তরুণী সম্পর্কে দুই বোন ছিলেন; একজনের বয়স ১৬, অপরজনের ২০। তাদের সঙ্গে মধ্যবয়সী যে নারী আহত হয়েছেন, তিনি সম্পর্কে তাদের মা।

তেল আবিবে পর্যটক নিহত হওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে জেরুজালেমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনাসদস্য ও পুলিশ বাহিনীর সীমান্ত নিরাপত্তা শাখার সদস্যদের সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

‘ইসরায়েলি পুলিশের সীমান্তরক্ষী শাখা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর রিজার্ভ সৈন্যদেরকে এ ব্যাপারে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে,’ উল্লেখ করা হয় সেই বিবৃতিতে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

একদিনে নিহত ৩ পর্যটক, সেনা-পুলিশ সমাবেশের ঘোষণা নেতানিয়াহুর

আপডেট সময় ১১:৪৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর এবং তেল আবিব শহরে ৩ বিদেশি পর্যটক নিহত হওয়ার পর কঠোর অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। ভূখণ্ডটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালানা করতে সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন।

গত বুধবার, ১৩ রমজান ছিল ইহুদিদের পবিত্র পাসওভার দিবস। ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের পূর্বে এই দিনে আল আকসা মসজিদ চত্ত্বরে ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী ছাগল জবাই করা হতো।

মঙ্গলবার অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড শাসনকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ইহুদি চরমপন্থীদের হাত থেকে আল আকসাকে রক্ষার আহ্বান জানায়।

কারণ এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছিল যে —ইহুদি চরমপন্থীরা পাসওভার দিবস উপলক্ষে বিরোধপূর্ণ ওই এলাকায় ছাগল জবাই করতে পারে।

এর পর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলো লক্ষ্য করে গাযা থেকে ৯টি রকেট ছোড়া হয়। জবাবে গাযায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।

এদিকে, পাসওভার দিবস উপলক্ষ্যে  ইহুদি চরমপন্থীদের সম্ভাব্য ছাগল জবাই প্রতিহত করতে মঙ্গলবার রাতে তারাবির নামাজের পর কয়েক শ’ মুসল্লি মসজিদের সামনে ব্যরিকেড তৈরি করে অবস্থান নেয়।

সেই রাতেই আল আকসা চত্বরে এসে পৌঁছায় ইসরায়েলি পুলিশ এবং কয়ে ঘণ্টা ধরে মুসল্লিদের মসজিদ চত্বর থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।

সাধারণ মুসল্লিরা যেন ফজরের নামাজ পড়তে পারে এবং মসজিদ চত্বরে যেন কোনো সহিংসতা না ঘটে— নিশ্চিত করতে ভোরের দিকে কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে পুলিশ। তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অবস্থান নেওয়া মুসল্লিদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সংঘাতের চিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি— উভয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে। এই উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার দুপুরের দিকে পশ্চিম তীরের ইফরাত শঞরে দুই ব্রিটিশ তরুণীকে গুলি করে হত্যা করা হয় আহত হন আরও একজন নারী।

তার কয়েক ঘণ্টা পর, সন্ধ্যায় তেল আবিবে একটি পর্যটক দলের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে। এতে নিহত হন এক পর্যটক এবং আহত হন ও দলের বাকি ৫ জন। তাদের সবার বয়স ১৭ থেক ৭৪ বছরের মধ্যে। নিহত ওই পর্যটক ছিলেন ইতালির নাগরিক, আর আহতরা সবাই ব্রিটেনের।

ইফরাত শহরের ইহুদি অধ্যুষিত এলাকার মেয়ল ওদেদ রেভিভি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিহত দুই তরুণী সম্পর্কে দুই বোন ছিলেন; একজনের বয়স ১৬, অপরজনের ২০। তাদের সঙ্গে মধ্যবয়সী যে নারী আহত হয়েছেন, তিনি সম্পর্কে তাদের মা।

তেল আবিবে পর্যটক নিহত হওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে জেরুজালেমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনাসদস্য ও পুলিশ বাহিনীর সীমান্ত নিরাপত্তা শাখার সদস্যদের সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

‘ইসরায়েলি পুলিশের সীমান্তরক্ষী শাখা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর রিজার্ভ সৈন্যদেরকে এ ব্যাপারে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে,’ উল্লেখ করা হয় সেই বিবৃতিতে।