ঢাকা ০৬:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বোরহানউদ্দিনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত গোপন তদন্তের মুখে আ.লীগ আমলের পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যাডেট এসআইরাও তদন্তের আওতায় সিলেটে দেড় থেকে ২ কোটি ব্যারেল তেল পাওয়ার সম্ভাবনা রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন না: রিজওয়ানা হাসান জামায়াত কর্মীদের সৎ, যোগ্য এবং সমাজ পরিচালনার জন্য দক্ষ হিসাবে গড়ে তুলতে অধ্যক্ষ নুরুল আমিন রাজবাড়ীতে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও খাবার বিতরণ কুরআনই একমাত্র দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির গ্যারান্টি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে মাহবুবের রহমান শামীম কুমিল্লা’য় সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক-২ শহীদ ওয়াসিম আকরাম, তানভীর ও রাব্বি স্মৃতি সংসদের বিক্ষোভ সমাবেশে এরশাদ উল্লাহ

ঠাকুরগাঁওয়ে সেই ‘সোনার খনির’ মাটি পরীক্ষা করছে ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তর

বহুল আলোচিত ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার কথিত সেই সোনার খনির মাটি পরীক্ষায় নেমেছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রতিষ্ঠান ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের একদল গবেষক।

মঙ্গলবার থেকে গবেষক দলের সদস্য, ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনোয়ার সাদাৎ মুহাম্মদ সায়েম ও সহকারী পরিচালক (ভূতত্ত্ব) মোহাম্মদ আল রাজী রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রকিবুল হাসান ও বাচোর ইউপি চেয়ারম্যান জীতেন্দ্রনাথ বর্মণকে সঙ্গে নিয়ে মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করেছেন।

সেখানকার মাটি পরীক্ষা–নিরীক্ষাকালে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা সঙ্গ দিচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাণীশংকৈলের ইউএনও রকিবুল হাসান।

গবেষক দলের সদস্যরা রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার আরজো গ্রামের আরবিবি ইটভাটায় রক্ষিত মাটি, পাশের এলাকার শ্যামরাই মন্দিরের কাছের মাটি ও পীরগঞ্জ উপজেলার নানাহার পুকুর পাড়ের এবং আশপাশ এলাকার মাটির নমুনা সংগ্রহ করেন।

গবেষক দলের সদস্য আনোয়ার সাদাৎ মুহাম্মদ সায়েম বলেন, ওই এলাকার তিনটি স্থানের মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছি এবং চোখে দেখে এ মাটি পরীক্ষা করছি আমরা। এরপর এ মাটির নমুনা প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরিতে জমা দেব পরীক্ষার জন্য।

সংগৃহীত মাটিতে খনিজ সম্পদের (স্বর্ণ) অস্তিত্ব আছে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এটি ভূতাত্ত্বিকভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানের বিষয়। সেই হিসেবে এ মাটিতে সোনা থাকার সম্ভাবনা নেই। তবে প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে গুপ্তধন আকারে দেশের যে কোনো স্থানে স্বর্ণ ইত্যাদি থাকতে পারে।

গত কয়েক মাস ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার গ্রামের একটি ইটভাটার মাটির স্তূপ খুঁড়ে সোনা খুঁজতে রাতদিন এক করে ফেলেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। ইটভাটার সেই মাটি কাটতে গিয়ে শ্রমিকেরা সোনা পেয়েছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে কোদাল, খুনতি, শাবল, বসিলা নিয়ে সেখানে গ্রামবাসীরা সোনা খুঁজতে নামে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তাতে ভিড় কমেছে, কিন্তু আলোচনা থামেনি।

ইউএনও রকিবুল হাসান বলেন, প্রথম দিকে অল্প কিছু লোক ছিল, ধীরে ধীরে গত ৫-৭ দিন ধরে অনেক বেশি লোক আসতে থাকে। পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি, নিয়ন্ত্রণেই ছিল, আমরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম, কিন্তু পরে দেখলাম এত বেশি লোক জমে যাচ্ছে ওটা ব্যবসাক্ষেত্র হয়ে যাচ্ছে।

১৪৪ ধারা জারির পর অবশ্য পরিস্থিতি পুরোপুরি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরো ইটভাটা সকাল থেকে ফাঁকা, আর কোনো লোককেও আসতে দেওয়া হয়নি সেখানে। ওই জায়গাটিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটা দল আসে। তারা মাটি পরীক্ষা করে দেখে সেখানে খনি বা এরকম কিছু নেই।

ইউএনও বলেন, মাটিটা যে জায়গায় খনন করা হয়েছে সেটা কিন্তু একটা ধানখেত; কিন্তু আগে এটা হিন্দুদের মন্দিরের নিকটবর্তী কোনো মেলার জায়গা হয়ে থাকতে পারে। ধারণা করা হয় ব্রিটিশ পিরিয়ডে পূজার সময় এখানে হয়তো অনেকে মানত করে কিছু দান করতে পারে।

তিনি বলেন, এখানকার কংকনাথ জমিদারবাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করে এখানে আনা হয়। সেজন্য মানুষের ধারণা যে তাদের পুঁতে রাখা গুপ্তধন এই মাটিতে থাকতে পারে। কয়েকটা জায়গা থেকে ইট তৈরির জন্য কাঁচামাল হিসেবে এই ভাটায় মাটি আনা হয়।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

ঠাকুরগাঁওয়ে সেই ‘সোনার খনির’ মাটি পরীক্ষা করছে ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তর

আপডেট সময় ১০:৫৫:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

বহুল আলোচিত ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার কথিত সেই সোনার খনির মাটি পরীক্ষায় নেমেছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রতিষ্ঠান ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের একদল গবেষক।

মঙ্গলবার থেকে গবেষক দলের সদস্য, ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনোয়ার সাদাৎ মুহাম্মদ সায়েম ও সহকারী পরিচালক (ভূতত্ত্ব) মোহাম্মদ আল রাজী রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রকিবুল হাসান ও বাচোর ইউপি চেয়ারম্যান জীতেন্দ্রনাথ বর্মণকে সঙ্গে নিয়ে মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করেছেন।

সেখানকার মাটি পরীক্ষা–নিরীক্ষাকালে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা সঙ্গ দিচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাণীশংকৈলের ইউএনও রকিবুল হাসান।

গবেষক দলের সদস্যরা রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার আরজো গ্রামের আরবিবি ইটভাটায় রক্ষিত মাটি, পাশের এলাকার শ্যামরাই মন্দিরের কাছের মাটি ও পীরগঞ্জ উপজেলার নানাহার পুকুর পাড়ের এবং আশপাশ এলাকার মাটির নমুনা সংগ্রহ করেন।

গবেষক দলের সদস্য আনোয়ার সাদাৎ মুহাম্মদ সায়েম বলেন, ওই এলাকার তিনটি স্থানের মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছি এবং চোখে দেখে এ মাটি পরীক্ষা করছি আমরা। এরপর এ মাটির নমুনা প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরিতে জমা দেব পরীক্ষার জন্য।

সংগৃহীত মাটিতে খনিজ সম্পদের (স্বর্ণ) অস্তিত্ব আছে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এটি ভূতাত্ত্বিকভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানের বিষয়। সেই হিসেবে এ মাটিতে সোনা থাকার সম্ভাবনা নেই। তবে প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে গুপ্তধন আকারে দেশের যে কোনো স্থানে স্বর্ণ ইত্যাদি থাকতে পারে।

গত কয়েক মাস ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার গ্রামের একটি ইটভাটার মাটির স্তূপ খুঁড়ে সোনা খুঁজতে রাতদিন এক করে ফেলেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। ইটভাটার সেই মাটি কাটতে গিয়ে শ্রমিকেরা সোনা পেয়েছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে কোদাল, খুনতি, শাবল, বসিলা নিয়ে সেখানে গ্রামবাসীরা সোনা খুঁজতে নামে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তাতে ভিড় কমেছে, কিন্তু আলোচনা থামেনি।

ইউএনও রকিবুল হাসান বলেন, প্রথম দিকে অল্প কিছু লোক ছিল, ধীরে ধীরে গত ৫-৭ দিন ধরে অনেক বেশি লোক আসতে থাকে। পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি, নিয়ন্ত্রণেই ছিল, আমরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম, কিন্তু পরে দেখলাম এত বেশি লোক জমে যাচ্ছে ওটা ব্যবসাক্ষেত্র হয়ে যাচ্ছে।

১৪৪ ধারা জারির পর অবশ্য পরিস্থিতি পুরোপুরি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরো ইটভাটা সকাল থেকে ফাঁকা, আর কোনো লোককেও আসতে দেওয়া হয়নি সেখানে। ওই জায়গাটিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটা দল আসে। তারা মাটি পরীক্ষা করে দেখে সেখানে খনি বা এরকম কিছু নেই।

ইউএনও বলেন, মাটিটা যে জায়গায় খনন করা হয়েছে সেটা কিন্তু একটা ধানখেত; কিন্তু আগে এটা হিন্দুদের মন্দিরের নিকটবর্তী কোনো মেলার জায়গা হয়ে থাকতে পারে। ধারণা করা হয় ব্রিটিশ পিরিয়ডে পূজার সময় এখানে হয়তো অনেকে মানত করে কিছু দান করতে পারে।

তিনি বলেন, এখানকার কংকনাথ জমিদারবাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করে এখানে আনা হয়। সেজন্য মানুষের ধারণা যে তাদের পুঁতে রাখা গুপ্তধন এই মাটিতে থাকতে পারে। কয়েকটা জায়গা থেকে ইট তৈরির জন্য কাঁচামাল হিসেবে এই ভাটায় মাটি আনা হয়।