ঢাকা ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তি পাচ্ছে ‘রুম নম্বর ২০১১’ গণতন্ত্র ও বিএনপি সমান্তরাল : মির্জা ফখরুল আ.লীগ দেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল : তারেক রহমান

অর্ধ যুগ ধরে গাইবান্ধায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তা!

গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের দুইজন কর্মকর্তা ও একজন স্টাফসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অর্ধ যুগ ধরে ঘুরেফিরে একই জেলায় কর্মরত থাকার অভিযোগ উঠেছে। একদিকে তাদের প্রভাবের কারণে ঠিকাদাররা যেমন জিম্মি হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে তারা একটা শক্ত সিন্ডিকেট তৈরি করে অনৈতিক কাজেও জড়িয়ে পড়েছেন। অথচ চাকরিবিধি অনুযায়ী একজন সরকারি কর্মকর্তা বা স্টাফ একই কর্মস্থলে টানা তিন বছরের বেশি থাকার কথা নয়।

ওই তিনজন হলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন ও স্টেনো টাইপিস্ট (পিএ) এম এ মাসুদ মিয়া।

এরমধ্যে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘুরেফিরে একই জেলায় ২০ বছর ধরে কর্মরত আছেন।

গাইবান্ধা গণপূর্ত অফিস সূত্রে জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার পূর্ব রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে। তিনি পৌর শহরের নিজের ক্রয় করা ওয়াপদা পাড়ায় একটি বিলাসবহুল বাড়িতে থাকেন। গাইবান্ধা জেলায় ২০০৭ সালে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগে যোগদানের পর দীর্ঘ এক যুগের বেশি কর্মরত থেকে ২০২০ সালের শেষ ঢাকা বঙ্গভবন গণপূর্ত ই/এম উপ-বিভাগে বদলি নিয়ে সেখানে মাত্র ৩ মাস ১৬ দিন দায়িত্ব পালন করেন। পরে তদবির করে পূনরায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগে যোগদান করেন। সেই থেকে আজ অবধি তিনি গাইবান্ধা গণপূর্ত অফিসে কর্মরত আছেন।

এদিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পৌর শহরে। তিনিও সেখানে একটি বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন। ২০১৪ সালের ৪ আগষ্ট গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগে যোগদান করে আজ অবধি তিনি একই জেলায় কর্মরত আছেন। এই অফিসে তিনিও ১০ বছর যাবৎ কর্মরত।

অন্যদিকে স্টেনো টাইপিস্ট (পিএ) এম এ মাসুদের বাড়ি সদর উপজেলার তুলসীঘাটে। তিনিও প্রচুর জায়গাজমিসহ বিশাল বাড়ি করেছেন। ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধা জেলা গণপূর্ত অফিসে যোগদান করে আজ অবধি কর্মরত আছেন তিনি। এই অফিসে তিনি প্রায় ৯ বছর যাবৎ কর্মরত।

গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের তুষার নামের এক ঠিকাদার জানান, গণপূর্ত অফিসের এই তিনজন স্টাফ মিলে একটি সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন থাকার কারণে তারা নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তাছাড়া ইলেকট্রিক টেন্ডারের কোনো কাজ কোনো ঠিকাদারা করতে পারে না। এই তিনজনই সিন্ডিকেট করে কাজ করে থাকে।

রোমান নামের আরেক ঠিকাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে একই প্রতিষ্ঠানে থাকার কারণে গণপূর্ত অফিসের ঠিকাদাররা অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। অচিরে এদের বদলির দাবি জানান এই ঠিকাদার।

গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের সদস্য সচিব ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, যে কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় ঘুরে ফিরে একই জায়গায় থাকেন, তার মধ্যে অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।

এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের দুই কর্মকর্তা ও স্টাফের সঙ্গে কথা হলে তারা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। বদলির ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার বলেও উল্লখ করেন তারা।

সার্বিক বিষয়ে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রফিকুল হাসান বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন হলো যোগদান করেছি। অফিসের স্টাফদের বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম তিনজন স্টাফ দীর্ঘদিন ধরে এই অফিসে কর্মরত আছেন। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

অর্ধ যুগ ধরে গাইবান্ধায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তা!

আপডেট সময় ০২:১৮:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের দুইজন কর্মকর্তা ও একজন স্টাফসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অর্ধ যুগ ধরে ঘুরেফিরে একই জেলায় কর্মরত থাকার অভিযোগ উঠেছে। একদিকে তাদের প্রভাবের কারণে ঠিকাদাররা যেমন জিম্মি হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে তারা একটা শক্ত সিন্ডিকেট তৈরি করে অনৈতিক কাজেও জড়িয়ে পড়েছেন। অথচ চাকরিবিধি অনুযায়ী একজন সরকারি কর্মকর্তা বা স্টাফ একই কর্মস্থলে টানা তিন বছরের বেশি থাকার কথা নয়।

ওই তিনজন হলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন ও স্টেনো টাইপিস্ট (পিএ) এম এ মাসুদ মিয়া।

এরমধ্যে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘুরেফিরে একই জেলায় ২০ বছর ধরে কর্মরত আছেন।

গাইবান্ধা গণপূর্ত অফিস সূত্রে জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার পূর্ব রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে। তিনি পৌর শহরের নিজের ক্রয় করা ওয়াপদা পাড়ায় একটি বিলাসবহুল বাড়িতে থাকেন। গাইবান্ধা জেলায় ২০০৭ সালে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগে যোগদানের পর দীর্ঘ এক যুগের বেশি কর্মরত থেকে ২০২০ সালের শেষ ঢাকা বঙ্গভবন গণপূর্ত ই/এম উপ-বিভাগে বদলি নিয়ে সেখানে মাত্র ৩ মাস ১৬ দিন দায়িত্ব পালন করেন। পরে তদবির করে পূনরায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগে যোগদান করেন। সেই থেকে আজ অবধি তিনি গাইবান্ধা গণপূর্ত অফিসে কর্মরত আছেন।

এদিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পৌর শহরে। তিনিও সেখানে একটি বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন। ২০১৪ সালের ৪ আগষ্ট গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগে যোগদান করে আজ অবধি তিনি একই জেলায় কর্মরত আছেন। এই অফিসে তিনিও ১০ বছর যাবৎ কর্মরত।

অন্যদিকে স্টেনো টাইপিস্ট (পিএ) এম এ মাসুদের বাড়ি সদর উপজেলার তুলসীঘাটে। তিনিও প্রচুর জায়গাজমিসহ বিশাল বাড়ি করেছেন। ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধা জেলা গণপূর্ত অফিসে যোগদান করে আজ অবধি কর্মরত আছেন তিনি। এই অফিসে তিনি প্রায় ৯ বছর যাবৎ কর্মরত।

গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের তুষার নামের এক ঠিকাদার জানান, গণপূর্ত অফিসের এই তিনজন স্টাফ মিলে একটি সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন থাকার কারণে তারা নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তাছাড়া ইলেকট্রিক টেন্ডারের কোনো কাজ কোনো ঠিকাদারা করতে পারে না। এই তিনজনই সিন্ডিকেট করে কাজ করে থাকে।

রোমান নামের আরেক ঠিকাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে একই প্রতিষ্ঠানে থাকার কারণে গণপূর্ত অফিসের ঠিকাদাররা অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। অচিরে এদের বদলির দাবি জানান এই ঠিকাদার।

গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের সদস্য সচিব ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, যে কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় ঘুরে ফিরে একই জায়গায় থাকেন, তার মধ্যে অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।

এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের দুই কর্মকর্তা ও স্টাফের সঙ্গে কথা হলে তারা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। বদলির ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার বলেও উল্লখ করেন তারা।

সার্বিক বিষয়ে গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রফিকুল হাসান বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন হলো যোগদান করেছি। অফিসের স্টাফদের বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম তিনজন স্টাফ দীর্ঘদিন ধরে এই অফিসে কর্মরত আছেন। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।