ঢাকা ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উচ্চ আদালতের রায় এবং আইন উপদেষ্টার মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সিএজি কার্যালয় ও এর অধীনস্থ অডিটররা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানান তারা।

৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত
রাজধানীর কাকরাইলে সিএজি কার্যালয়ের আওতাধীন অডিট কমপ্লেক্সে দিনভর কয়েক হাজার অডিটর অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। একই দাবিতে সারা দেশে সব হিসাবরক্ষণ অফিসসমূহে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

চলমান অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশ হতে অডিটররা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অডিটরের পদকে ১৯তম গ্রেকে হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের নির্দেশনা প্রদান করা হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর উক্ত রিট মামলার পক্ষভূক্ত ৬১ জন অডিটরের পদকে ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে। এতে করে ৬১ জন অডিটর ব্যতীত অন্যান্য সকল অডিটর “একই পদে দুই গ্রেড” এর বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

বৈষম্যের শিকার অডিটররা আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করলে সর্বোচ্চ আদালত ২০২২ সালে অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার পক্ষে রায় দিলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ (সিএজি ও অর্থ মন্ত্রণালয়। নানা টালবাহানা করায় সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ আগস্ট সিএজি কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রশাসন ও সমন্বয় অনু বিভাগ থেকে মতামত চেয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল অডিটর পদকে ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের পক্ষে মতামত প্রদান করেন। মাননীয় আইন উপদেষ্টা কর্তৃক মতামত প্রদান করা সত্ত্বেও অর্থ মন্ত্রণালয় উক্ত মতামতকে কোন এক অদৃশ্য কারণে উপেক্ষা করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।

অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশে অডিটররা আরও বলেন, আমরা মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) আওতাধীন অডিটররা একই পথে দুই ধরনের বেতন বৈষম্য নিরসন ও দশম গ্রেড বাস্তবায়ন চেয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।

জানা গেছে, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) ও এর আওতাধীন হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ), কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স (সিজিডিএফ) ও রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এই চার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে অডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন ৬ হাজার ৯৮৫ জন। এর মধ্যে মাত্র ৬১ জনকে যারা রিট মামলার পক্ষভুক্ত হয়েছিলেন, শুধু তাদের ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়া হয়। বাকিরা এখনো ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। বিক্ষোভকালে তারা দ্রুত আদালতের রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৮ অনুসারেমহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কোন বিষয়ে রায় প্রদান করলে (রিট পিটিশন, আপলি ও রিভিও সংক্রান্ত) অনুরূপ ক্ষেত্রে উক্ত রায় বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা আছে।

অডিটর আহমেদুর রহমান ডালিম ও মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘আমাদের একই পদে দুটি গ্রেড। একটি ১১তম গ্রেড ও আরেকটি ১০ম গ্রেড। অডিটার পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নতিকরণ না করে শুধুমাত্র মামলাকারী ৬১ জনকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ করায় বৈষম্যের শিকার হওয়া অডিটরদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। বৈষম্য দূর করার জন্য যে পত্রটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেই পত্রটির পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল স্যার এ বিষয়ে অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নতিকরনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তারপরও কোন এক অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। আমরা এ রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

উচ্চ আদালতের রায় এবং আইন উপদেষ্টার মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়

আপডেট সময় ০৫:৪০:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সিএজি কার্যালয় ও এর অধীনস্থ অডিটররা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানান তারা।

৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত
রাজধানীর কাকরাইলে সিএজি কার্যালয়ের আওতাধীন অডিট কমপ্লেক্সে দিনভর কয়েক হাজার অডিটর অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। একই দাবিতে সারা দেশে সব হিসাবরক্ষণ অফিসসমূহে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

চলমান অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশ হতে অডিটররা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অডিটরের পদকে ১৯তম গ্রেকে হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের নির্দেশনা প্রদান করা হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর উক্ত রিট মামলার পক্ষভূক্ত ৬১ জন অডিটরের পদকে ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে। এতে করে ৬১ জন অডিটর ব্যতীত অন্যান্য সকল অডিটর “একই পদে দুই গ্রেড” এর বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

বৈষম্যের শিকার অডিটররা আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করলে সর্বোচ্চ আদালত ২০২২ সালে অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার পক্ষে রায় দিলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ (সিএজি ও অর্থ মন্ত্রণালয়। নানা টালবাহানা করায় সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ আগস্ট সিএজি কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রশাসন ও সমন্বয় অনু বিভাগ থেকে মতামত চেয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল অডিটর পদকে ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের পক্ষে মতামত প্রদান করেন। মাননীয় আইন উপদেষ্টা কর্তৃক মতামত প্রদান করা সত্ত্বেও অর্থ মন্ত্রণালয় উক্ত মতামতকে কোন এক অদৃশ্য কারণে উপেক্ষা করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।

অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশে অডিটররা আরও বলেন, আমরা মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) আওতাধীন অডিটররা একই পথে দুই ধরনের বেতন বৈষম্য নিরসন ও দশম গ্রেড বাস্তবায়ন চেয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।

জানা গেছে, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) ও এর আওতাধীন হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ), কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স (সিজিডিএফ) ও রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এই চার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে অডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন ৬ হাজার ৯৮৫ জন। এর মধ্যে মাত্র ৬১ জনকে যারা রিট মামলার পক্ষভুক্ত হয়েছিলেন, শুধু তাদের ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়া হয়। বাকিরা এখনো ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। বিক্ষোভকালে তারা দ্রুত আদালতের রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৮ অনুসারেমহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কোন বিষয়ে রায় প্রদান করলে (রিট পিটিশন, আপলি ও রিভিও সংক্রান্ত) অনুরূপ ক্ষেত্রে উক্ত রায় বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা আছে।

অডিটর আহমেদুর রহমান ডালিম ও মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘আমাদের একই পদে দুটি গ্রেড। একটি ১১তম গ্রেড ও আরেকটি ১০ম গ্রেড। অডিটার পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নতিকরণ না করে শুধুমাত্র মামলাকারী ৬১ জনকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ করায় বৈষম্যের শিকার হওয়া অডিটরদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। বৈষম্য দূর করার জন্য যে পত্রটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেই পত্রটির পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল স্যার এ বিষয়ে অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নতিকরনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তারপরও কোন এক অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। আমরা এ রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।