ঢাকা ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্মল সেনের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বাম রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব কমরেড নির্মল সেনের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল ও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে এ অলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে মোসাদ্দেক হোসেন স্বপন বলেন, নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত ও মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা সেন গুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম। নির্মল সেনের পিতা সুরেন্দ্র নাথ সেন গুপ্ত কোটালীপাড়ার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক ছিলেন। এর আগে সুরেন্দ্র নাথ সেন গুপ্ত ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করতেন। দেশভাগের পর নির্মল সেনের বাবা-মা অন্য ভাই বোনদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতা চলে যান। জন্মভূমির প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসার কারণে তিনি এ দেশে থেকে যান।

নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে। তিনি ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাস করেন। পিসির বাড়িতে যাওয়ার আগে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জি টি স্কুলে ৪র্থ শ্রেণিতে এক বছর লেখাপড়া করেন। তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও মাস্টার্স পাস করেন। স্কুল জীবন থেকে নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন তিনি শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে। ১৯৫৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মধ্যে দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। তারপর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।

এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তার লেখা পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, মানুষ সমাজ রাষ্ট্র, বার্লিন থেকে মস্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আমার জীবনে ৭১—এর যুদ্ধ, আমার জবানবন্দি উল্লেখযোগ্য।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা কমরেড নির্মল সেনের আত্মার শান্তি কামনা করে তার বর্ণাঢ্য জীবনী আলোচনা করেন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কমরেড মঞ্জরুল হাসান খান, অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিপিবির প্রাক্তন সভাপতি মনজুরুল আহসান খাঁন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, সিনিয়র আইনজীবী এম এ সবুর, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও শ্রমিক নেতা হারুন আর রশিদ ভূইয়া, রেজাউল ইসলাম, আবু সুফিয়ান, তাহমিদুল হক মুক্তি, মেজবাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ, শ্রমিক নেতা বজলুর রহমান বাবলুসহ প্রমুখ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্মল সেনের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

আপডেট সময় ০৫:৩৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বাম রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব কমরেড নির্মল সেনের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল ও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে এ অলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে মোসাদ্দেক হোসেন স্বপন বলেন, নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত ও মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা সেন গুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম। নির্মল সেনের পিতা সুরেন্দ্র নাথ সেন গুপ্ত কোটালীপাড়ার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক ছিলেন। এর আগে সুরেন্দ্র নাথ সেন গুপ্ত ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করতেন। দেশভাগের পর নির্মল সেনের বাবা-মা অন্য ভাই বোনদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতা চলে যান। জন্মভূমির প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসার কারণে তিনি এ দেশে থেকে যান।

নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে। তিনি ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাস করেন। পিসির বাড়িতে যাওয়ার আগে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জি টি স্কুলে ৪র্থ শ্রেণিতে এক বছর লেখাপড়া করেন। তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও মাস্টার্স পাস করেন। স্কুল জীবন থেকে নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন তিনি শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে। ১৯৫৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মধ্যে দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। তারপর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।

এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তার লেখা পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, মানুষ সমাজ রাষ্ট্র, বার্লিন থেকে মস্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আমার জীবনে ৭১—এর যুদ্ধ, আমার জবানবন্দি উল্লেখযোগ্য।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা কমরেড নির্মল সেনের আত্মার শান্তি কামনা করে তার বর্ণাঢ্য জীবনী আলোচনা করেন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কমরেড মঞ্জরুল হাসান খান, অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিপিবির প্রাক্তন সভাপতি মনজুরুল আহসান খাঁন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, সিনিয়র আইনজীবী এম এ সবুর, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও শ্রমিক নেতা হারুন আর রশিদ ভূইয়া, রেজাউল ইসলাম, আবু সুফিয়ান, তাহমিদুল হক মুক্তি, মেজবাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ, শ্রমিক নেতা বজলুর রহমান বাবলুসহ প্রমুখ।