ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

গণপূর্তের স্টাফ অফিসার মাহফুজ আলমের দুর্নীতির গড়া অঢেল সম্পদ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় ০৭:১৬:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৫১৩ বার পড়া হয়েছে

ন্যূনতম স্টাফ অফিসার হয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর (প্রটোকল ও প্রশাসন) স্টাফ অফিসার প্রকৌশলী মাহফুজুল আলমের বিরুদ্ধে।
একই পদে একই দপ্তরে এক দশক: অধিদপ্তরের প্রকৌশলী/নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর একাধিকবার বদল হলেও প্রায় এক দশক ধরে একই চেয়ার আঁকড়ে আছেন স্টাফ অফিসার মাহফুজুল। অথচ বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস-(১) এর বিধানমতে একই পদে ৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার অব্যবহিত পূর্বেই মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও উহার অধীনস্থ দপ্তর/পরিদপ্তসমূহের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে নতুন পদে/স্থানে বদলি করার কথা বলা আছে। কিন্তু স্টাফ অফিসার মাহফুজুল নির্বাহী প্রকৌশলীর পদমর্যাদা হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখন স্টাফ অফিসার হিসেবে কাজ করছেন।

সিন্ডিকেট তৈরি: প্রকৌশলী মাহফুজুল আলম একই পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করায় অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদার ও তদবিরবাজদের সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে উঠেছে মাহফুজুলের। একই সাথে গড়ে উঠেছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট। প্রধান প্রকৌশলীর সাক্ষাৎ বিনিময়সহ সকল দেন-দরবারের শিডিউল এই সিন্ডিকেটকে কেন্দ্র করেই তৈরি করেন তিনি। তার সিন্ডিকেটের বাইরের কোন ব্যক্তিকে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পর্যন্ত তিনি দেন না। কমিশনের বিনিময়ে এই সিন্ডিকেটকে তিনি ‘বিশেষ সুবিধা’ আদায় করে দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেয়া, দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীদের পদোন্নতি, বদলি, প্রকল্প পাইয়ে দেয়ার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবেও নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা।

দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি: ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১২ সালের ৬ মার্চ একনেকে অনুমোদিত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৭৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অথচ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি আজও। মাঝে কেটে গেছে এক যুগ, ব্যয় হয়েছে ৬৮২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৮৮ কোটি টাকা। এখন ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসও শেষ প্রায়। অথচ প্রকল্প শেষ হওয়ার নাম নেই। এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠলে ২০২১ সালে প্রকৌশলী মাহফুজ আলমসহ একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি শাস্তির আওতায় আছেন। পরবর্তীতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেন বলে জানান নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা। এদিকে ঠিকাদাররাও অভিযোগ করেন নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে ঠিকাদারদের। সর্বশেষ মেডিকেল কলেজের পুরাতন। বিল ছাড় করার জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়ারও অভিযোগ উঠে। সব অভিযোগেরই তীর প্রকৌশলী মাহফুজুল আলমের দিকে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মারুফ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর আমি বহির্বিভাগে কাজ করা শুরু করে দিয়েছি। হাসপাতালের আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি) এবং মেডিসিন (পুরুষ ও মহিলা) বিভাগ ও শিশু বিভাগ স্বল্প পরিসরে গেল বছর চালু করা হয়। কারণ কুষ্টিয়াবাসীর আশা- আকাঙ্ক্ষা এই হাসপাতালের সাথে জড়িত। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই আমরা বহির্বিভাগে সেবা দেয়া শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত ৮০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রজেক্টে ১৯টি লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও, সম্প্রতি মাত্র ৭টি লিফট স্থাপন করা হয়েছে। তবে কিছু অফিসিয়াল কাজ করার জন্য ভেতরের কয়েকটি কক্ষ ব্যবহার করছি। এখনো প্রকল্পটির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি ফলে হস্তান্তরও করেনি অধিদপ্তর। এই হাসপাতালটির কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে সেবা দেয়ার উপযোগী বানিয়ে হস্তান্তর করা হবে-এমন আশায় অপেক্ষা করছেন বলে প্রতিবেদককে জানান তিনি।
এই অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে প্রকৌশলী মাহফুজুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে ফোন ধরে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনার অভিযোগ হোয়াটসঅ্যাপে লিখিত পাঠান। প্রতিবেদক হোয়াটসঅ্যাপে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন পাঠিয়ে উত্তর দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করেন। তারপর তিনি আর কোন জবাব দেননি এবং প্রতিবেদক একাধিকবার ফোন করলেও সেই ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি অধিদপ্তরে দেখা করতে গেলেও তিনি দেখা দেননি।

একই বিষয় নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আহমেদের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে ফোন ধরেন এবং মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। পরে হোয়াট অ্যাপে তাঁকে স্টাফ অফিসারকে করা প্রশ্নগুলো পাঠিয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি কোন প্রতিউত্তর দেননি। উত্তর জানতে আবারও যোগাযোগ করা হলে, স্টাফ অফিসার আপনাকে জানাবে বলে প্রতিবেদককে জানিয়ে ফোন রেখে দেন।

এই বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, করোনা মহামারি ও রিভিশনে সময় যাওয়ার কারনে প্রজেক্টের মেয়াদ বেড়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়েছি এক বছর হলো। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে পিডাব্লিউডি প্রকল্পটি হস্তান্তর করবে। মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ইন্সটল করে আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে হাহপাতালকে ফুল ফাংশনাল করার চেষ্টায় আছি আমরা। এছাড়াও সময়মতো প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় বেশ কয়েকবার পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। নির্বাচনের আগেই হাসপাতালটি চালুর বিষয়ে তাঁর কড়া নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অজানা কারণে সেই নির্দেশনাও বাস্তবায়ন হয়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

গণপূর্তের স্টাফ অফিসার মাহফুজ আলমের দুর্নীতির গড়া অঢেল সম্পদ

আপডেট সময় ০৭:১৬:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ন্যূনতম স্টাফ অফিসার হয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর (প্রটোকল ও প্রশাসন) স্টাফ অফিসার প্রকৌশলী মাহফুজুল আলমের বিরুদ্ধে।
একই পদে একই দপ্তরে এক দশক: অধিদপ্তরের প্রকৌশলী/নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর একাধিকবার বদল হলেও প্রায় এক দশক ধরে একই চেয়ার আঁকড়ে আছেন স্টাফ অফিসার মাহফুজুল। অথচ বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস-(১) এর বিধানমতে একই পদে ৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার অব্যবহিত পূর্বেই মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও উহার অধীনস্থ দপ্তর/পরিদপ্তসমূহের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে নতুন পদে/স্থানে বদলি করার কথা বলা আছে। কিন্তু স্টাফ অফিসার মাহফুজুল নির্বাহী প্রকৌশলীর পদমর্যাদা হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখন স্টাফ অফিসার হিসেবে কাজ করছেন।

সিন্ডিকেট তৈরি: প্রকৌশলী মাহফুজুল আলম একই পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করায় অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদার ও তদবিরবাজদের সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে উঠেছে মাহফুজুলের। একই সাথে গড়ে উঠেছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট। প্রধান প্রকৌশলীর সাক্ষাৎ বিনিময়সহ সকল দেন-দরবারের শিডিউল এই সিন্ডিকেটকে কেন্দ্র করেই তৈরি করেন তিনি। তার সিন্ডিকেটের বাইরের কোন ব্যক্তিকে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পর্যন্ত তিনি দেন না। কমিশনের বিনিময়ে এই সিন্ডিকেটকে তিনি ‘বিশেষ সুবিধা’ আদায় করে দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেয়া, দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীদের পদোন্নতি, বদলি, প্রকল্প পাইয়ে দেয়ার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবেও নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা।

দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি: ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১২ সালের ৬ মার্চ একনেকে অনুমোদিত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৭৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অথচ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি আজও। মাঝে কেটে গেছে এক যুগ, ব্যয় হয়েছে ৬৮২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৮৮ কোটি টাকা। এখন ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসও শেষ প্রায়। অথচ প্রকল্প শেষ হওয়ার নাম নেই। এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠলে ২০২১ সালে প্রকৌশলী মাহফুজ আলমসহ একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি শাস্তির আওতায় আছেন। পরবর্তীতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেন বলে জানান নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা। এদিকে ঠিকাদাররাও অভিযোগ করেন নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে ঠিকাদারদের। সর্বশেষ মেডিকেল কলেজের পুরাতন। বিল ছাড় করার জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়ারও অভিযোগ উঠে। সব অভিযোগেরই তীর প্রকৌশলী মাহফুজুল আলমের দিকে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মারুফ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর আমি বহির্বিভাগে কাজ করা শুরু করে দিয়েছি। হাসপাতালের আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি) এবং মেডিসিন (পুরুষ ও মহিলা) বিভাগ ও শিশু বিভাগ স্বল্প পরিসরে গেল বছর চালু করা হয়। কারণ কুষ্টিয়াবাসীর আশা- আকাঙ্ক্ষা এই হাসপাতালের সাথে জড়িত। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই আমরা বহির্বিভাগে সেবা দেয়া শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত ৮০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রজেক্টে ১৯টি লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও, সম্প্রতি মাত্র ৭টি লিফট স্থাপন করা হয়েছে। তবে কিছু অফিসিয়াল কাজ করার জন্য ভেতরের কয়েকটি কক্ষ ব্যবহার করছি। এখনো প্রকল্পটির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি ফলে হস্তান্তরও করেনি অধিদপ্তর। এই হাসপাতালটির কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে সেবা দেয়ার উপযোগী বানিয়ে হস্তান্তর করা হবে-এমন আশায় অপেক্ষা করছেন বলে প্রতিবেদককে জানান তিনি।
এই অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে প্রকৌশলী মাহফুজুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে ফোন ধরে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনার অভিযোগ হোয়াটসঅ্যাপে লিখিত পাঠান। প্রতিবেদক হোয়াটসঅ্যাপে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন পাঠিয়ে উত্তর দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করেন। তারপর তিনি আর কোন জবাব দেননি এবং প্রতিবেদক একাধিকবার ফোন করলেও সেই ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি অধিদপ্তরে দেখা করতে গেলেও তিনি দেখা দেননি।

একই বিষয় নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আহমেদের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে ফোন ধরেন এবং মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। পরে হোয়াট অ্যাপে তাঁকে স্টাফ অফিসারকে করা প্রশ্নগুলো পাঠিয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি কোন প্রতিউত্তর দেননি। উত্তর জানতে আবারও যোগাযোগ করা হলে, স্টাফ অফিসার আপনাকে জানাবে বলে প্রতিবেদককে জানিয়ে ফোন রেখে দেন।

এই বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, করোনা মহামারি ও রিভিশনে সময় যাওয়ার কারনে প্রজেক্টের মেয়াদ বেড়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়েছি এক বছর হলো। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে পিডাব্লিউডি প্রকল্পটি হস্তান্তর করবে। মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ইন্সটল করে আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে হাহপাতালকে ফুল ফাংশনাল করার চেষ্টায় আছি আমরা। এছাড়াও সময়মতো প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় বেশ কয়েকবার পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। নির্বাচনের আগেই হাসপাতালটি চালুর বিষয়ে তাঁর কড়া নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অজানা কারণে সেই নির্দেশনাও বাস্তবায়ন হয়নি।