মা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নতুন জীবন। আর সেইসঙ্গে চলে আসে নতুন দায়িত্ব। কর্মজীবী মা হলে তো কোনো কথাই নেই। দায়িত্ব বেড়ে যায় অনেক বেশি। কিন্তু পৃথিবীতে একটি নতুন জীবন নিয়ে আসতে পারার শক্তি যখন একবার অনুভব করতে পারেন, তখন বাকি সবকিছু আপনার কাছে অনেকটাই হালকা হয়ে যায়।
মাতৃত্বকালীন ছুটি খুবই অল্প সময়ের জন্য থাকে। ছুটি শেষ হয়ে আসতে শুরু হলেই মায়েদের মন কেমন করা শুরু হয়ে যায়। কারণ কেউই তাদের সন্তানদের থেকে দূরে থাকতে চায় না। আবার সন্তানকে বাড়িতে রেখে বাইরে যাওয়ার কারণে এক ধরণের অপরাধবোধও কাজ করে। কিন্তু অনেক মা-ই এই কাজ খুব সুন্দরভাবে পালন করে আসছেন। এর জন্য রয়েছে বেশ কিছু সহজ টিপস যার মাধ্যমে খুব সহজেই নতুন মাতৃত্ব এবং কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, নতুন মা হলে কর্মজীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার ৬টি সহজ টিপস-
একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করুন
পরিবারের সব সদস্যের একটি পারিবারিক ক্যালেন্ডার তৈরি করুন। তাদের কাজের সময়সূচী ও অ্যাপোয়েন্টমেন্ট এক জায়গায় থাকা দরকার। সবকিছু একটি ডায়েরিতে রাখলে কাজ সহজ হবে। এর মাধ্যমে আপনি পরিবারের সদস্যদের সপ্তাহে কখন কী কাজ আছে জানতে পারবেন। যার ফলে আপনার শিশুর দেখাশোনা এবং ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক সময় মতো করাতে পারবেন।
কেয়ার-গিভারদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন
যে কেউ-ই একটি শিশুর কেয়ার-গিভার হতে পারে। হতে পারে বাড়ির হাউস-হেল্প, আয়া বা নিজের দাদী-নানী। এই ব্যক্তিরাই মূলত আপনার শিশুর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় কাটায়। তাই তাদের সঙ্গে বিশ্বাস এবং সততার একটি সম্পর্ক থাকা দরকার। শিশুদের জন্য আয়া নিতে চাইলে সবসময় তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে নিতে হবে। তাদের কাজে নেয়ার সময়ই কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা দিয়ে দিতে হবে।
রুটিন ঠিক রাখুন
আপনার দিন এবং রাতের রুটিন ঠিক রাখুন। শিশুরাও রুটিনের মধ্যে থাকতে ভালোবাসে। যতটা সম্ভব রুটিনে সবকিছু ঠিকভাবে সাজিয়ে রাখুন যেন কোনো কিছু মিস না হয়ে যায়।
কর্মক্ষেত্রে সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন
কর্মক্ষেত্রে সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করুন। অফিসে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়, অসুস্থতা, ছুটির বিষয়গুলো জানিয়ে রাখুন। আপনার অ্যাপোয়েন্টমেন্টগুলোও জানিয়ে রাখতে পারেন। এটি আপনাকে স্ট্রেসমুক্ত রাখবে।
খাবারের পরিকল্পনা করে রাখুন
সকাল, দুপুর এবং রাতে কী খাবেন সবকিছু আগেই ঠিক করে রাখুন। কর্মজীবী নারীর জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাসায় যারা রান্না করবেন তাদের আগে থেকেই জানিয়ে রাখলে দিনের শুরুতে এটি নিয়ে আর ভাবতে হয় না। চাইলে একবারে পুরো সপ্তাহের খাবারের তালিকা ঠিক করে রাখতে পারেন। যার ফলে বাজার করার ক্ষেত্রেও ঝামেলা কম হবে।
নিজের যত্ন রাখুন
অনেকেই এই সময়ে নিজের খেয়াল রাখতে চান না। কিন্তু এই সময়ে নিজের খেয়াল রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য নিজের জন্য সপ্তাহে কিছু সময় বের করে নিন, যে সময়গুলোতে আপনি পছন্দের কাজগুলো করতে পারবেন। যেমন গান শোনা, ছবি আঁকা ইত্যাদি করতে পারেন। এইগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখবে।