নতুন বছরে নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও)। মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি এবার সূর্যকে নিরীক্ষণের জন্য ভারতের প্রথম ডেডিকেটেড মিশন আদিত্য-এল১ লঞ্চ করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরে এই মিশন পরিচালনা করতে শঙ্করসুব্রহ্মণ্যন কে-কে আদিত্য-এল১ মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
২০১৫ সালের অ্যাস্ট্রোস্যাটের সফল উৎক্ষেপণের পর এটি হবে ভারতের দ্বিতীয় মহাকাশ ভিত্তিক প্রকল্প। কী উদ্দেশ্যে আদিত্য-এল১ উৎক্ষেপণের কথা ভাবা হয়েছে? এই মিশনের নামই বা আদিত্য কেন? সূর্যের একাধিক নামের মধ্যে পড়ে আদিত্য। সেই নামানুসারে মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে এটি। এর পেছনে রয়েছে আরেকটি কারণ। এই মিশনের মূল লক্ষ্যই হলো সৌরজগতের কেন্দ্রে উপস্থিত সূর্যকে ভালোভাবে নিরীক্ষণ করা। যদিও প্রথমে এর নাম ছিল আদিত্য-১। কিন্তু পরে এর নামে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম ‘বাংলা হান্ট’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেলের মাধ্যমে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে এটি উৎক্ষেপণের কথা রয়েছে। ‘ইন্ডিয়া টিভি’তে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আইএসআরও নতুন বছরের শুরুতে কর্নাটকের চিত্রদুর্গার অ্যারোনটিক্যাল টেস্ট রেঞ্জ থেকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য লঞ্চ যানের প্রথম রানওয়ে ল্যান্ডিং পরীক্ষা পরিচালনা করার পরিকল্পনা করছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং সংসদে এমনটাই জানিয়েছেন।
আদিত্য-এল১ নিয়ে বেঙ্গালুরুর জাতীয় মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, এই মহাকাশযানটি সূর্য–পৃথিবী সিস্টেমের প্রথম ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট, এল১-এর চারপাশে একটি হ্যালো কক্ষপথে অবস্থান করবে। যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে রয়েছে। যেখানে সূর্য এবং পৃথিবীর সম্মিলিত মহাকর্ষীয় টান একটি মহাকাশ যানকে সূর্যের কাছে স্থির অবস্থায় রেখে দেবে।
আদিত্য-এল১-এ সাতটি পেলোড রয়েছে। যার মধ্যে তিনটি পেলোড ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল১-এ ইন-সিটু কণা এবং ফিল্ড স্টাডি পরিচালনা করে। আর বাকি চারটি পেলোড সরাসরি এল১-এর ইউনিক ভান্টেজ পয়েন্ট থেকে সূর্যকে দেখতে পাবে। এই সাতটি পেলোড আলোকমণ্ডল, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং সূর্যের সবচেয়ে বাইরের স্তরগুলো অধ্যায়নে সাহায্য করবে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এবং পার্টিক্যালস ডিটেক্টর ব্যবহার করে। মূলত আদিত্য-এল১ মিশন সূর্যের গতিশীল প্রক্রিয়াগুলোর একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান দেবে এবং সৌর পদার্থবিদ্যার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার উত্তর দেবে।