ফৌজদারহাট ফরেস্ট স্টেশনে চলছে দিনে দুপুরে দুর্নীতি ও অনিয়ম আওয়ামী লীগ পন্থী ফরেস্টার মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে পুরো স্টেশন যেনো দুর্নীতির আখড়া হিসাবে রূপান্তরিত হয়েছে বর্তমানে। মনজুরুল আলম চৌধুরীর ও আরেক আওয়ামী লীগ পন্থী ফরেস্ট গার্ড জাহাঙ্গীরের তত্ত্বাবধায়নে পুরো স্টেশন জুড়ে দুর্নীতির ছড়াছড়ি।
জানা যায় ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ফরেস্টার হিসাবে তৎকালীন আওয়ামী লীগের তথ্য মন্ত্রী হাসান মাহমুদের সুপারিশে সাতকানিয়ার মনজুরুল আলম ভাটিয়ারী ফরেস্ট স্টেশনের ফরেস্টার হিসেবে যোগদান করেন। তারপর বেপরোয়া দুর্নীতি এক পর্যায় পুরো স্টেশনে কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত করে দুর্নীতির সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে এই আওয়ামী লীগ পন্থী মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী। সরকার পতনের পরে থেকে যদিও মঞ্জুরুল আলম নিজেকে দাবি করেন একজন বিএনপি পন্থী হিসাবে কিন্তু তার সুপারিশটি ছিল হাসান মাহমুদ এর পক্ষ থেকে করা। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায় তৎকালীন হাসান মাহমুদকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ভাটিয়ারী ফরেস্ট স্টেশনে যোগদান করেন মঞ্জুর। তারপর বিভিন্ন কর্মকর্তাকে হাসান মাহমুদ এর প্রভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে দুর্নীতিতে বাধ্য করেন তিনি। পুরো স্টেশন কে গড়ে তুলেন দুর্নীতির আখড়ায়। আওয়ামী লীগ সরকার থাকা-কালে দুর্নীতি করতো প্রকাশ্য বর্তমানে দুর্নীতির নিয়ম পরিবর্তন করেছে এই মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,প্রতিটি গাছের গাড়ি থেকে চালান রশিদ বাবাদ নেওয়া হচ্ছে টাকা তবে টাকা নেওয়ার কৌশলটি একটু ভিন্ন। প্রথমে চালান রশিদ নিয়ে খাতায় এন্ট্রি করে চালককে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভিতরের একটি গোপন কক্ষে সেখানে টাকা নেওয়ার পর দেওয়া হচ্ছে না টাকার কোন কোন রশিদ। ভিতর থেকে চালকেরা বাইরে আসলে টাকার বিষয়ে ভয়ে খুলতে নারাজ। এক কথায় জিম্মি করে প্রত্যেকটি গাড়ি থেকে নেওয়া হচ্ছে টাকা। জানা যায় বিভিন্ন জায়গা থেকে আশা গাড়িগুলো থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টির মধ্যেও ভিন্নতা রয়েছে যেমন,বান্দরবান থেকে আশা প্রত্যেকটি গাড়ি থেকে নেওয়া হয় ২৭০০ টাকা করে,রাঙামাটি থেকে আসা গাড়ি থেকে নেওয়া হয় ৯০০ টাকা,বন্দর থেকে আসা প্রতিটি গাড়ি থেকে নেওয়া হয় ৫০০ টাকা,লামা থাকে আসা গাড়ি থেকে ২৫০০ টাকা,এভাবে ৪/৫ হাজার
টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন গাড়ি প্রতি নিয়ে থাকেন ভাটিয়ারী ফরেস্ট স্টেশন। যদিও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই তারপরও স্টেশনে ফরেস্টার মঞ্জু ও ফরেস্ট গার্ড জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে গাড়ি প্রতি টাকা তুলেন ফ্রি ম্যান শুভ কে দিয়ে। জানা যায়, ফরেস্টার মঞ্জুর সহযোগী মোঃ জাহাঙ্গীর তিনিও একজন আওয়ামী লীগ পন্থী দালাল। এই মঞ্জু আর জাহাঙ্গীর মিলে পুরো ফরেস্ট স্টেশনটাকে দুর্নীতির আখড়া হিসাবে গড়ে তুলেছেন। এদের দুজনের নেতৃত্বে অন্য কর্মকর্তারাও এখন পুরোপুরি দুর্নীতির সাথে যুক্ত। এক কথায় আওয়ামী
লীগ পন্থী এই দালালেরা এখনো স্টেশনটাকে আওয়ামী লীগ থাকা কালীন যেভাবে দুর্নীতি করেছেন ঠিক সেভাবে দুর্নীতি করে চালিয়ে যাচ্ছেন। অস্থায়ী কর্মকর্তা হিসেবে ফ্রি ম্যান শুভ এখানে কাজ করছেন সেই সুবাদে শুভ কে দিয়েই টাকা তুলেন মঞ্জু ও জাহাঙ্গীর। এক্ষেত্রে সুবিধাও রয়েছে অনেক হাতেনাতে ধরা পড়লে বলবে শুভকে আমরা চিনি না সে আমাদের কর্মকর্তা নয় এই কথা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়াটাও অনেক সহজ হবে এদের জন্য। তাই শুভকে দিয়েই প্রতিনিয়ত এই দুর্নীতির টাকা তোলেন তারা।
এই ফরেস্ট স্টেশনে যারা কাজ করেন তারা সবাই মঞ্জুর ও জাহাঙ্গীরের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে হবে না হলে যে কোন সময় বদলি এবং পানিশমেন্ট । যেহেতু মঞ্জুরুল আলম আওয়ামী লীগ পন্থী একজন দালাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের দালাল এখনো রয়ে গেছে তারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বসে এখনো অহরহর দুর্নীতি করে যাচ্ছে। ফরেস্টার মঞ্জুরুল আলমকে হাতেনাতে ধরা হলে তিনি বলেন দুর্নীতি তো আমি একলা করছি না দেশে শত শত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হচ্ছে তা আপনারা দেখেন না। এখানে কি এমন দুর্নীতি হয়ে যাচ্ছে যে এটা নিয়ে পড়ে আছেন। একজন দুর্নীতিবাজদের মুখে এ ধরনের কথা শোভা পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ তার কথায় বুঝা যায় সে ছোট খাটো দুর্নীতি করে দেশে শত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হচ্ছে সাংবাদিকদেরকে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন সেই দুর্নীতি গুলো তুলে ধরেন। তার কথা বুঝা যায় তিনি ছোট আকারে দুর্নীতি করেন তাই বড় দুর্নীতিবাজদেরকে সাংবাদিকদের দেখিয়ে দিচ্ছেন। তারমানে আওয়ামী লীগ পন্থী এই দালালের কাছে কোথায় কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে এ বিষয়ে সকল তথ্য রয়েছে। তিনি দুর্নীতিতে একজন ছাত্র মাত্র দুর্নীতিবাজ হেডমাস্টারের সন্ধানও তার কাছে রয়েছে।
হাতেনাতে এক চালককে ধরে প্রশ্ন করা হয় কোথায় থেকে গাড়িটি এসেছে তিনি বলেন বান্দরবান থেকে এবং তাকে আরো প্রশ্ন করা হয় কত টাকা দিয়েছেন প্রথমে যদিও বলতে ইতস্ত বোধ করেন পরবর্তীতে তিনি স্বীকার টি ভি বাবদ ২৭০০ টাকা দিয়েছেন এবং কাকে টাকাটা দেওয়া হয়েছে বললে সেখানে উপস্থিত সকলের সামনে ওই চালক ফ্রি ম্যান শুভকে দেখিয়ে দেন। সাংবাদিকরা শুভকে ধরলে শুভ বিষয়টি অস্বীকার করেন কিন্তু পাল্টাপাল্টি চালক সবার সামনে বারবার বলতে থাকেন যে তিনি শুভকেই ২৭০০ টাকা দিয়েছেন। সাংবাদিক উপস্থিতি দেখে সেখানে কর্মকর্তারা তৎক্ষণাৎ জাহাঙ্গীরকে খবর দেন জাহাঙ্গীর এসে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য ভিতরের রুমে বসতে বলেন। কিন্তু সাংবাদিকরা তার কথা না শুনে তার কাছে দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে সেখানে অন্য গাড়ির চালকরা টাকা জমা দিতে আসলে জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন ভিতরে গিয়ে বসার। এবং সেখানে চলে নানা ধরনের ধ্যান দরবার। সাংবাদিকদের টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান জাহাঙ্গীর। সাংবাদিকরা তাদের কু-প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আবারো দুর্নীতির তথ্য চাইলে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফরেস্টার মঞ্জুর আলম তিনি এসে মাত্রই সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষা গালগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশাসনের ভয় দেখান এবং সাংবাদিকদের ক্যামেরাতে হাত দিয়ে ক্যামেরা ম্যানকে ধাক্কা সরিয়ে দেন। এবং উপস্থিত এক গণমাধ্যম কর্মীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য জাহাঙ্গীরকে নির্দেশ দেন। এবং তিনি ওই গণমাধ্যম কর্মীর গায়ে হাত দিয়ে কথা বলতে থাকেন এবং মারমুখী আচরণ করেন এবং জাহাঙ্গীর ওই গণমাধ্যম কর্মীর মোবাইলে হাত দিয়ে টানাটানি করতে থাকেন। ঘটনার এক পর্যায় ফরেস্টার মঞ্জু ওই গণমাধ্যম কর্মীকে শাসাতে থাকেন বলেন দুর্নীতি এখানে কি পেয়েছেন বলে তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে দেখা যায় যার প্রতিটি চিত্রই ক্যামেরাতে দৃশ্যমান।
উল্লেখ্য আছে যে,ভাটিয়ারী ফরেস্ট স্টেশনে প্রতিনিয়ত দেড় থেকে দুই লাখ টাকার চাঁদাবাজি হয় আর এই চাঁদাবাজি করেন খোদ ফরেস্টার মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী নিজেই । হিসাব করলে পাওয়া যায় যদি গড়ে প্রতিদিন দুই লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি হয় তাহলে মাসে ৬০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি হয় মঞ্জুরুল এই আলম চৌধুরী নেতৃত্বে। তাহলে এই টাকা কোথায় যাচ্ছে সরকারি খাতে কি জমা হচ্ছে এই টাকার অংশ নাকি পুরোটাই মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী পকেটে। এই ধরনের দুর্নীতিবাজদের সঠিক তদন্ত এবং তাদের সম্পত্তির তদারকি জরুরী। প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করে এরা গড়ে তুলেছে সম্পদের পাহাড়। এ সকল দুর্নীতিবাজদের সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান অনুযায়ী তার সম্পত্তির তলব করা জরুরী মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীর যদি একাই ৬০ লক্ষ টাকা মাসে দুর্নীতি করে তাহলে বছরের কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করছেন এই কর্মকর্তা। মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীর মত এ ধরনের দুর্নীতিবাজদের জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী এদেরকে আইনের আওতায়েনের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য উন্মোচন করে জনসম্মুখে তুলে ধরতে না পারলে দুর্নীতিতে একটা সময় এরা দেশ বিক্রি করতেও দ্বিধাবোধ করবেন না। তাই এদেরকে ঠেকাতে এখনই দরকার আইনি পদক্ষেপ পাশাপাশি এদের সম্পত্তির তদারকিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা অনস্বীকার্য।