ঢাকা ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ বোরহানউদ্দিনে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হলেন বিখ্যাত আইটি বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন দক্ষিণ মুগদা থানা ৭১ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সংস্কারের বৈধতা আমরা দিতে পারব না: ফখরুল জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে পদক্ষেপের কথা জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেফতার কোনো দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে মাঠে নামিনি: সিইসি আনিসুল হক আরেক মামলায় গ্রেফতার চান্দিনায় মারুতির পেছনে বাসের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু,অন্তঃসত্ত্বা মা সহ আহত ৩

বেহাল অর্থনীতি : শ্রীলঙ্কার পথেই হাঁটছে পাকিস্তান?

পাকিস্তানের অর্থনীতির সব সূচক এখন নেতিবাচক। দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারের মজুত প্রতিদিন কমছে; মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বী এবং সেই সঙ্গে কমছে প্রবাসী আয়। মুদ্রার মান কমে এযাবৎকালে সর্বনিম্ন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। সরকারি তহবিলেও ঘাটতি অনেক।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ঋণ চেয়েও দেশটি পড়েছে কঠিন সব শর্তের মুখে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তো আছেই। ফলে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত আছে এবং দিন দিন সংকট মোকাবিলা কঠিন করেছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা।

গত মার্চে পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ ছিল ১২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঋণ ও সুদ মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে দেশটিকে ২১ বিলিয়ন ডলার শোধ করতে হবে। ১ জুলাই থেকে এই অর্থবছর শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের যে বিদেশি ঋণ, তার অর্ধেকই চীন থেকে নেওয়া।

চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানের চলতি হিসাবে এ ঘাটতি আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, বিদেশি ঋণের প্রবাহ কম। একই সঙ্গে ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বন্ড কেনায়ও আগ্রহ কমেছে। বলা হচ্ছে, আইএমএফের তহবিল ছাড় না হলে পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার এই ঘাটতি কমার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

পাকিস্তানের বৈদেশিক বাণিজ্যও প্রায় সম্পূর্ণ ভারসাম্যহীন। গত জুনে শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটির মোট আমদানি ছিল ৮৪ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার; বিপরীতে রপ্তানি ছিল ৩৯ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, গত অর্থবছেরে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ৪৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন। তার আগের অর্থবছরে এ বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন।

শ্রীলঙ্কায় এখন যে সংকট চলছে, পাকিস্তানও সেই পথেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবেদরা। তারা বলছেন, পাকিস্তানের অর্থনীতিও শ্রীলঙ্কার মতো ধুঁকছে। শ্রীলঙ্কার মতোই ভুল নীতি ও দুর্নীতির কারণে অর্থনীতি সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ কমাতে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে বাজারগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিয়ের হল ও মলের জন্য এই সময়সীমা সীমাবদ্ধ করা হয়েছে ১০টা পর্যন্ত। এছাড়া ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত বৈদ্যুতিক পাখা ও বাল্ব উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি অফিসে খরচ কমাতে দিনের আলোতে মিটিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানে মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনাও মানুষের নাগালের বাইরে হয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালে নজিরবিহীন বন্যায় বন্যায় বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশটিতে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, গত বছর বন্যায় দেশটির অন্তত ৩০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ

বেহাল অর্থনীতি : শ্রীলঙ্কার পথেই হাঁটছে পাকিস্তান?

আপডেট সময় ০২:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

পাকিস্তানের অর্থনীতির সব সূচক এখন নেতিবাচক। দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারের মজুত প্রতিদিন কমছে; মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বী এবং সেই সঙ্গে কমছে প্রবাসী আয়। মুদ্রার মান কমে এযাবৎকালে সর্বনিম্ন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। সরকারি তহবিলেও ঘাটতি অনেক।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ঋণ চেয়েও দেশটি পড়েছে কঠিন সব শর্তের মুখে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তো আছেই। ফলে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত আছে এবং দিন দিন সংকট মোকাবিলা কঠিন করেছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা।

গত মার্চে পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ ছিল ১২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঋণ ও সুদ মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে দেশটিকে ২১ বিলিয়ন ডলার শোধ করতে হবে। ১ জুলাই থেকে এই অর্থবছর শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের যে বিদেশি ঋণ, তার অর্ধেকই চীন থেকে নেওয়া।

চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানের চলতি হিসাবে এ ঘাটতি আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, বিদেশি ঋণের প্রবাহ কম। একই সঙ্গে ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বন্ড কেনায়ও আগ্রহ কমেছে। বলা হচ্ছে, আইএমএফের তহবিল ছাড় না হলে পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার এই ঘাটতি কমার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

পাকিস্তানের বৈদেশিক বাণিজ্যও প্রায় সম্পূর্ণ ভারসাম্যহীন। গত জুনে শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটির মোট আমদানি ছিল ৮৪ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার; বিপরীতে রপ্তানি ছিল ৩৯ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, গত অর্থবছেরে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ৪৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন। তার আগের অর্থবছরে এ বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন।

শ্রীলঙ্কায় এখন যে সংকট চলছে, পাকিস্তানও সেই পথেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবেদরা। তারা বলছেন, পাকিস্তানের অর্থনীতিও শ্রীলঙ্কার মতো ধুঁকছে। শ্রীলঙ্কার মতোই ভুল নীতি ও দুর্নীতির কারণে অর্থনীতি সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ কমাতে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে বাজারগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিয়ের হল ও মলের জন্য এই সময়সীমা সীমাবদ্ধ করা হয়েছে ১০টা পর্যন্ত। এছাড়া ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত বৈদ্যুতিক পাখা ও বাল্ব উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি অফিসে খরচ কমাতে দিনের আলোতে মিটিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানে মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনাও মানুষের নাগালের বাইরে হয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালে নজিরবিহীন বন্যায় বন্যায় বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশটিতে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, গত বছর বন্যায় দেশটির অন্তত ৩০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।