সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তের সংগ্ৰাম বিজিবি ক্যাম্পের পাশে দিয়ে চলছে চোরাচালানের মহোৎসব। সিলেটের পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে চালানো হচ্ছে, চোরাকারবারিদের রমরমা ব্যবসা। আর এর নেপথ্যে এসআই জহুর লাল ও কনস্টেবল মাহামুদুল তার লাইনম্যান জাফলং এর মান্নান মেম্বার দুই মাসে হয়ে উঠেছে আঙুল ফুলে কলাগাছ । সীমান্তের চোরাচালান ও বালু পাথর হরিলুটে সহযোগিতা করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
ছাত্রজনতার জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর ভারতের সাথে সব ধরনের জনযোগাযোগ বন্ধ থাকলেও বন্ধ হচ্ছে না সিলেটের জাফলং সীমান্তের চোরাচালান রুট। চোরাকারবারিরা পুলিশের লাইনম্যান মান্নান মেম্বারের মাধ্যমে বখরা দিয়ে চোরাচালান রুটটি ওপেন করে রেখেছে।
প্রত্যহ হাজার বস্তা রসুন চালান হচ্ছে ভারতে। বিনিময়ে চোরাই পথে আমদানি হচ্ছে ‘মিটা বালু’ নামে পরিচিত লাখো বস্তা ভারতীয় চিনি, কীট,চা পাতা,মদ, ফেনসিডিল, কসমেটিক্স, মসলাজাত দ্রব্যাদি ও ভারতীয় নাছির উদ্দিন পাতার বিড়ি। রসুন ছাড়াও এসব পণ্যের বিনিময়ে পাচার করা হয় বৈদেশিক মুদ্রা পাউন্ড ডলার ও রুপি। মান্নান মেম্বারের তত্ত্বাবধানে সংগ্ৰাম ক্যাম্পের এলাকায় সাইনবোর্ড, লাল মাটি, আম তলা, সীমান্তে রেস্টুরেন্ট ও দোকান ব্যবসার আড়ালে গড়ে উঠেছে কয়েকটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ।
বস্তুজাত প্রতিটি চোরাই পণ্যে চিনির বস্তা প্রতি ২শ টাকা কীট, কসমেটিক, প্রতি কাটুন থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করে এবং কোনো দামিপণ্য যেমন মোটর বাইকের যন্ত্রাংশ ইত্যাদি দামি চোরাই পণ্যে থেকে মান্নান মেম্বার আদায় করে থাকে বড় অঙ্কের টাকা।
সিলেটের এসপি, জেলা ডিবি পুলিশ ও থানার ওসির নামে এসব বখরা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ প্রকাশ।
দিনরাত বখরা আদায় করে রাত ১০-১১ টায় ক্যাম্প এলাকায় রেস্টুরেন্টে বা দোকানে বসে টাকা ভাগ-বণ্ঠন করা হয়ে থাকে। এ বাটবাটোয়ারায় গোয়াইনঘাট এলাকার সাংবাদিক নামধারী একাধিক ব্যক্তিও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ।
এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, জাফলংয়ে কথিত দুই সাংবাদিক ও জাফলং বিট কর্মকর্তা গত পরশু ভারতীয় চিনি অটোসহ আটক করে। পরে ৫০ হাজার টাকায় রফাদফা হয়, তারপর ভাগবাটোয়ারা। এই হচ্ছে জাফলংয়ে, পুলিশ, সাংবাদিক চোরাকারবারিদের নীলা খেলা।
প্রতি সপ্তাহে দুই লক্ষের অধিক টাকা স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিকাশ নাম্বারে বিতরণ করেন। এসআই জহুর লাল ও কনস্টেবল মাহামুদুল এর মাধ্যমে।
যাতে কেউ নিউজ না করেন, কেউ নিউজ করলে, এসআই জহুর লাল , বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে সুপারিশ করান, আবার এসআই জহুর লাল নিজে ফোন দিয়ে, টাকার দেওয়ার প্রস্তাব দেন। ভাই নিউজ করে কি হবে এসব বাদ দেন। নিউজ টা কেটে দিন, আমি আপনার বিষয় টা দেখবো। জুলাই আগস্টের পর স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের কিছু নেতা কর্মীরা পর্দার আড়ালে চলে গেল ও তাদের দোসরদের দিয়ে, বালু পাথর হরিলুট ও সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারিদের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে।
বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে যেমন চলছিল, এখন ও বহাল আছে। তাদের পিছনে অদৃশ্য শক্তির উৎস দিচ্ছে গোয়াইনঘাট থানার ওসি, সার্কেল,সার্কেল ও বিট অফিসার জহুর লাল,
গোয়াইনঘাট উপজেলার সার্কেল শাহিদুর রহমান, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ এর দায়িত্বে আসেন, এখন পর্যন্ত তিনি বহাল হয়েছেন।
পরিচয় গোপন রেখে এলাকাবাসী ও চোরাকারবারিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সার্কেল শাহিদুর রহমান চোরাচালান ব্যবসায়ীদের লাইনম্যান হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, নিয়োগ দেন, এখন তাদের নেতৃত্বে চলছে ভারতীয় চোরাচালান ব্যবসা,
গোয়াইনঘাট বাইপাস এলাকায় ব্রিজের মুখে চেকপোস্ট বসিয়ে দিনেদুপুরে ও রাতে অন্ধকারে চলছে চাঁদাবাজি।
জাফলংয়ে বিট অফিসার জহুর লাল ও কনস্টেবল মাহামুদুল এর সহযোগিতায় চলছে চোরাচালানের ব্যবসা।