মশা থেকে বাঁচার নানা উপায় বের করেও শেষ রক্ষা হয় না অনেক সময়। কোন ফাঁকে উড়ে এসে কামড় বসিয়ে যায়। এর ভুক্তভোগী বেশি হয় শিশুরা। সুযোগ বুঝে বড়দেরও কামড় দিয়ে যায় বিভিন্ন রোগের জীবাণু বহনকারী এই পতঙ্গ। ঘরে থাকুন কিংবা বাইরে, আপনার রক্ত শুঁষে নেওয়ার সুযোগ পেলে আর এক মুহূর্তও দেরি করবে না। এমনকী ঘুমাতে গেলেও মশার দুর্বোধ্য সঙ্গীত শুনতে পাবেন কানের কাছেই।
বিভিন্ন রোগ ছড়ানোর পাশাপাশি এর কামড়ের যন্ত্রণা অস্বীকার করারও উপায় নেই। মশার কামড়ের কারণে আপনার ত্বকে লালচে ভাব, সামান্য ফোলা ও চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত থাকে। মশার কামড়ের কারণে সৃষ্ট চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে চাইলে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চলতে পারেন। এগুলো প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী-
বরফ
মশার কামড়ের কারণে সৃষ্ট ফোলাভাব কমাতে কিছুটা বরফ গুঁড়া করে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে বরফ ব্যবহার করলে তাৎক্ষণিকভাবে জ্বালা ও চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ঠান্ডা কিছু ধরে রাখতে পারেন বা কিছুটা বরফ চূর্ণ করে একটি কাপড়ে মুড়ে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে রাখতে পারেন। তবে শুধু বরফ কখনোই ৫ মিনিটের বেশি ত্বকে ধরে রাখবেন না। এটি কোষের ক্ষতি করতে পারে।
মধু
মধুতে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। ত্বকের নানা সমস্যায় ব্যবহার করা হয় মধু। এটি মশার কামড়ে সৃষ্ট চুলকানি দূর করতেও কাজ করে। আক্রান্ত স্থানে সামান্য মধু লাগিয়ে রাখলে চুলকানির সমস্যা আস্তে আস্তে কমে আসবে। কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
অ্যালোভেরা
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে খুবই উপকারী একটি ভেষজ হলো অ্যালোভেরা। এতে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের ক্ষতা, ফোলাভাব, চুলকানির সমস্যা দূর করতে কাজ করে। যে কারণে এটি মশার কামড়ের ক্ষেত্রেও সমান কার্যকরী। তাজা অ্যালোভেরা থেকে ছোট একটি টুকরা কেটে নিয়ে সরাসরি আক্রান্ত স্থানে চেপে ধরুন। এতে অস্বস্তি খুব দ্রুতই কমে আসবে।
বেকিং সোডা
বিভিন্ন কাজে বেকিং সোডা ব্যবহৃত হয়। মশার কামড়ের যন্ত্রণা দূর করা সেসবের মধ্যে অন্যতম। একটি চা চামচে কয়েক ফোঁটা পানি ও সামান্য বেকিং সোডা নিয়ে একটি পেস্টের মতো তৈরি করুন। এবার সেই পেস্ট আক্রান্ত স্থানে হালকা হাতে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর অস্বস্তি ও যন্ত্রণা কমে এলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তুলসি পাতা
তুলসি পাতার অনেকগুলো উপকারিতার মধ্যে একটি হলো, এটি মশার কামড়ের কারণে সৃষ্ট যন্ত্রণা দূর করতে কাজ করে। তুলসি পাতায় থাকা ইউজেনল নামক উপাদান চুলকানি দূর করে ত্বকে স্বস্তি দিতে কাজ করে। এক কাপ পানিতে কিছু তুলসি পাতা ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এরপর নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এবার এই পানিতে একটি কটন বাড চুবিয়ে সেটি আক্রান্ত স্থানে আলতো করে ঘষুন। সমস্যা দূর হবে।
পেঁয়াজ
পেঁয়াজ কাটার কারণে আপনার চোখে পানি আসতেই পারে তবে এটি মশার কামড়ের কারণে সৃষ্ট যন্ত্রণা দূর করতে কার্যকরী। আক্রান্ত স্থানে কয়েক ফোঁটা পেঁয়াজের রস দিলে তা যন্ত্রণা কমাতে কাজ করবে। এতে আরও আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান যা সংক্রমণের ভয় দূরে।