জালিয়াতিতে চ্যাম্পিয়ন গণপূর্তের উচ্চমান সহকারীর মোঃ এনামুল হক এনাম। বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত। দায়িত্বে ছিলেন আ’লীগ সমর্থিত গণপূর্ত কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবে গত ১৫ বছরে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মচারী মহলে একচ্ছত্র রাজত্ব করেছেন তিনি। নিয়োগ, পেষ্টিং পদোন্নতি, বাসা বরাদ্দ, ছুটি পাশ করা, কার্যভিত্তিক কর্মচারী নিয়মিতকরণে চাঁদাবাজি, পরিত্যক্ত বাড়ির দালালি, ডিপার্টমেন্টাল অভিযোগ মামলা-মোকদ্দমা মিটিয়ে দেওয়া, টেন্ডারবাজি, বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসা সহ এমন কোন অপকর্ম নেই, যা তিনি করেননি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এনামুল হক ১ মার্চ ১৯৮৬ইং তারিখে গণপূর্ত অধিদপ্তরে মাস্টাররোল গার্ড হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করেন। এর পরে ধাপে ধাপে পদোন্নতি নিয়ে পর্যায়ক্রমে জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি এখন উচ্চমান সহকারী হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের প্রধান সহকারী বা বড় বাবু। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী হাঃ রঃ মুন্সি ও আশরাফুল আলমের ছত্রছায়ায় এনামুল মহা জালিয়াতিতে করতে পেয়েছেন।
সহকর্মীরা বলেন, এনামুল হক এনাম কতোবার জন্ম নিয়েছেন, না-হিন্দু দাদাবাবুদের ন্যায় পূণঃজন্ম নিয়ে পুনরায় চাকরি পেয়েছেন তা কেউ বলতে পারবো না।
জন্ম তারিখ নিয়ে মেগা জালিয়াতিঃ বিভিন্ন পর্যায়ে চাকুরির তথ্য ও সার্ভিস বুক অনুযায়ী এনামের জন্ম তারিখ দুটি পাওয়া গেছে। মাস্টাররোলে গার্ড হিসেবে নিয়োগের সময়ে জন্ম তারিখ দেখিয়েছেন ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ইং । পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে তিনি মাস্টাররোলে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি নেন। সেখানেও তার জন্ম তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ইং বহাল আছে। ২৬ নভেম্বর ২০০০ইং তারিখে তার চাকরি মাস্টাররোল হতে কার্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে আনা হয়। এই কার্যভিত্তিক অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদের নিয়োগপত্রে জন্ম তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ লেখা আছে। কিন্তু একই পদে এনামে কার্যভিত্তিক সার্ভিস বুকে জন্ম তারিখ হঠাৎ করে ১ জানুয়ারি ১৯৭০ লেখা হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সাল হতে তার সকল কাগজপত্রে জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারী ১৯৭০ অন্তর্ভূক্ত হয়। গণপূর্ত কার্যভিত্তিক কর্মচারীদের করা এক মামলার রায়ে গত ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ইং তারিখে এনামের চাকরি কার্যভিত্তিক অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদটি রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত হয়। এভাবে জন্ম তারিখ জালিয়াতির মাধ্যমে বড়বাবু এনাম নিজের চাকরির বয়স ৪ বছর বাড়িয়ে নিয়েছেন উর্দ্ধতনদের সহযোগীতায়।
বড় বাবু এনামের জালিয়াতির কোন সীমা নেই । জালিয়াতিতে সিদ্ধহস্ত এই এনাম নিজের বয়স কমাতে গিয়ে আপন ছোট ভাইয়ের চেয়েও বয়সে প্রায় ৫ মাসের ছোট হয়েছেন । তার আপন ছোট ভাই মোঃ জাফর আলী একই দপ্তরে কার্যভিত্তিক কার্পেন্টার সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। সার্ভিস বুক অনুযায়ী জাফরের জন্ম তারিখ ৩ আগষ্ট ১৯৬৯ইং। অর্থ্যাৎ সার্ভিস বুক অনুযায়ী এনাম তার আপন ছোট ভাইয়ের চেয়েও প্রায় ৫ মাসের ছোট। বিষয়টিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়-সে বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছেন শোষিত বঞ্চিত গণপূর্ত কর্মচারীরা ।
ঘুষ দিয়ে ও জালিয়াতির মাধ্যমে পদোন্নতিঃ এনাম চাকরির প্রতিটি পদে পদোন্নতির জন্য কখনো রাজনৈতিক প্রভাব কখনো মোটা অংকের ঘুষ আবার কখনো উভয়টা ব্যবহার করে একের পর এক পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়ে তরতর করে উপড়ে উঠেছেন অসংখ্য কর্মচারীর ভাগ্য ও নিয়তিকে পদদলিত করে। গার্ড থেকে অফিস সহায়ক, অফিস সহায়ক হতে অফিস সহকারী, আফিস সহকারী থেকে হিসাব সহকারী, হিসাব সহকারী থেকে উচ্চমান সহকারী পরবর্তীতে সিনিয়র উচ্চমান সহকারী পদের প্রতিটি স্তরে বিভিন্ন পর্যায়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছেন নিজের অবৈধ পদোন্নতি জায়েয করার জন্য। রক্ষণাবেক্ষণ উপবিভাগ-৩ এ থাকতে ওই সার্কেলের দু’জন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর (হাঃ রঃ মুন্সি ও আশরাফুল আলম, দু’জনেই পরবর্তীতে প্রধান প্রকৌশলী) বাসার বাজার থেকে শুরু করে সকল খরচ নিজ দায়িত্বে বহন করেছেন এই মাফিয়া কর্মচারী এনাম। ওই প্রকৌশলীদ্বয়ের অফিসে যে কোন প্রয়োজনে হঠাৎ করে টাকা প্রয়োজন হলে তা মেটাতেন এনাম। এনাম ছিলো তাদের অবৈধ টাকার গোপণ ক্যাশিয়ার। পরবর্তীতে কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের পদের ক্ষমতা দেখিয়েও এ সকল জালিয়াতি বৈধ করে নিয়েছেন। ওই দু’জন ডিপার্টমেন্ট থেকে চলে যাওয়ার পরে এনাম সংস্থাপণ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহাকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে একচেটিয়া পোস্টিং পদোন্নতি বাণিজ্য করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নন্দিতা রানী সাহা এনামের দুই জন্ম তারিখের বিষয়ে জেনেশুনেও ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে এনামকে অফিস সহকারী হতে উচ্চমান সহকারী পদে পদোন্নতি দেন। এ পদে পদোন্নতির জন্য চাকুরি বিধি মোতাবেক ৫ বছরের সন্তোষজনক এসিআর এর বাধ্যবোধকতা থাকলেও এনামের তা ছিলো মাত্র ৩ বছরের । এনামের এই পদোন্নতিতে নন্দিতা রানী সাহা নিন্দিতভাবে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে।
আওয়ামী শ্রমিক লীগের নেতা হিসেবে বিগত ১০ বছরে ব্যাপক প্রভাবঃ এনামুল হক এনাম আলীগের সাবেক মন্ত্রী ম. খা. আলমগীরের আত্মীয় হিসেবে নিজেকে টরিচয় দিতেন। সে সুবাদে তিনি আওয়ামী সমর্থিত গণপূর্ত শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন-বি-২০০৫ এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে থেকে দাবড়িয়ে বেড়িয়েছেন গোটা গণপূর্ত অধিদপ্তর। মাস্টাররোল কর্মচারীদের ওয়ার্কচার্জ করণ, ভাউচার ভিত্তিক নিয়োগ, পোষ্টিং পদোন্নতি, বাসা বরাদ্দ, টেন্ডারবাজি ও বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসাসহ সকল অপকর্মের মোক্ষম কাজী ছিলেন তিনি। এ সকল অবৈধ কাজের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ইউনিয়নের সভাপতির সাথেও তুমুল দ্বন্দ্ব হয়েছে বেশ কয়েকবার ।
কার্যভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিতকরণে ৩ কোটি টাকা আদায়ঃ এনামুল হক এনাম কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক থাকার সময়ে অধিদপ্তরের ১০৭৭ জন কার্যভিত্তিক কর্মচারীকে নিয়মিত করণের জন্য জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে উঠানো হয়। সে হিসাবে ৩ কোটি ২৩ লক্ষ চাকা উঠানো হয় কর্মচারীদের কাছ থেকে। এর মধ্যে মাত্র ১৭৯ জন কর্মচারী নিয়মিত হলেও বাকী ৮৯৮জন নিয়মিত হতে পারেননি । কিন্তু তাদের কারো টাকা ফেরৎ দেওয়া হযনি। এখাতে সাধারণ কর্মচারীদের ঘামেঝড়া প্রায় ২ কোটি টাকা লোপাট করেছেন মাফিয়া এনামুল হক এনাম ।
বাসা-বাড়ি বরাদ্দে বা ধরে রাখতে টাকা আদায়ঃ আ’লীগের সময়ে এনামের সাথে দফারফা না করে কোন স্টাফ বাসাবাড়ি বরাদ্দ পাওয়ার কল্পনাও করতে পারেনি। এ জন্য তিনি অধিদপ্তরের সংস্থাপন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান
প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। ওই সময়ে রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেলের আওতায় কমবেশী ১৬টি বাসা বরাদ্দ করা হয়। প্রতিটি বাসা বরাদ্দে ২ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করা হয় এনামের হাত দিয়ে। এর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে- জনাব ফিরোজ মোল্লা, প্লাম্বার, উপ-বিভাগ-৩ তিনি ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। জনাব মোঃ ইসমাইল হোসেন, ইলৈকট্রিসিয়ান, উপবিভাগ-১, তিনি ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। জানব মোর্শেদ আলম, অফিস সহায়ক, নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর, ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
বাসা দখলে রেখেও ভাড়া বাণিজ্যঃ শিয়ালের থেকেও বেশী ধূর্ত এনামুল হক রক্ষনাবেক্ষণ সার্কেলের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন বাসা দখলেও রেখেও ভাড়া বাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন গত ১৫ বছরে। বিশেষ করে মতিঝিল গণপূর্ত বিভাগ কম্পাউন্ডের অভ্যন্তরে ৮/১০টি বাসা কয়েক বছর দখলে রেখে ভাড়া আদায় করে নিজের পকেটস্থ করেছেন এই এনাম । এছাড়া ১ম ও ২য় ১২ তলা অফিস কম্পাউন্ড, এনএসআই ভবন ও তার আশেপাশে অনেক বাসা মাসের পর মাস দখলে রেখে ভাড়া বাণিজ্য করেছেন বড়বাবু এনাম।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মোঃ এনামুল হক নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য আহমেদ কবিরুল ইসলাম নামে এক হিসাব সহকারি এর সাথে যোগসাজসে তার ভাই জাফর আলী কাঠ মিস্ত্রীর হেল্পার অফিস কম্পাউন্ডে দখল করে ভাড়া দিয়ে রেখেছে এবং ইলেকট্রিশিয়ান মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এর বাসাটি এনামুলের শ্যালক শাহজালালকে ১২ তলা অফিস কম্পাউন্ডের ৩ নং সেডের বাসাটি জোরপূর্বক ভাড়া দিয়েছে। উল্লেখ্য তার শ্যালক শাহজালাল কোন সরকারি কর্মচারী নয়। ১২ তলার পূর্ব পার্শ্বে কোর্ট অফ সেটেলমেন্ট অফিস সংলগ্ন একটি সরকারি বাসায় আহমেদ কবিরুল ইসলামকে দিয়েছেন এবং এনএসআই অফিস সংলগ্ন একটি বাসা দখল করে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন যদিও সেখান থেকে তারা কোন ধরনের বাসা ভাড়া, গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল কিছুই কর্তন করান না। ফলে এনামুলের জন্য সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছেন। তবে ৪ আগস্টের পরে পরিবর্তিত অবস্থায় ওই সকল বাসা এনামের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে।
বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসাঃ সরকারি কর্মচারি হয়েও দীর্ঘকাল যাবৎ রক্ষণাবেক্ষণ গণপূর্ত বিভাগে বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসা করে আসছে। কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে এনাম গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলীদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগীতায় মেসার্স ইকবাল ট্রেডিং, ন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন, রশিদ এন্ড সন্স, এন কে ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতিটি অর্থবছরে ২/৩ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। উদাহরণ স্বরূপ কয়েটি কাজ হলো-১ম ১২ তলা সরকারি অফিস ভবনের ১১ তলায় বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যান বোর্ডের আধুনিকায়ন কাজ, একই ভবন সংলগ্ন ৫নং টিনসেড ১ম কোর্ট অব সেটেলমেন্ট এর নবায়ন কাজ, একই ভবন সংলগ্ন ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ এর নতুন টিনসেড নির্মাণ কাজ, একই ভবন সংলগ্ন টিনসেড নং ৪ বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যান বোর্ড এর আধুনিকায়ন, একই ভবন সংলগ্ন টিনসেড নং ৫ এর (পূর্বাংশ) বর্ধিতাংশ নবায়নসহ নির্মাণ কাজ, ২য় ১২ তলা সরকারি অফিস ভবনের ১১ তলায় প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় আধুনিকায়ন কাজ, ১ম ১২ তলা সংলগ্ন মসজিদের পার্শ্বে) গভীর নলকূপ স্থাপণ কাজসহ অসংখ্য মেরামত রক্ষনাবেক্ষণ কাজ নামে-বেনামে করেছেন এনাম ।
এছাড়া কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার ক্ষমতার অপব্যবহার করেও ঢাকার বিভিন্ন ডিভিশনে ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন গত ১৫ বছরে । এনামুল হকের নিকট আত্মীয় স্বজনের নামে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স করিয়ে দেন এবং এই লাইসেন্সের বিপরীতে তার কর্মস্থল গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগসহ বাংলাদেশ সচিবালয়, শেরেবাংলা সার্ভিস কমপ্লেক্স এ অবস্থিত গণপূর্ত বিভাগ-২ এ অনেক কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। এসব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের একটি হচ্ছে মেসার্স আমীন ট্রেডার্স, ১/১০, ব্লক-এফ জয়েন্ট কোয়াটার, মোহাম্মদপুর ।
গত ২১/১০/২১ইং তারিখে ১০০৬নং স্মারকের মাধ্যমে ৭,৩৪,৭৫০.৪৮৩ (সাত লক্ষ চৌত্রিশ হাজার সাতশত পঞ্চাশ এবং দশমিক চার আট তিন) টাকার কাজ বাগিয়ে নেন ৷
এনামের নামে বিভিন্ন সময়ে থানায় জিডি ও মামলাঃ এনামের এহেন অপকর্মের জন্য, তার আগ্রাসী ছোবলের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় একাধিক জিডি ও মামলা করা হয়। সেগুনবাগিচার শুকতারা হোটেলটি মূলত কর্মচারীদের সম্পদ। আর এই কর্মচারীদের সম্পদ এবং সুফল ভোগ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বছরের পর বছর ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ করেছেন এনামুল হক । এই ক্যান্টিনটি পরিচালনা করতেন মোঃ হারেজ ভূঁইয়া । এনামুল হক এর চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে বিদ্যুতের লাইন কেটে তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন। এক পর্যায়ে ভয়ে রমনা মডেল থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভুক্তভোগী। যার নং- ২৭৭ তারিখ ০৮/০৬/২০২১। এছাড়া অন্য আকে কর্মচারীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শাহবাগ থানায় মামলাও হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকায় দফারফা হয়।
নাম না প্রকাশ না করার শর্তে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের এক কর্মচারী বলেন মোঃ এনামুল হক তার বহিরাগত বিভিন্ন বন্ধুবান্ধব নিয়ে অফিসে প্রতিনিয়ত মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন আড্ডায় মগ্ন থাকতেন আ’লীগের পুরোটা সময়। কিন্তু তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতো না ।
আরো জানা গেছে, এনামুল হক টেন্ডার বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য ও নিযোগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন এবং তার সহযোগী হিসেবে গণপূর্ত প্রশাসন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীর নাম ও তাদের দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে এসেছে।
এসব বিষয়ে মতামত জানতে এনামুল হককে ফোন দিলে তিনি এই প্রতিবেদককে অভিযোগুলোর স্বপক্ষে বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে তার সাথে দেখা করার জন্য বলেন।