ঢাকা ০৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ বোরহানউদ্দিনে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হলেন বিখ্যাত আইটি বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন দক্ষিণ মুগদা থানা ৭১ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সংস্কারের বৈধতা আমরা দিতে পারব না: ফখরুল জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে পদক্ষেপের কথা জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেফতার কোনো দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে মাঠে নামিনি: সিইসি আনিসুল হক আরেক মামলায় গ্রেফতার চান্দিনায় মারুতির পেছনে বাসের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু,অন্তঃসত্ত্বা মা সহ আহত ৩

সত্যিই নুহ নবীর নৌকার সন্ধান পাওয়া গেছে?

হজরত নুহ (আ.)-এর নৌকার গল্পকে সবচেয়ে বেশি চর্চিত ধর্মীয় গল্পগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, এই গল্প শোনেননি, এমন লোক পৃথিবীতে খুব কমই আছেন। সেমেটিক ধর্মবিশ্বাসীদের মতে, নুহ বা নোয়াহ ছিলেন একজন নবী, যাকে সৃষ্টিকর্তা পাঠিয়েছিলেন মানবজাতির পথপ্রদর্শক হিসেবে। ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মকে সেমেটিক ধর্ম বলা হয়।

এসব ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন যে, সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে নুহ এমন একটি নৌকা বানিয়েছিলেন, মহাপ্লাবনের সময় যেটিতে আশ্রয় নিয়ে মানুষ ও পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণিকুল নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করেছিল। কিন্তু মহাপ্লাবনের পর বিশাল আকৃতির সেই নৌকার পরিণতি ঠিক কী হয়েছিল? সেটির অস্তিত্ব কি এখনো টিকে আছে? যদি টিকে থাকে, তা হলে নৌকাটি ঠিক কোথায় রয়েছে?— এমন নানান প্রশ্ন শত শত বছর ধরে মানুষের মনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।

এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে অনুসন্ধানও কম চালানো হয়নি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধান চালানো হয়েছে তুরস্কের আরারাত পর্বতে, যেটির উচ্চতা পাঁচ হাজার মিটারেরও বেশি। কারণ মহাপ্লাবনের পর এই পর্বতেই নুহের নৌকা নোঙর ফেলেছিল বলে খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় সেখানে নুহের নৌকা খুঁজে পাওয়ার দাবিও করেছেন অনেকে। যদিও তাদের কেউই নিজেদের দাবির পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

তবে সম্প্রতি গবেষকদের একটি দল দাবি করেছে যে, তুরস্কের আরারাত পর্বতে অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগের বিশাল একটি নৌকার ‘ধ্বংসাবশেষ’ খুঁজে পেয়েছেন। এটি নুহের নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই ধারণা করছেন তারা। আরারাত পর্বতের দুরুপিনার সাইটে খননকাজ চালিয়ে অন্তত পাঁচ হাজার বছরের পুরনো বিশাল আকৃতির একটি নৌকার ‘ধ্বংসাবশেষ’ খুঁজে পেয়েছেন বলে সম্প্রতি দাবি করেছে প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি দল। এটি নুহের নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই ধারণা করছেন তারা।

পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে নমুনাগুলোর মধ্যে কয়েক হাজার বছরের পুরনো কাদামাটির উপকরণ, সামুদ্রিক উপকরণ ও সামুদ্রিক খাবারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ‘এটি থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০০ থেকে ৩০০০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে মানুষের বসবাস ছিল। ‘সম্প্রতি তুরস্কের গণমাধ্যম হুরিয়েতকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক ফারুক কায়া। ‘প্রাথমিকভাবে এটি নুহের নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই মনে হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

তবে আসলেই সেটি নুহের নৌকা কিনা, সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও অনেক দিন গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ‘প্রাথমিক ফলের ওপর ভিত্তি করে এটি জোর দিয়ে বলা যাবে না যে, নৌকাটি এখানেই রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের আরও অনেক দিন কাজ চালিয়ে যেতে হবে,’ বলেন অধ্যাপক কায়া।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ

সত্যিই নুহ নবীর নৌকার সন্ধান পাওয়া গেছে?

আপডেট সময় ১২:০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

হজরত নুহ (আ.)-এর নৌকার গল্পকে সবচেয়ে বেশি চর্চিত ধর্মীয় গল্পগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, এই গল্প শোনেননি, এমন লোক পৃথিবীতে খুব কমই আছেন। সেমেটিক ধর্মবিশ্বাসীদের মতে, নুহ বা নোয়াহ ছিলেন একজন নবী, যাকে সৃষ্টিকর্তা পাঠিয়েছিলেন মানবজাতির পথপ্রদর্শক হিসেবে। ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মকে সেমেটিক ধর্ম বলা হয়।

এসব ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন যে, সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে নুহ এমন একটি নৌকা বানিয়েছিলেন, মহাপ্লাবনের সময় যেটিতে আশ্রয় নিয়ে মানুষ ও পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণিকুল নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করেছিল। কিন্তু মহাপ্লাবনের পর বিশাল আকৃতির সেই নৌকার পরিণতি ঠিক কী হয়েছিল? সেটির অস্তিত্ব কি এখনো টিকে আছে? যদি টিকে থাকে, তা হলে নৌকাটি ঠিক কোথায় রয়েছে?— এমন নানান প্রশ্ন শত শত বছর ধরে মানুষের মনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।

এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে অনুসন্ধানও কম চালানো হয়নি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধান চালানো হয়েছে তুরস্কের আরারাত পর্বতে, যেটির উচ্চতা পাঁচ হাজার মিটারেরও বেশি। কারণ মহাপ্লাবনের পর এই পর্বতেই নুহের নৌকা নোঙর ফেলেছিল বলে খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় সেখানে নুহের নৌকা খুঁজে পাওয়ার দাবিও করেছেন অনেকে। যদিও তাদের কেউই নিজেদের দাবির পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

তবে সম্প্রতি গবেষকদের একটি দল দাবি করেছে যে, তুরস্কের আরারাত পর্বতে অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগের বিশাল একটি নৌকার ‘ধ্বংসাবশেষ’ খুঁজে পেয়েছেন। এটি নুহের নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই ধারণা করছেন তারা। আরারাত পর্বতের দুরুপিনার সাইটে খননকাজ চালিয়ে অন্তত পাঁচ হাজার বছরের পুরনো বিশাল আকৃতির একটি নৌকার ‘ধ্বংসাবশেষ’ খুঁজে পেয়েছেন বলে সম্প্রতি দাবি করেছে প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি দল। এটি নুহের নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই ধারণা করছেন তারা।

পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে নমুনাগুলোর মধ্যে কয়েক হাজার বছরের পুরনো কাদামাটির উপকরণ, সামুদ্রিক উপকরণ ও সামুদ্রিক খাবারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ‘এটি থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০০ থেকে ৩০০০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে মানুষের বসবাস ছিল। ‘সম্প্রতি তুরস্কের গণমাধ্যম হুরিয়েতকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক ফারুক কায়া। ‘প্রাথমিকভাবে এটি নুহের নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই মনে হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

তবে আসলেই সেটি নুহের নৌকা কিনা, সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও অনেক দিন গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ‘প্রাথমিক ফলের ওপর ভিত্তি করে এটি জোর দিয়ে বলা যাবে না যে, নৌকাটি এখানেই রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের আরও অনেক দিন কাজ চালিয়ে যেতে হবে,’ বলেন অধ্যাপক কায়া।