ঢাকা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
‘সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে’ ডিসেম্বরে পায়রা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন শুরু ভোলার নিখোঁজ ব্যাবসায়ী সুলতান কে উদ্ধার করলো র‍্যাব নারীর ব্যাগ তল্লাশি করে ধাওয়া খেলেন দুই ছাত্র হাজারী গলিতে এসিড নিক্ষেপের মামলায় যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছিনতাইকারী মনসুরকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে খুলশী এলাকা থেকে একটি আগ্নোয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয় ভোলার চরফ্যাশনে র‍্যাবের অভিযানে মাডার মামলার ৩ আসামী গ্রেফতার বাংলাদেশ সাংবাদিক উন্নয়ন এসোসিয়েশন বিজেডিএ’র এর প্রতিষ্ঠাতা কমিটি গঠন মান্নান মেম্বার, জাহিদ, নাজিম, নুরুল শিকদার, এস আই জহির লালের নিয়ন্ত্রণে গোয়াইনঘাট জাফলংয়ের চোরাচালানের সাম্রাজ্য গ্রেফতার হয়নি আশুলিয়ায় ৪৬ লাশ পোড়ানোর মাস্টারমাইন্ড আমানুল্লাহসহ অন্যান্যরা

গ্রেফতার হয়নি আশুলিয়ায় ৪৬ লাশ পোড়ানোর মাস্টারমাইন্ড আমানুল্লাহসহ অন্যান্যরা

দ্বিতীয় পর্ব

আশুলিয়ায় ০৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে মৃত ৪৬ লাশকে পুড়িয়ে ফেলার মাস্টারমাইন্ড আমানুল্লাহ সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রেফতার বা কোনো বিচারের আওতায় আনা হয়নি তাদের, যেন তারা নির্দোষ। সাধারণ জনগণ ভাবছে আইনশৃঙ্খলার অবনতির ফলে তারা এখনো গ্রেফতারের আওতায় আসেনি। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনার ঝড়। অথচ আশুলিয়ার তালপট্টি এলাকার ইকবাল, প্রকৌশলী আমানুল্লাহ, গণপূর্তের অসংখ্য সন্ত্রাসী এই লোমহর্ষক নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িত। আশুলিয়ায় লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডল মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। হত্যা, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি যাদের নিত্যদিনের কাজ। স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল( ৬০)। এলাকার ফুটপাত হতে আরম্ভ করে সমস্ত অলিগলিতে রাম রাজত্ব কায়েম করে আসছেন ‌। নাম সোনা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের কন্ডা এলাকায় তার বাড়ি। বিগত ষোল বছর পুরো আশুলিয়া এলাকায় লতিফ মন্ডল এক আতঙ্কের নাম ছিল। ফুটপাত থেকে শুরু করে সকল জায়গায় করতেন চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি। তার কথা কেউ অমান্য করলে হতে হয় লাঞ্ছিত অন্যথায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়‌ । তথ্য সূত্রে জানা যায়, আমানুল্লাহ আশুলিয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি লতিফ মণ্ডলের সাথে যোগসাজশে পুরো এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রণ করতেন আমানুল্লাহ । প্রতিদিন ফুটপাত থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন লতিফ মন্ডল। আশুলিয়ার আরেক মাদক ব্যবসায়ী কামাল শেখের মাধ্যমে জুয়ার কোট বসিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে আমানুল্লার অনুসারীরা। পুরো টাকার ভাগ নিতেন আমানুল্লাহ।বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তার নেতৃত্বে সশস্ত্র অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সাধারণ ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়ে নিহত করে শতাধিক ও আহত করে কয়েক শত লোক। তথ্য সূত্রে আরো জানা যায় স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলামের পুরো অর্থ জোগান দিতেন আমানুল্লাহ। সাইফুল ইসলাম যখন ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন লতিফ মন্ডল।ধামসোনা ইউনিয়নে বাড়িঘর নির্মাণ করতে হলে লতিফ কে দিতে হতো মোটা অঙ্কের চাঁদা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হতো না। কারো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর নজর পরলে লতিফ মন্ডলকে চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করতে দেয়া হতো না ‌। ফুটপাত দখল করে ভ্যান গাড়ি ও ছোট ছোট দোকান বসিয়ে প্রতিদিন হাতিয়ে নিয়েছে ৫০ লাখ টাকা। স্থানীয় প্রতিটি গার্মেন্টস থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট হারে চাঁদাবাজি করে। তাকে টাকা না দিলে বন্ধ করে দেয়া হয় গার্মেন্টস। এলাকার সুন্দরী মেয়ে তার নজরে পড়লে ভোগ করার জন্য প্রহর গুনতেন ‌। পুরো আশুলিয়া মাদকের নিয়ন্ত্রণ করত লতিফ মন্ডল। সকল প্রকার মাদক তার হাত থেকে অন্যান্য স্থানে যেত। এভাবে আওয়ামী লীগের পুরো ষোল বছর রাজত্ব কায়েম করে হাজার কোটি টাকার মালিক লতিফ মন্ডল। তালপট্টি এলাকায় জুয়ার বোর্ড বসিয়ে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চ বিলাসী লোকজন জুয়া ও মাদকের মত্ত থাকত। এখান থেকে লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মণ্ডলের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হতো।

স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আক্কাস আলী মন্ডল(৫৫) আরেক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। তিনি দক্ষিণ তালপট্টি শ্রীপুর এলাকায় নিজেকে অঘোষিত মেয়র বলে পরিচয় দিয়ে আসছে। রাজমিস্ত্রী থেকে এখন পাঁচ শত কোটি টাকার মালিক টোকাই আক্কাস আলী মন্ডল ‌। তাল পট্টি এলাকায় একসময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করত আক্কাস আলী মন্ডল, এখন সে পাঁচটি বাড়ির মালিক। তার কথায় পুরো এলাকা উঠবস করত ‌। তার অবাধ্য হলে কেউ পাড় পেত না। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তার নেতৃত্বে আশুলিয়া এলাকায় থানার সামনে শত শত মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে । এলাকাবাসী বলেন, তার বাসায় এখনো বিদেশি- বিদেশি প্রায় পঞ্চাশটি অস্ত্র আছে যা সেনাবাহিনী অভিযান চালালে পাওয়া যাবে। এলাকার নির্যাতিত অনেক অসহায় মানুষ জানায়, বিগত ১৬ বছরে আক্কাস আলী মন্ডল আমাদের এলাকায় উন্নয়ন লীগের নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিয়েছে। লোক মুখে শোনা যায়, আক্কাস আলী মন্ডল সাত বছর পূর্বে এলাকার সুইপার শাওন আক্কাসের বাড়িতে কাজ না করায় রাতের আঁধারে মেরে ফেলে চার দিন পর তালপট্টি বায়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে দুই বাড়ির মাঝখানে সুইপার শাওনের লাশ পাওয়া গেছে। শাওনের পরিবার আক্কাস আলী মণ্ডলের ভয়ে মামলা করতে পারেনি। এখন মামলা করার জন্য জনে জনে বলে বেড়াচ্ছে ‌। এখনো ছেলের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে শাওনের বাবা। এরকম অনেক অসহায় পরিবার। এলাকার কেও যদি নতুন বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে আক্কাস আলীকে ইট,বাদী ও রড দিয়ে আসতে হয়। যদি অস্বীকার করে তা হলে বাড়ি নির্মাণ করতে দেয় না। শ্রীপুর তালপট্টি এলাকায় ভোটার বিহীন,মুকুটহীন সম্রাট আক্কাস আলী মন্ডল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগের সকল ক্যাডাররা আক্কাস আলী মন্ডলের বাসায় অবস্থান করছে। অস্ত্রগুলো আক্কাস আলীর বাসায় রক্ষিত আছে। তার নামে আক্কাস নগর আছে, ‌সেখানে প্রতিটি বিল্ডিংয়ের ফলস ছাদের উপর অস্ত্রগুলো বস্তা মোড়ানো অবস্থায় আছে। আক্কাস নগরে প্রায় একশত বিল্ডিং আছে সেখানে প্রায় এক হাজার পরিবার আছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে আত্মগোপন করে আছে । বর্তমানে আক্কাস নগরে থেকে সরকার বিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডলের কিছু বি এন পি’র নেতাদের বাড়িতে আত্মীয় পরিচয়ে রাতের বেলায় লুকিয়ে থাকে দিনের বেলায় সূর্যের আলো দেখার জন্য উঁকি দেয়।

পুলিশ তাদের সকল অপকর্ম অবগত থাকলেও তার ব্যাপারে কোন প্রকার অভিযান চালাতে চেষ্টা করেনি। বিদেশী অস্ত্রগুলো এবং কয়েক হাজার গুলি বস্তা ভর্তি অবস্থায় আছে। তার নামের রাজমিস্ত্রী থেকে আক্কাস আলী মন্ডল এখন পাঁচ শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এলাকার কোনো মেয়ের বিয়ে দিতে হলে আক্কাস আলীর অনুমতি নিতে হয়‌। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগষ্ট ২০২৪ আক্কাস ও লতিফ মন্ডল সরাসরি নেতৃত্ব প্রদান করে শতশত ছাত্র গুলি বিদ্ধ করেন এবং শতাধিক ছাত্র জনতা নিহত হয়। এতে অনেক ছাত্র জনতাকে পুড়িয়ে ফেলার লোমহর্ষক নারকীয় ঘটনা ঘটে। এতে তাদের বিন্দু পরিমাণ বুক কাঁপেনি। এখনো লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডল এলাকায় বুক ফুলিয়ে হাটে আর বলে আমাদের বিরুদ্ধে যারা মামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা করে প্রতিহত করা হবে। আদালত সূত্রে জানা যায় লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডলের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। যার নং সি আর ১২১৮/২৪,সি আর ১২৬৫/২৪,সি আর ১৩১৬/২৪। মামলা সূত্রে জানা যায় ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ সকাল ১০’ ৩০ ঘটিকার সময় আক্কাস আলী মন্ডল ও লতিফ মন্ডল ২ হাজার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ সশস্ত্র অবস্থায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শতাধিক ছাত্র জনতাকে হত্যা করে এবং চল্লিশের অধিক ছাত্র জনতার লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে । যা অন্ধকার যুগকে হার মানিয়েছে। এলাকার জনগণ তাদের অত্যাচারের বর্ণনা করতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে ফেলেন। আমানুল্লাহ তার উপরের বাসদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়ে আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে দিতেন মতে করে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে অসুবিধা না হয়। স্থানীয় আনিসুর রহমানের ছেলে ইকবাল হোসেনের মাধ্যমে আমানুল্লাহ সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। ইতিমধ্যে আমানুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সাধারণ ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করার দায়ে আদালতে দুটি মামলা হয় ‌ যার নং সি আর ১৩১৬/২৪ ও ১২৬৫/২৪ । মামলা দুটির আসামি হওয়ায় আমানুল্লাহ নিজেকে বাঁচাতে লোক চক্ষুর অন্তরালে রাখেন। আমানুল্লাহ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বিএনপি’র নেতা দাবি করে বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীদের হাতে পায়ে ধরছেন। খোঁজ নিয়ে জদযায়,আমানুল্লাহর ঢাকার আভিজাত্য এলাকায় পাঁচটি বাড়ি রয়েছে।তার মধ্যে গুলশান তার ছোট ভাইয়ের নামে একটি বাড়ি আছে যার পুরোটাই তার খরচে। এনবিআরের ভয়ে তার পরিবারের বিভিন্ন জনের নামে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করে রেখেছেন শত শত কোটি টাকা। টাকার কারণে প্রায়ই আমানুল্লাহ বিভিন্ন বারে গিয়ে মদপানে মত্ত হয়ে থাকেন। একাধিক সুন্দরী ললনাদের সাথে ঘরে তোলেন পরকীয়া। প্রায় সময় তাদের একেকজনকে নিয়ে ভ্রমন করেন বিভিন্ন ট্যুরিজম এলাকায়। ভুক্তভোগী জনগণ আক্কাস আলী মন্ডল ও লতিফ মণ্ডলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

‘সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে’

গ্রেফতার হয়নি আশুলিয়ায় ৪৬ লাশ পোড়ানোর মাস্টারমাইন্ড আমানুল্লাহসহ অন্যান্যরা

আপডেট সময় ০৩:৪০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

দ্বিতীয় পর্ব

আশুলিয়ায় ০৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে মৃত ৪৬ লাশকে পুড়িয়ে ফেলার মাস্টারমাইন্ড আমানুল্লাহ সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রেফতার বা কোনো বিচারের আওতায় আনা হয়নি তাদের, যেন তারা নির্দোষ। সাধারণ জনগণ ভাবছে আইনশৃঙ্খলার অবনতির ফলে তারা এখনো গ্রেফতারের আওতায় আসেনি। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনার ঝড়। অথচ আশুলিয়ার তালপট্টি এলাকার ইকবাল, প্রকৌশলী আমানুল্লাহ, গণপূর্তের অসংখ্য সন্ত্রাসী এই লোমহর্ষক নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িত। আশুলিয়ায় লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডল মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। হত্যা, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি যাদের নিত্যদিনের কাজ। স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল( ৬০)। এলাকার ফুটপাত হতে আরম্ভ করে সমস্ত অলিগলিতে রাম রাজত্ব কায়েম করে আসছেন ‌। নাম সোনা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের কন্ডা এলাকায় তার বাড়ি। বিগত ষোল বছর পুরো আশুলিয়া এলাকায় লতিফ মন্ডল এক আতঙ্কের নাম ছিল। ফুটপাত থেকে শুরু করে সকল জায়গায় করতেন চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি। তার কথা কেউ অমান্য করলে হতে হয় লাঞ্ছিত অন্যথায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়‌ । তথ্য সূত্রে জানা যায়, আমানুল্লাহ আশুলিয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি লতিফ মণ্ডলের সাথে যোগসাজশে পুরো এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রণ করতেন আমানুল্লাহ । প্রতিদিন ফুটপাত থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন লতিফ মন্ডল। আশুলিয়ার আরেক মাদক ব্যবসায়ী কামাল শেখের মাধ্যমে জুয়ার কোট বসিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে আমানুল্লার অনুসারীরা। পুরো টাকার ভাগ নিতেন আমানুল্লাহ।বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তার নেতৃত্বে সশস্ত্র অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সাধারণ ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়ে নিহত করে শতাধিক ও আহত করে কয়েক শত লোক। তথ্য সূত্রে আরো জানা যায় স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলামের পুরো অর্থ জোগান দিতেন আমানুল্লাহ। সাইফুল ইসলাম যখন ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন লতিফ মন্ডল।ধামসোনা ইউনিয়নে বাড়িঘর নির্মাণ করতে হলে লতিফ কে দিতে হতো মোটা অঙ্কের চাঁদা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হতো না। কারো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর নজর পরলে লতিফ মন্ডলকে চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করতে দেয়া হতো না ‌। ফুটপাত দখল করে ভ্যান গাড়ি ও ছোট ছোট দোকান বসিয়ে প্রতিদিন হাতিয়ে নিয়েছে ৫০ লাখ টাকা। স্থানীয় প্রতিটি গার্মেন্টস থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট হারে চাঁদাবাজি করে। তাকে টাকা না দিলে বন্ধ করে দেয়া হয় গার্মেন্টস। এলাকার সুন্দরী মেয়ে তার নজরে পড়লে ভোগ করার জন্য প্রহর গুনতেন ‌। পুরো আশুলিয়া মাদকের নিয়ন্ত্রণ করত লতিফ মন্ডল। সকল প্রকার মাদক তার হাত থেকে অন্যান্য স্থানে যেত। এভাবে আওয়ামী লীগের পুরো ষোল বছর রাজত্ব কায়েম করে হাজার কোটি টাকার মালিক লতিফ মন্ডল। তালপট্টি এলাকায় জুয়ার বোর্ড বসিয়ে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চ বিলাসী লোকজন জুয়া ও মাদকের মত্ত থাকত। এখান থেকে লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মণ্ডলের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হতো।

স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আক্কাস আলী মন্ডল(৫৫) আরেক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। তিনি দক্ষিণ তালপট্টি শ্রীপুর এলাকায় নিজেকে অঘোষিত মেয়র বলে পরিচয় দিয়ে আসছে। রাজমিস্ত্রী থেকে এখন পাঁচ শত কোটি টাকার মালিক টোকাই আক্কাস আলী মন্ডল ‌। তাল পট্টি এলাকায় একসময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করত আক্কাস আলী মন্ডল, এখন সে পাঁচটি বাড়ির মালিক। তার কথায় পুরো এলাকা উঠবস করত ‌। তার অবাধ্য হলে কেউ পাড় পেত না। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তার নেতৃত্বে আশুলিয়া এলাকায় থানার সামনে শত শত মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে । এলাকাবাসী বলেন, তার বাসায় এখনো বিদেশি- বিদেশি প্রায় পঞ্চাশটি অস্ত্র আছে যা সেনাবাহিনী অভিযান চালালে পাওয়া যাবে। এলাকার নির্যাতিত অনেক অসহায় মানুষ জানায়, বিগত ১৬ বছরে আক্কাস আলী মন্ডল আমাদের এলাকায় উন্নয়ন লীগের নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিয়েছে। লোক মুখে শোনা যায়, আক্কাস আলী মন্ডল সাত বছর পূর্বে এলাকার সুইপার শাওন আক্কাসের বাড়িতে কাজ না করায় রাতের আঁধারে মেরে ফেলে চার দিন পর তালপট্টি বায়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে দুই বাড়ির মাঝখানে সুইপার শাওনের লাশ পাওয়া গেছে। শাওনের পরিবার আক্কাস আলী মণ্ডলের ভয়ে মামলা করতে পারেনি। এখন মামলা করার জন্য জনে জনে বলে বেড়াচ্ছে ‌। এখনো ছেলের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে শাওনের বাবা। এরকম অনেক অসহায় পরিবার। এলাকার কেও যদি নতুন বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে আক্কাস আলীকে ইট,বাদী ও রড দিয়ে আসতে হয়। যদি অস্বীকার করে তা হলে বাড়ি নির্মাণ করতে দেয় না। শ্রীপুর তালপট্টি এলাকায় ভোটার বিহীন,মুকুটহীন সম্রাট আক্কাস আলী মন্ডল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগের সকল ক্যাডাররা আক্কাস আলী মন্ডলের বাসায় অবস্থান করছে। অস্ত্রগুলো আক্কাস আলীর বাসায় রক্ষিত আছে। তার নামে আক্কাস নগর আছে, ‌সেখানে প্রতিটি বিল্ডিংয়ের ফলস ছাদের উপর অস্ত্রগুলো বস্তা মোড়ানো অবস্থায় আছে। আক্কাস নগরে প্রায় একশত বিল্ডিং আছে সেখানে প্রায় এক হাজার পরিবার আছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে আত্মগোপন করে আছে । বর্তমানে আক্কাস নগরে থেকে সরকার বিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডলের কিছু বি এন পি’র নেতাদের বাড়িতে আত্মীয় পরিচয়ে রাতের বেলায় লুকিয়ে থাকে দিনের বেলায় সূর্যের আলো দেখার জন্য উঁকি দেয়।

পুলিশ তাদের সকল অপকর্ম অবগত থাকলেও তার ব্যাপারে কোন প্রকার অভিযান চালাতে চেষ্টা করেনি। বিদেশী অস্ত্রগুলো এবং কয়েক হাজার গুলি বস্তা ভর্তি অবস্থায় আছে। তার নামের রাজমিস্ত্রী থেকে আক্কাস আলী মন্ডল এখন পাঁচ শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এলাকার কোনো মেয়ের বিয়ে দিতে হলে আক্কাস আলীর অনুমতি নিতে হয়‌। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগষ্ট ২০২৪ আক্কাস ও লতিফ মন্ডল সরাসরি নেতৃত্ব প্রদান করে শতশত ছাত্র গুলি বিদ্ধ করেন এবং শতাধিক ছাত্র জনতা নিহত হয়। এতে অনেক ছাত্র জনতাকে পুড়িয়ে ফেলার লোমহর্ষক নারকীয় ঘটনা ঘটে। এতে তাদের বিন্দু পরিমাণ বুক কাঁপেনি। এখনো লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডল এলাকায় বুক ফুলিয়ে হাটে আর বলে আমাদের বিরুদ্ধে যারা মামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা করে প্রতিহত করা হবে। আদালত সূত্রে জানা যায় লতিফ মন্ডল ও আক্কাস আলী মন্ডলের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। যার নং সি আর ১২১৮/২৪,সি আর ১২৬৫/২৪,সি আর ১৩১৬/২৪। মামলা সূত্রে জানা যায় ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ সকাল ১০’ ৩০ ঘটিকার সময় আক্কাস আলী মন্ডল ও লতিফ মন্ডল ২ হাজার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ সশস্ত্র অবস্থায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শতাধিক ছাত্র জনতাকে হত্যা করে এবং চল্লিশের অধিক ছাত্র জনতার লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে । যা অন্ধকার যুগকে হার মানিয়েছে। এলাকার জনগণ তাদের অত্যাচারের বর্ণনা করতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে ফেলেন। আমানুল্লাহ তার উপরের বাসদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়ে আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে দিতেন মতে করে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে অসুবিধা না হয়। স্থানীয় আনিসুর রহমানের ছেলে ইকবাল হোসেনের মাধ্যমে আমানুল্লাহ সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। ইতিমধ্যে আমানুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সাধারণ ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করার দায়ে আদালতে দুটি মামলা হয় ‌ যার নং সি আর ১৩১৬/২৪ ও ১২৬৫/২৪ । মামলা দুটির আসামি হওয়ায় আমানুল্লাহ নিজেকে বাঁচাতে লোক চক্ষুর অন্তরালে রাখেন। আমানুল্লাহ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বিএনপি’র নেতা দাবি করে বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীদের হাতে পায়ে ধরছেন। খোঁজ নিয়ে জদযায়,আমানুল্লাহর ঢাকার আভিজাত্য এলাকায় পাঁচটি বাড়ি রয়েছে।তার মধ্যে গুলশান তার ছোট ভাইয়ের নামে একটি বাড়ি আছে যার পুরোটাই তার খরচে। এনবিআরের ভয়ে তার পরিবারের বিভিন্ন জনের নামে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করে রেখেছেন শত শত কোটি টাকা। টাকার কারণে প্রায়ই আমানুল্লাহ বিভিন্ন বারে গিয়ে মদপানে মত্ত হয়ে থাকেন। একাধিক সুন্দরী ললনাদের সাথে ঘরে তোলেন পরকীয়া। প্রায় সময় তাদের একেকজনকে নিয়ে ভ্রমন করেন বিভিন্ন ট্যুরিজম এলাকায়। ভুক্তভোগী জনগণ আক্কাস আলী মন্ডল ও লতিফ মণ্ডলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।