ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল তা রাশিয়ার ওপর প্রভাব ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস।
মার্কিন টিভি চ্যানেল পিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে মোদি ও জিনপিংয়ের মনোভাব নিয়ে আলোচনা করেন বার্নস।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান হুমকির কথা উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, গত ৬০ বছরে পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। জল্পনা চলছিল ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া।
বাইডেন আরও বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন যখন বলেছিলেন, রাশিয়ার মাটি রক্ষায় তিনি ‘সব কিছু করবেন’, তখন এটাকে ছোট করে নেওয়ার সুযোগ নেই। বাইডেন পুতিনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এটিই হবে সবচেয়ে গুরুতর সামরিক পরিস্থিতি।
এর আগে পুতিন বলেছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে পরমাণু যুদ্ধের নজির তৈরি করেছে আমেরিকা।
সব কিছু করবেন বলে যে হুমকি পুতিন দিয়েছিলেন সেটাকে অনেকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি ছিল বলে মনে করছেন। তবে পুতিন অবশ্য কখনোই এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি।
পুতিনের এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বার্নস বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশ্বযুদ্ধের হুমকি ভীতি তৈরি করার জন্য। আমরা এই মুহূর্তে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। আমি মনে করি এটি রাশিয়ানদের ওপরও প্রভাব ফেলেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বার্নস আরও বলেন, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি যখন রাশিয়া যুদ্ধ শুরু করে, তখন তারা সম্পূর্ণ ভুল ছিল।
অন্য প্রশ্নের জবাবে বার্নস বলেন, আমি চীন ও রাশিয়ার নেতাদের পারস্পরিক প্রতিশ্রুতিকে এক মুহূর্তের জন্যও অবমূল্যায়ন করতে চাই না, তবে ইউক্রেনের প্রতি চীনা নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়াটা দারুণ হয়েছে। আমি মনে করি না, কোনো বিদেশি নেতা ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং এতে রুশ সামরিক বাহিনীর খারাপ পারফরম্যান্সের প্রতি এত মনোযোগ দিয়েছেন।
উইলিয়াম বার্নস ছিলেন একজন কূটনীতিক। তিনি কয়েক দশক ধরে স্টেট ডিপার্টমেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
ওবামা প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি উপসচিব পদে আসীন হন। তিনি রাশিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতও ছিলেন এবং ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
গত দুই বছর ধরে তিনি সিআইএর পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন।