ব্যাপক গণবিক্ষোভের মাঝে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পরপরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষের বসতবাড়িতে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
এমন আবহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে কিছু বিচ্ছিন্ন হামলা হয়েছে। সেগুলো সুসংগঠিত কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা নয়। কিছু মানুষ তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে সুবিধা নিচ্ছে বলে দাবি ফখরুলের। রোববার ফখরুলের বক্তব্যের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভিকে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বা অন্য কোনো দেশে, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় যখন কোনো পরিবর্তন আসে, কিছু মানুষ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। দুর্ভাগ্যবশত, বাংলাদেশের প্রতিটি বিপ্লবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা—তারা হিন্দু বা মুসলমান যে ধর্মের হন না কেন, শিকারে পরিণত হন।’
‘(বাংলাদেশে) হয়তো (সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর) বিচ্ছিন্ন কিছু হামলা হয়েছে। তবে সেগুলো কোনোভাবেই সুসংগঠিত (সিস্টেমেটিক) বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে আন্দোলনকারীদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দেয় বিগত সরকার। গত ২৯ জুলাই শেখ হাসিনা গণভবনে ১৪ দলের বৈঠকে বলেছিলেন, ‘এখানে ওই শিবির, ছাত্রদল, বিএনপি-জামায়াত এরাই কিন্তু এবং জঙ্গি এরা। এই জঙ্গিরাই কিন্তু আজকে আমাদের ওপর থাবা দিয়েছে। বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, আসলে এটা কোনো রাজনৈতিক কিছু না। এটা সম্পূর্ণ জঙ্গিবাদী কাজ, একেবারে জঙ্গিবাদী কাজ।’
ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে একচেটিয়া খবর বেরিয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর হাত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জামায়াত ইসলামীর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। তবে জামায়াতকে চরমপন্থী দল বলতে রাজি নয় ফখরুল।
ফখরুলের দাবি, সরকার পতনের আন্দোলন দেশের সবচেয়ে প্রগতিশীল এবং মেধাবী ছাত্রদের নেতৃত্বে হয়েছে।
ফখরুল আরও বলেন, ‘জামায়াত চরমপন্থি দল নয়। তবে বাংলাদেশে চরমপন্থি কিছু গোষ্ঠী ছিল, সেগুলোর অস্তিত্ব এখন আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। এই আন্দোলন সম্পূর্ণভাবে ছাত্রদের নেতৃত্বে হয়েছে। তাদের অধিকাংশেই অতি প্রগতিশীল। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অনেকেই অসাধারণ মেধাবী। আমি বিশ্বাস করি, এই বিপ্লব অবশ্যই সফল হবে।’