কলকাতাকে দূষণমুক্ত করতে পরিবেশবান্ধব যানের ওপর জোর দিতে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন দপ্তর। তাই কমপ্রেসড ন্যাচরাল গ্যাস (সিএনজি) ও বিদ্যুৎচালিত গাড়ি চালানোর ওপর জোর দিতে শুরু করেছে তারা। আগামী দু’বছরের মধ্যে রাজ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির এক হাজার চার্জিং স্টেশন তৈরি হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৮৪৯টি চার্জিং স্টেশন তৈরি হবে মূলত জাতীয় সড়কের পাশে। এসব স্টেশনের পরিকাঠামোগত সহায়তা দেবে রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর।
পশ্চিমবঙ্গের দূষণ নিয়ন্ত্রণ নীতিতে সম্মতি রয়েছে কেন্দ্রেরও। তাই সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ মেনে জাতীয় সড়কের পাশে প্রতি ২৫ কিমি পর একটি করে বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হবে। পেট্রোল পাম্পগুলোতে যেসব স্টেশন তৈরি করা হবে, সেখানে গ্রিড তৈরি থেকে শুরু করে যা যা করণীয় তা করবে বিদ্যুৎ দপ্তর। এই কাজের দায়িত্বে থাকবে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
সম্প্রতি কলকাতার মিলনমেলায় ইলেকট্রিক ভেহিকল এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানেই এ সংক্রান্ত বিষয়ে দু’টি অ্যাপ চালু করেছে বিদ্যুৎ দপ্তর। একটির নাম ‘ইভিবন্ধু’, যেখানে সাধারণ মানুষ পাম্পিং স্টেশনগুলোর অবস্থান জানতে পারবেন। কোথায় কোথায় চার্জিংয়ের দাম কত, তাও জানতে পারবেন। আরেকটি অ্যাপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইভিসাথী’। যেখানে বৈদ্যুতিক গাড়ি সংক্রান্ত সচেতনতার কথা বলা হবে। এই দুটি অ্যাপ ডাউনলোড করলেই যাবতীয় তথ্য মুহূর্তেই পেয়ে যাবেন সাধারণ মানুষ।
কলকাতার পাশাপাশি, শিলিগুড়ি, আসানসোল, দুর্গাপুর, কৃষ্ণনগর, বর্ধমানের মতো শহরে এই স্টেশন থাকবে। পরিবহন দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে এখন বৈদ্যুতিক গাড়ির মোট চার্জিং স্টেশন ১২২টি। সিইএসসি, এনকেডিএ, পেট্রোল পাম্প ও অন্যান্য সংস্থা এই স্টেশনগুলো পরিচালনা করছে।
উত্তরপ্রদেশের পর পশ্চিমবঙ্গেই সবচেয়ে বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ি আছে। দুইচাকা বা তিনচাকার বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা বেশি হলেও ৪ চাকার গাড়ির বিক্রি তুলনামূলকভাবে পশ্চিমবঙ্গে কম। চার্জিং স্টেশনের অপ্রতুলতার কারণে এই গাড়ি অনেকেই কিনতে চান না। সেই সমস্যার সমাধান করে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষকে বেশি সংখ্যক বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে উৎসাহী করাও এই উদ্যোগের লক্ষ্য।