ঢাকা ০৬:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এজেন্ট না দেওয়ায় কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল পাননি হিরো আলম : রাশেদা

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ফল পাল্টানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা বলেছেন, এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। 

তিনি বলেন, হিরো আলমের এজেন্টকে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল না দেওয়ার যে অভিযোগটি করা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তিনি নন্দিগ্রামে এজেন্ট দেননি। বগুড়ার ডিসি আমাকে বলেছেন, তিনি নিজে অনেক কেন্দ্র ভিজিট করেছেন। সেসব জায়গায় হিরো আলমের কোনো এজেন্ট পাননি। কাহালুতে তার কিছু এজেন্ট ছিল। সেখানে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট নেই বা রেজাল্ট দেওয়া হয়নি এমন কোনো অভিযোগ নেই।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা।

তিনি বলেন, পত্রিকায় যেটুকু দেখেছি হিরো আলম ভোট নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। একটু অসন্তুষ্ট হয়েছেন। গণমাধ্যমে বিষয়টি আসার পর আমরা সকাল থেকে বিষয়টি নিয়ে রেকি করার চেষ্টা করেছি। বগুড়ার ডিসি, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার, টিএনও সাহেবের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সিইসি নিজে কথা বলেছেন। ডিসি সাহেব আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, রেজাল্ট হান্ড্রেড পারসেন্ট সঠিক।

আর কোনো তদন্তে যাবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কাছে যে রেজাল্ট শিট আছে, আমরা নিজেরাও একটু ক্যালকুলেট করে দেখলাম যে, কোথাও কোনো ব্যত্যয় নেই। আমাদের দেশের কালচারটা কিন্তু এ রকমই। একজন প্রার্থী যখন হেরে যায় তখন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা দেখা যায়। শুধু হিরো আলম সাহেব না, আমরা যতগুলো নির্বাচন করলাম সব জায়গাতে এই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করেছি।

তিনি (হিরো আলম) হেরে গেছেন, তার কষ্ট হয়েছে। কষ্ট নানানভাবে প্রকাশ করছেন। তিনি এটা করতেই পারেন। একজন মানুষ বললেই তো আর সেটা হয়ে যায় না। প্রমাণ তো থাকতে হবে।

ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। আমরা যেটি পেয়েছি সেটি বেসরকারিভাবে।

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকেই মুখে বলে ঝড় তোলে কিন্তু প্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে আসে না। আমাদের সময়ে যত নির্বাচন হয়েছে তারা কেউ আদালতে গেছে বলে আমার তো জানা নেই। কুমিল্লা (কুমিল্লা সিটি করপোরেশন) নিয়ে এতো কথা হলো। কই তারা তো আদালতে গেলেন না। তিনি (হিরো আলম) বলেছেন যাবেন, গেলে যাবেন। আমি তো অনেক কথাই মুখে বলতে পারি। তা প্রমাণ তো হতে হবে। অভিযোগ দেওয়া আর অভিযোগ প্রমাণ করা দুটার মধ্যে কিন্তু অনেক ফারাক।

ইভিএমের ভোটে রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর কিন্তু অনেক কাজ থাকে। চারটা, পাঁচটা রেজাল্ট শিট তৈরি করতে হয়। সবগুলো যখন কম্পাইল্ড করতে যায় তখন বারবার ক্রস চেক করতে হয়। তা না হলে হুট করে যদি একটা ভুল হয়ে যায়, ভুল হতেই পারে। এজন্য মিলাতে সময় লেগে যায়। সবগুলো মিলিয়ে প্রস্তুত করতে সময় লেগে যায়। আর একটা জিনিস আমি বলব, সব মানুষের এক ধরনের ক্যাপাসিটি থাকে না। নতুনদের কাজগুলো রপ্ত করতে সময় লাগে। সবাই হান্ড্রেড পারসেন্ট দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারবে এটা আশা করা যায় না।

সিসি ক্যামেরা না থাকার কারণে ভোট পর্যবেক্ষণে সমস্যা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা থাকলে অবশ্যই ভালো হয়। সিসি ক্যামেরা থাকলে আমরা নিজের চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি। আমি মনে করি, সিসি ক্যামেরা থাকলে আরও অনেক বেশি স্বচ্ছভাবে কাজ করা সহজ হয়। এটি বলতে কোনো দ্বিধা নেই।

বগুড়ার নির্বাচন আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য নেতিবাচক বার্তা বহন করবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না। আমি সবসময় নিজের ভেতর যদি নেতিবাচকটা খুঁজে বের করি তাহলে কিন্তু আমার জন্য সবকিছু নেতিবাচক। আর আমি যদি পজিটিভ চিন্তা করি, তাহলে আমি কিন্তু নেতিবাচক কিছু দেখব না।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এজেন্ট না দেওয়ায় কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল পাননি হিরো আলম : রাশেদা

আপডেট সময় ০৬:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ফল পাল্টানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা বলেছেন, এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। 

তিনি বলেন, হিরো আলমের এজেন্টকে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল না দেওয়ার যে অভিযোগটি করা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তিনি নন্দিগ্রামে এজেন্ট দেননি। বগুড়ার ডিসি আমাকে বলেছেন, তিনি নিজে অনেক কেন্দ্র ভিজিট করেছেন। সেসব জায়গায় হিরো আলমের কোনো এজেন্ট পাননি। কাহালুতে তার কিছু এজেন্ট ছিল। সেখানে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট নেই বা রেজাল্ট দেওয়া হয়নি এমন কোনো অভিযোগ নেই।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা।

তিনি বলেন, পত্রিকায় যেটুকু দেখেছি হিরো আলম ভোট নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। একটু অসন্তুষ্ট হয়েছেন। গণমাধ্যমে বিষয়টি আসার পর আমরা সকাল থেকে বিষয়টি নিয়ে রেকি করার চেষ্টা করেছি। বগুড়ার ডিসি, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার, টিএনও সাহেবের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সিইসি নিজে কথা বলেছেন। ডিসি সাহেব আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, রেজাল্ট হান্ড্রেড পারসেন্ট সঠিক।

আর কোনো তদন্তে যাবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কাছে যে রেজাল্ট শিট আছে, আমরা নিজেরাও একটু ক্যালকুলেট করে দেখলাম যে, কোথাও কোনো ব্যত্যয় নেই। আমাদের দেশের কালচারটা কিন্তু এ রকমই। একজন প্রার্থী যখন হেরে যায় তখন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা দেখা যায়। শুধু হিরো আলম সাহেব না, আমরা যতগুলো নির্বাচন করলাম সব জায়গাতে এই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করেছি।

তিনি (হিরো আলম) হেরে গেছেন, তার কষ্ট হয়েছে। কষ্ট নানানভাবে প্রকাশ করছেন। তিনি এটা করতেই পারেন। একজন মানুষ বললেই তো আর সেটা হয়ে যায় না। প্রমাণ তো থাকতে হবে।

ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। আমরা যেটি পেয়েছি সেটি বেসরকারিভাবে।

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকেই মুখে বলে ঝড় তোলে কিন্তু প্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে আসে না। আমাদের সময়ে যত নির্বাচন হয়েছে তারা কেউ আদালতে গেছে বলে আমার তো জানা নেই। কুমিল্লা (কুমিল্লা সিটি করপোরেশন) নিয়ে এতো কথা হলো। কই তারা তো আদালতে গেলেন না। তিনি (হিরো আলম) বলেছেন যাবেন, গেলে যাবেন। আমি তো অনেক কথাই মুখে বলতে পারি। তা প্রমাণ তো হতে হবে। অভিযোগ দেওয়া আর অভিযোগ প্রমাণ করা দুটার মধ্যে কিন্তু অনেক ফারাক।

ইভিএমের ভোটে রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর কিন্তু অনেক কাজ থাকে। চারটা, পাঁচটা রেজাল্ট শিট তৈরি করতে হয়। সবগুলো যখন কম্পাইল্ড করতে যায় তখন বারবার ক্রস চেক করতে হয়। তা না হলে হুট করে যদি একটা ভুল হয়ে যায়, ভুল হতেই পারে। এজন্য মিলাতে সময় লেগে যায়। সবগুলো মিলিয়ে প্রস্তুত করতে সময় লেগে যায়। আর একটা জিনিস আমি বলব, সব মানুষের এক ধরনের ক্যাপাসিটি থাকে না। নতুনদের কাজগুলো রপ্ত করতে সময় লাগে। সবাই হান্ড্রেড পারসেন্ট দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারবে এটা আশা করা যায় না।

সিসি ক্যামেরা না থাকার কারণে ভোট পর্যবেক্ষণে সমস্যা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা থাকলে অবশ্যই ভালো হয়। সিসি ক্যামেরা থাকলে আমরা নিজের চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি। আমি মনে করি, সিসি ক্যামেরা থাকলে আরও অনেক বেশি স্বচ্ছভাবে কাজ করা সহজ হয়। এটি বলতে কোনো দ্বিধা নেই।

বগুড়ার নির্বাচন আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য নেতিবাচক বার্তা বহন করবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না। আমি সবসময় নিজের ভেতর যদি নেতিবাচকটা খুঁজে বের করি তাহলে কিন্তু আমার জন্য সবকিছু নেতিবাচক। আর আমি যদি পজিটিভ চিন্তা করি, তাহলে আমি কিন্তু নেতিবাচক কিছু দেখব না।