নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের দুই প্রকৌশলীর টাকা গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জহির নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকার অংক নিয়ে দরকষাকষি করতেও দেখা গেছে ওই ভিডিওতে। এরা হলেন জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত ও সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা পাঁচ মিনিটের ওই ভিডিওটি ইতোমধ্যে সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ভিডিওটির ব্যাপারে প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমারের দাবি, এই ভিডিওটি প্রায় এক বছর আগের এবং কোনো ঘুস লেনদেনের নয়। জেলা পরিষদের একটি জরুরি মেরামত কাজের বিলের টাকা দেয়ার সময় এটি গোপনে ধারণ করা হয়েছিল। কাঞ্চণ কুমার দাবি করেন, গত এক বছর ধরে এই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে ভিডিও ধারণকারী জহির।
এদিকে এই ভিডিও প্রকাশের পর জেলা পরিষদের অনেক ঠিকাদারই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পরিষদের কয়েকজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিতের অত্যাচারে কয়েক বছর ধরেই তারা অতিষ্ঠ। তিনি বন্দর এলাকার একটি কাজের জন্য এক ঠিকাদারের কাছ থেকে এর আগে ঘুস হিসেবে প্রাইভেটকার পর্যন্ত নিয়েছেন যা জেলা পরিষদের সবাই জানতো। বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার এসব অপকর্মের বিষয় টের পাওয়ার পর তাকে বদলির জন্য ডিও লেটারও দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু প্রকৌশলী পালিতের রহস্যজনক ক্ষমতার জোরে এখনও তাকে বদলি করা হয়নি।
অপরদিকে ভিডিওতে থাকা ঘুস গ্রহণকারী অপর প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস কয়েক মাস আগেই নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই আব্দুল কুদ্দুসের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে ভিডিও ধারণকারী সেই জনৈক জহিরকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল যুগান্তরকে জানান, ভিডিওটি আমিও দেখেছি। উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন পালিতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বেশ আগে থেকেই উঠে আসছে। তাকে বদলির জন্য ডিও লেটারও দেওয়া হয়েছে। আর সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস বেশ কিছুদিন আগেই বদলি হয়ে গেছেন।
তবে ভিডিও ধারণকারী জহির কোনো ঠিকাদার নন বলে জানিয়ে চেয়ারম্যান চন্দন শীল জানান, কারও কোনো অনিয়ম দুর্নীতি বা অপকর্ম আমি সহ্য করব না। এসব অপকর্মে সরকারের ও প্রধানমন্ত্রীর বদনাম হবে। এটা হতে দেওয়া যায় না। রোববার এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হবে, প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।