ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়া স্মৃতি পদক পেলেন জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজশাহী জেলার সদস্য সচিব গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন জরুরি : যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তাঁতীলীগের সভাপতি ইকবালের যত কান্ড, জনমনে প্রশ্ন কে এই ইকবাল? সিএমপির পাহাড়তলী থানার মাদক বিরোধী অভিযানে ভুয়া সাংবাদিক ফারুক মাদকসহ গ্রেফতার অন্তর্বতী সরকারের ১শ দিন পার হলেও সচিবালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের এখনও আওয়ামী লীগের দোসরা বহাল পূর্বাচলে দুর্নীতির রাজত্ব গড়েছেন নায়েব আলী শরীফ ডঃ মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ নবীনবরণ উৎসব ২০২৪ পালিত। মুগদায় ১০ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

দিনে চিনির ঘাটতি দেড় হাজার টন

আমদানি করা অপরিশোধিত চিনি পর্যাপ্ত মজুত আছে। কিন্তু গ্যাসের সমস্যার কারণে এটি পরিশোধন করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন গড়ে দেশে চিনির চাহিদা ৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু এখন উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন। ফলে দিনে চিনির ঘাটতি হচ্ছে দেড় হাজার টন। আর চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকায় চিনির দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে চিনির সরবরাহ এবং মূল‍্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ‍্যে চিনির মিল মালিক, রিফাইনারি, পাইকারি এবং খুচরা ব‍্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় সফিকুজ্জামান এ তথ্য জানানো হয়।

তিনি জানান, বাজার স্থিতিশীল করতে মিল মালিক, রিফাইনারি, পাইকারি এবং খুচরা ব‍্যবসায়ীদের মঙ্গে একটি মতবিনিময় করছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা পেলাম।

সফিকুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন চিনির কোনো ঘাটতি নেই। এখন পর্যন্ত যে চিনি মজুত আছে তা দিয়ে অন্তত তিন মাস চলা যাবে। তবে সমস্যা হচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে অপরিশোধিত চিনি পরিশোধন করা যাচ্ছে না। তাই উৎপাদন ও চাহিদার ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আলোচনা করে সমস্যা চিহ্নিত করেছি। আশা করছি খুব শিগগিরই চিনি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে

আমাদের যে সমস্যা হবে এ ধরনের তথ্য কিন্তু আগে থেকেই দেওয়া হয়েছে। বাস্তবতা বুঝতে হবে। আমরা সমস্যার মধ্যে আছি, শুধু আমরা না সারা বিশ্বই সমস্যায় আছে। তবে আমরা কতটুকু মোকাবিলা করতে পারবো সেটা নির্ধারণ করতে হবে।

সফিকুজ্জামান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে সরকার বেশ তৎপর আছে। আজকেও চিনিসহ নিত্যপণ্যের বিষয়ে  প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর সভাপতিত্বে একটি সভা হয়েছে। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানানো হয়, বর্তমানে চিনির মিল, রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যে এক লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনি মজুত রয়েছে, তা আগামী দুই দিনের মধ্যে বাজারে সরবরাহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি খুব শিগগিরই বাজার সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি অজুহাতে হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দেশের চিনির বাজার। সংক‌টের কথা ব‌লে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চি‌নি। অ‌নেক এলাকায় প্যাকেটের চিনি উধাও হ‌য়ে গে‌ছে। ‌ত‌বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বল‌ছে চা‌হিদা অনুযায়ী দে‌শে পর্যাপ্ত চি‌নি আমদানি হ‌য়ে‌ছে, সংকট হওয়ার কো‌নো কারণ নেই।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংকটের কথা বলে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে খোলা চিনির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি অনেক এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতারা বলছেন, জনগণকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা খেলায় মেতেছেন। তারা সরকারের কোনো নিয়ম-নীতি মানছেন না। নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। আর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন কমেছে। যে কারণে বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর বেশির ভাগ দোকানে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ কিংবা তিনদিন আগের কেনা চিনি কিছু কিছু দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজিতে। বাজার ও দোকানগুলোতে প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। এই দোকানগুলোতে এক সপ্তাহ আগেও চিনি বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা কেজিতে। আর প্যাকেটজাত চিনি ছিল ৯৫ টাকা কেজি।

গত ৬ অক্টোবর সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খোলা চিনি ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু তা বাস্তবে কার্যকর হয়নি। বরং এখন উল্টো দাম বাড়ছে।

বর্তমানে দেশে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। যার সিংহভাই আমদানি কর‌তে হয়। বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দে‌শে ১৭ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করা হয়েছিল। চল‌তি ২০২২ সালের ইতিমধ্যে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি সম্পূর্ণ হয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাং‌কের পাঠা‌নো ‌বিজ্ঞ‌প্তি‌তে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় এ বছর চিনি সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। শিগগিরই আরো ১ লাখ টন চিনি আমদানি করা হচ্ছে। একটু তদারকি করলে চিনির বাজার স্বাভাবিক হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল

দিনে চিনির ঘাটতি দেড় হাজার টন

আপডেট সময় ০২:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

আমদানি করা অপরিশোধিত চিনি পর্যাপ্ত মজুত আছে। কিন্তু গ্যাসের সমস্যার কারণে এটি পরিশোধন করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন গড়ে দেশে চিনির চাহিদা ৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু এখন উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন। ফলে দিনে চিনির ঘাটতি হচ্ছে দেড় হাজার টন। আর চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকায় চিনির দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে চিনির সরবরাহ এবং মূল‍্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ‍্যে চিনির মিল মালিক, রিফাইনারি, পাইকারি এবং খুচরা ব‍্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় সফিকুজ্জামান এ তথ্য জানানো হয়।

তিনি জানান, বাজার স্থিতিশীল করতে মিল মালিক, রিফাইনারি, পাইকারি এবং খুচরা ব‍্যবসায়ীদের মঙ্গে একটি মতবিনিময় করছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা পেলাম।

সফিকুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন চিনির কোনো ঘাটতি নেই। এখন পর্যন্ত যে চিনি মজুত আছে তা দিয়ে অন্তত তিন মাস চলা যাবে। তবে সমস্যা হচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে অপরিশোধিত চিনি পরিশোধন করা যাচ্ছে না। তাই উৎপাদন ও চাহিদার ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আলোচনা করে সমস্যা চিহ্নিত করেছি। আশা করছি খুব শিগগিরই চিনি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে

আমাদের যে সমস্যা হবে এ ধরনের তথ্য কিন্তু আগে থেকেই দেওয়া হয়েছে। বাস্তবতা বুঝতে হবে। আমরা সমস্যার মধ্যে আছি, শুধু আমরা না সারা বিশ্বই সমস্যায় আছে। তবে আমরা কতটুকু মোকাবিলা করতে পারবো সেটা নির্ধারণ করতে হবে।

সফিকুজ্জামান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে সরকার বেশ তৎপর আছে। আজকেও চিনিসহ নিত্যপণ্যের বিষয়ে  প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর সভাপতিত্বে একটি সভা হয়েছে। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানানো হয়, বর্তমানে চিনির মিল, রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যে এক লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনি মজুত রয়েছে, তা আগামী দুই দিনের মধ্যে বাজারে সরবরাহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি খুব শিগগিরই বাজার সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি অজুহাতে হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দেশের চিনির বাজার। সংক‌টের কথা ব‌লে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চি‌নি। অ‌নেক এলাকায় প্যাকেটের চিনি উধাও হ‌য়ে গে‌ছে। ‌ত‌বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বল‌ছে চা‌হিদা অনুযায়ী দে‌শে পর্যাপ্ত চি‌নি আমদানি হ‌য়ে‌ছে, সংকট হওয়ার কো‌নো কারণ নেই।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংকটের কথা বলে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে খোলা চিনির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি অনেক এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতারা বলছেন, জনগণকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা খেলায় মেতেছেন। তারা সরকারের কোনো নিয়ম-নীতি মানছেন না। নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। আর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন কমেছে। যে কারণে বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর বেশির ভাগ দোকানে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ কিংবা তিনদিন আগের কেনা চিনি কিছু কিছু দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজিতে। বাজার ও দোকানগুলোতে প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। এই দোকানগুলোতে এক সপ্তাহ আগেও চিনি বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা কেজিতে। আর প্যাকেটজাত চিনি ছিল ৯৫ টাকা কেজি।

গত ৬ অক্টোবর সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খোলা চিনি ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু তা বাস্তবে কার্যকর হয়নি। বরং এখন উল্টো দাম বাড়ছে।

বর্তমানে দেশে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। যার সিংহভাই আমদানি কর‌তে হয়। বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দে‌শে ১৭ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করা হয়েছিল। চল‌তি ২০২২ সালের ইতিমধ্যে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি সম্পূর্ণ হয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাং‌কের পাঠা‌নো ‌বিজ্ঞ‌প্তি‌তে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় এ বছর চিনি সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। শিগগিরই আরো ১ লাখ টন চিনি আমদানি করা হচ্ছে। একটু তদারকি করলে চিনির বাজার স্বাভাবিক হবে।