ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঘুষের টাকায় ‘মুন ভিলা’! রাজউকের প্রকৌশলীর সম্পদে চমক অবৈধ ভবন নির্মাণে চিরস্থায়ী প্রথা এখনো বহাল  দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুব এর শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ যশোর রেস্টহাউজে অনৈতিক কর্মকান্ডে স্থানীয়দের হাতে লাঞ্ছিত ওসি সাইফুল কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে কম্পিউটার ও যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক সংগঠনের স্বঘোষিত সভাপতি সিদ্দিকুরের ঘুষ-বদলি ও কমিশন বাণিজ্য রাজশাহীর সমাজসেবা পরিচালক মোস্তাক হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ বড়লেখায় সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মজিদ মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সুয়াগাজীতে অনুমোদন ছাড়াই কেয়ার প্লাস মেডিকেল সেন্টার উদ্ভোধন ডিপিডিসির মিটার রিডারের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ

সাবিনা ইয়াসমিন আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে

  • কবির হোসেন শান্ত
  • আপডেট সময় ০৮:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬৩৫ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ এক বছর পর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমীন: আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। দ্রুত তাকে গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন। আগের চেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে এইচডিইউতে তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান প্রয়াত গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কন্যা সঙ্গীতশিল্পী দীঠি আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘সাবিনা ইয়াসমিনের শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন নেওয়া হয়। তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বিকেলে হাসপাতালের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) স্থানান্তর করা হয়।’ এদিকে গতকাল সংগীতশিল্পী জাহাঙ্গীর সাইদ বলেন, ‘সাবিনা আপার ভার্টিগো সমস্যা রয়েছে। হঠাৎ গাইতে গাইতে তিনি ভার্টিগো সমস্যায় পড়েন। এরপর মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড ধরতে গিয়ে ভারসাম্য রাখতে পারেননি। পড়ে যান। তারপর দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা প্রাথমিক সব চিকিৎসা করেন। রাত সাড়ে ১০টার সময় আমরা আপাকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা করেছি। এখন আপা পুরোপুরি ঠিক আছেন।’ ২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শো করেন সাবিনা ইয়াসমীন। এরপর আর তাকে মঞ্চে দেখা যায়নি। সাবিনার জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, ঢাকায়। পৈতৃক নিবাস সাতক্ষীরায়। বেড়ে উঠেছেন সংস্কৃতিমনা পরিবারে। বাবা লুতফর রহমান ও মা মৌলুদা খাতুনও গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাবিনার পাঁচ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিনও গানের জগতের মানুষ। সংগীতের সঙ্গে সাবিনার বসবাস ছয় দশকের বেশি সময় ধরে। মাত্র সাত বছর বয়সে প্রথমবার স্টেজে গান করেছেন সাবিনা; ১৯৬২ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম গান করেন। ১৯৬৭ সালে প্রথম প্লেব্যাক করেন আমজাদ হোসেন ও নুরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমায়। এরপরের ইতিহাস কবেল জয় এবং সাফল্যের। ভারতের প্রখ্যাত সুরকার আর ডি বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সত্য সাহা, সুবল দাস, আলম খান, বাপ্পি লাহিড়ী, আলী হোসেন, খন্দকার নুরুল আলম, আলাউদ্দিন আলী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মত সুরকারদের সুরে অসংখ্য চলচ্চিত্রের গান কণ্ঠে তুলেছেন তিনি। সহশিল্পী হিসেবে, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, কুমার শানু, আশা ভোঁসলের মত শিল্পীকে পেয়েছেন তিনি। দশ হাজারেও বেশি গান কণ্ঠে তুলেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। গীতিকার নয়ীম গহরের লেখা ও সুরকার আজাদ রহমানের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া দেশাত্মবোধক গান ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ একাত্তরের রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে সব শ্রেণির শ্রোতাদের মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। সংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার ও ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুষের টাকায় ‘মুন ভিলা’! রাজউকের প্রকৌশলীর সম্পদে চমক

সাবিনা ইয়াসমিন আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে

আপডেট সময় ০৮:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দীর্ঘ এক বছর পর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমীন: আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। দ্রুত তাকে গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন। আগের চেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে এইচডিইউতে তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান প্রয়াত গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কন্যা সঙ্গীতশিল্পী দীঠি আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘সাবিনা ইয়াসমিনের শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন নেওয়া হয়। তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বিকেলে হাসপাতালের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) স্থানান্তর করা হয়।’ এদিকে গতকাল সংগীতশিল্পী জাহাঙ্গীর সাইদ বলেন, ‘সাবিনা আপার ভার্টিগো সমস্যা রয়েছে। হঠাৎ গাইতে গাইতে তিনি ভার্টিগো সমস্যায় পড়েন। এরপর মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড ধরতে গিয়ে ভারসাম্য রাখতে পারেননি। পড়ে যান। তারপর দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা প্রাথমিক সব চিকিৎসা করেন। রাত সাড়ে ১০টার সময় আমরা আপাকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা করেছি। এখন আপা পুরোপুরি ঠিক আছেন।’ ২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শো করেন সাবিনা ইয়াসমীন। এরপর আর তাকে মঞ্চে দেখা যায়নি। সাবিনার জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, ঢাকায়। পৈতৃক নিবাস সাতক্ষীরায়। বেড়ে উঠেছেন সংস্কৃতিমনা পরিবারে। বাবা লুতফর রহমান ও মা মৌলুদা খাতুনও গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাবিনার পাঁচ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিনও গানের জগতের মানুষ। সংগীতের সঙ্গে সাবিনার বসবাস ছয় দশকের বেশি সময় ধরে। মাত্র সাত বছর বয়সে প্রথমবার স্টেজে গান করেছেন সাবিনা; ১৯৬২ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম গান করেন। ১৯৬৭ সালে প্রথম প্লেব্যাক করেন আমজাদ হোসেন ও নুরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমায়। এরপরের ইতিহাস কবেল জয় এবং সাফল্যের। ভারতের প্রখ্যাত সুরকার আর ডি বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সত্য সাহা, সুবল দাস, আলম খান, বাপ্পি লাহিড়ী, আলী হোসেন, খন্দকার নুরুল আলম, আলাউদ্দিন আলী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মত সুরকারদের সুরে অসংখ্য চলচ্চিত্রের গান কণ্ঠে তুলেছেন তিনি। সহশিল্পী হিসেবে, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, কুমার শানু, আশা ভোঁসলের মত শিল্পীকে পেয়েছেন তিনি। দশ হাজারেও বেশি গান কণ্ঠে তুলেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। গীতিকার নয়ীম গহরের লেখা ও সুরকার আজাদ রহমানের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া দেশাত্মবোধক গান ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ একাত্তরের রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে সব শ্রেণির শ্রোতাদের মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। সংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার ও ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি