ঢাকা ০৬:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মান্নান মেম্বার, জাহিদ, নাজিম, নুরুল শিকদার, এস আই জহির লালের নিয়ন্ত্রণে গোয়াইনঘাট জাফলংয়ের চোরাচালানের সাম্রাজ্য গ্রেফতার হয়নি আশুলিয়ায় ৪৬ লাশ পোড়ানোর মাস্টারমাইন্ড আমানুল্লাহসহ অন্যান্যরা মনোহরগঞ্জের লক্ষণপুর ইউনিয়ন ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সমাবেশ চট্টগ্রামে জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকার সম্পাদক খান সেলিমের জন্মদিন উদযাপন ৩৭ কোটি টাকার দরপত্রে আগাম দুর্নীতির আয়োজন মতিন আব্দুল্লাহ মতিন আব্দুল্লাহ ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ ২১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিটিভির জিএমকে দুদকে তলব অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় রাজশাহী নগর আ.লীগ নেতা কালুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রদান মানুষের আস্থা ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে বিএনপি -হাফিজ ইব্রাহিম আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সুনাম নষ্ট করে,এএসআই সোহেলের বিআরটিএ তে দালালি

গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীসহ ১৬ কর্মকর্তার নামে হত্যা মামলা । (প্রথম পর্ব )

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছিল পতিত সরকারের সহযোগীরা। সেই হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণকারী গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারসহ ১৬ জন কর্মকর্তার নামে গত ৩১ অক্টোবর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হত্যা মামলা হয়েছে। হত্যা মামলায় আসামিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের অর্থ যোগান দিয়ে এই নির্মম গণহত্যা সংঘটিত করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে। হত্যা মামলা রজু হওয়ার পরেই গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার মামলাটি থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য হত্যা মামলার বাদীর সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

কে.এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩১ অক্টোবর এই হত্যা মামলা দায়ের করার আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট পল্টন মডেল থানাকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একইরকম আরো হত্যা মামলা আছে কিনা তা কোর্টকে গত ৪ নভেম্বরের মধ্যে জানানোর আদেশ দেয়। আদেশ দিয়ে ৮৭৪/২০২০ (পল্টন) নম্বরে আবেদনটি হত্যা মামলায় রুপান্তর করে কোর্ট। আদেশ অনুযায়ী পল্টন মডেল থানা থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। যাতে উল্লেখ করে পল্টন মডেল থানায় গত ২৯ অক্টোবর মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে একই ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। যার মামলা নম্বর ৪৮ ধারা: ৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।

হত্যা মামলার নথি পত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারসহ ৪ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, ৪ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ৬ জন নির্বাহী প্রকৌশলী ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১ জন নির্বাহী প্রকৌশলীর নাম আছে। প্রত্যেকেই সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রী মুক্তাদির চৌধুরী ও সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের একান্ত কাছের লোক ছিলেন। তাদের নির্দেশেই প্রকৌশলীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীদের দেশের ক্রান্তিকালে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগান দিয়েছিলেন জুলাইয়ের নির্মম ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে।

হত্যা মামলায় আসামী প্রকৌশলীরা হলেন:

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শহিদুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতী নাথ বাসক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ জাকির হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরন মিস্ত্রি, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিরাজ হোসেন।

সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলাটি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করার জন্য প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারসহ অন্য প্রকৌশলীরা হত্যা মামলার বাদীর সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন। কারো মতে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে সমঝোতা করতে মাঠে নেমেছে প্রকৌশলীরা। কেউবা বলছে এই সমঝোতার টাকা প্রায় ৩০ কোটি। এই মীমাংসা প্রক্রিয়ায় মূখ্য ভূমিকা পালন করছে প্রধান প্রকৌশলীর অফিস।

প্রত্যেক আসামীর নামেই পতিত আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ আছে। দুর্নীতি অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনাও রয়েছে। প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার এই দলীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রায় চার বছর ধরে নিয়মবহির্ভূতভাবে চলতি দায়িত্বে আছেন। শামীম আখতারের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মনিটরিং) মো. আশফাকুল ইসলাম বাবুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রায় এক বছর আগে তদন্ত প্রতিবেদন সচিবের কাছে জমা দিলেও প্রধান প্রকৌশলী মন্ত্রীর কাছের লোক হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে তদন্ত প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সংস্থার কর্মকর্তারা। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে মন্ত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে প্রভাব বিস্তার করে বিসিএস (পাবলিক ওয়ার্কস) ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের মেধাতালিকায় ৭ নম্বরে থাকার পরও প্রধান প্রকৌশলী পদে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর চলতি দায়িত্ব পান শামীম আখতার। প্রায় চার বছর ধরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ (গ্রেড-১) এই পদে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই পদে বহাল থাকার মূল কারণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ যোগান দেওয়াই তার প্রমাণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে বলেন, যাদের নামে হত্যা মামলা হয়েছে তারা আসলেই আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কাছে লোক ছিলেন। তাদের পক্ষে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব। এখন তারা যত টাকাই লাগুক না কেন তা দিয়ে এই হত্যা মামলা থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করবে।

এক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র-জনতা হত্যা করেছে কিন্তু তাদের কিছুই হবে না। তারা ঠিকই হত্যা মামলা থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিবে। তাদের অঢেল অবৈধ টাকা আছে।

এই হত্যা মামলা ও মীমাংসার বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মান্নান মেম্বার, জাহিদ, নাজিম, নুরুল শিকদার, এস আই জহির লালের নিয়ন্ত্রণে গোয়াইনঘাট জাফলংয়ের চোরাচালানের সাম্রাজ্য

গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীসহ ১৬ কর্মকর্তার নামে হত্যা মামলা । (প্রথম পর্ব )

আপডেট সময় ০১:৫৩:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছিল পতিত সরকারের সহযোগীরা। সেই হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণকারী গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারসহ ১৬ জন কর্মকর্তার নামে গত ৩১ অক্টোবর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হত্যা মামলা হয়েছে। হত্যা মামলায় আসামিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের অর্থ যোগান দিয়ে এই নির্মম গণহত্যা সংঘটিত করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে। হত্যা মামলা রজু হওয়ার পরেই গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার মামলাটি থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য হত্যা মামলার বাদীর সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

কে.এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩১ অক্টোবর এই হত্যা মামলা দায়ের করার আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট পল্টন মডেল থানাকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একইরকম আরো হত্যা মামলা আছে কিনা তা কোর্টকে গত ৪ নভেম্বরের মধ্যে জানানোর আদেশ দেয়। আদেশ দিয়ে ৮৭৪/২০২০ (পল্টন) নম্বরে আবেদনটি হত্যা মামলায় রুপান্তর করে কোর্ট। আদেশ অনুযায়ী পল্টন মডেল থানা থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। যাতে উল্লেখ করে পল্টন মডেল থানায় গত ২৯ অক্টোবর মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে একই ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। যার মামলা নম্বর ৪৮ ধারা: ৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।

হত্যা মামলার নথি পত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারসহ ৪ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, ৪ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ৬ জন নির্বাহী প্রকৌশলী ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১ জন নির্বাহী প্রকৌশলীর নাম আছে। প্রত্যেকেই সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রী মুক্তাদির চৌধুরী ও সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের একান্ত কাছের লোক ছিলেন। তাদের নির্দেশেই প্রকৌশলীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীদের দেশের ক্রান্তিকালে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগান দিয়েছিলেন জুলাইয়ের নির্মম ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে।

হত্যা মামলায় আসামী প্রকৌশলীরা হলেন:

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শহিদুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতী নাথ বাসক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ জাকির হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরন মিস্ত্রি, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিরাজ হোসেন।

সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলাটি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করার জন্য প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারসহ অন্য প্রকৌশলীরা হত্যা মামলার বাদীর সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন। কারো মতে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে সমঝোতা করতে মাঠে নেমেছে প্রকৌশলীরা। কেউবা বলছে এই সমঝোতার টাকা প্রায় ৩০ কোটি। এই মীমাংসা প্রক্রিয়ায় মূখ্য ভূমিকা পালন করছে প্রধান প্রকৌশলীর অফিস।

প্রত্যেক আসামীর নামেই পতিত আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ আছে। দুর্নীতি অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনাও রয়েছে। প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার এই দলীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রায় চার বছর ধরে নিয়মবহির্ভূতভাবে চলতি দায়িত্বে আছেন। শামীম আখতারের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মনিটরিং) মো. আশফাকুল ইসলাম বাবুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রায় এক বছর আগে তদন্ত প্রতিবেদন সচিবের কাছে জমা দিলেও প্রধান প্রকৌশলী মন্ত্রীর কাছের লোক হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে তদন্ত প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সংস্থার কর্মকর্তারা। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে মন্ত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে প্রভাব বিস্তার করে বিসিএস (পাবলিক ওয়ার্কস) ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের মেধাতালিকায় ৭ নম্বরে থাকার পরও প্রধান প্রকৌশলী পদে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর চলতি দায়িত্ব পান শামীম আখতার। প্রায় চার বছর ধরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ (গ্রেড-১) এই পদে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই পদে বহাল থাকার মূল কারণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ যোগান দেওয়াই তার প্রমাণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে বলেন, যাদের নামে হত্যা মামলা হয়েছে তারা আসলেই আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কাছে লোক ছিলেন। তাদের পক্ষে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব। এখন তারা যত টাকাই লাগুক না কেন তা দিয়ে এই হত্যা মামলা থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করবে।

এক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র-জনতা হত্যা করেছে কিন্তু তাদের কিছুই হবে না। তারা ঠিকই হত্যা মামলা থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিবে। তাদের অঢেল অবৈধ টাকা আছে।

এই হত্যা মামলা ও মীমাংসার বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।