ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছরে হাজারখানেক রোহিঙ্গা পুনর্বাসন করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক কত সংখ্যক রোহিঙ্গা নিতে চায় দেশটি সেটি এখনও নির্দিষ্ট নয়। তবে প্রতি বছরে সংখ্যাটা হাজারখানেক হতে পারে বলে ধারণা করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা করতে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস। তার সফরে রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র কি প‌রিমাণ রো‌হিঙ্গা পুনর্বাসন কর‌তে চায় এ বিষয়ে শাহরিয়ার আলমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যাটি এখনও সুনির্দিষ্ট নয়। তবে এটি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) প্রায় বছরখানেক আগে আমাদের জানিয়েছিলেন। কিভাবে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা হবে, সেই মেকানিজমগুলো এখনও ঠিক হয়নি। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। প্রতি বছরই তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নেবে, হাজারের মতো হতে পারে।

অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গার পুনর্বাসন দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা দিয়ে বড় ধরনের কোনো সমাধান হবে না। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, এটা শুরু হবে। এটার (পুনর্বাসন) সঙ্গে আরও অন্য কোনো রাষ্ট্র যদি সম্পৃক্ত হতে চান তাদেরও আমরা সাধুবাদ জানাব এবং স্বাগত জানাব।

যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে কারা অগ্রাধিকার পাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা যখন সংখ্যা-সময় চূড়ান্ত হবে তখন বলা যাবে। তবে আমরা প্রত্যাশা করব, অতীতে যারা থেকে গেছেন। কিন্তু এটা রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত নয়। কারণ বিভিন্ন পর্যায়ে এটা ঠিক হবে।

বাংলাদেশি নাগরিকরা রোহিঙ্গা পরিচয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাইবে-এমনটা শঙ্কা করছেন সাংবাদিকরা। অবশ্য প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য, ৯০ এর দশক থেকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কারণে পরবর্তীতে যে উপাত্ত তৈরি করা হয়েছে, এটা আগের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট এবং ওয়াইডলি এভেইলেবল। সেখানে কোনো লোক ঢুকে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

এদিকে, পাঁচদিনের সফরে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে আসা যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী ও অভিবাসন মন্ত্রী রোববার (৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। সেখান থেকে তার নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকায় ফিরে যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবের বিষয়টি তুলবেন।

চল‌তি বছ‌রের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযানের পাঁচ বছর পূর্তিতে বিবৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেওয়ার ঘোষণা দেন। তবে সেই ঘোষণায় কত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বছরে হাজারখানেক রোহিঙ্গা পুনর্বাসন করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ০৩:৪২:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক কত সংখ্যক রোহিঙ্গা নিতে চায় দেশটি সেটি এখনও নির্দিষ্ট নয়। তবে প্রতি বছরে সংখ্যাটা হাজারখানেক হতে পারে বলে ধারণা করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা করতে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস। তার সফরে রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র কি প‌রিমাণ রো‌হিঙ্গা পুনর্বাসন কর‌তে চায় এ বিষয়ে শাহরিয়ার আলমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যাটি এখনও সুনির্দিষ্ট নয়। তবে এটি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) প্রায় বছরখানেক আগে আমাদের জানিয়েছিলেন। কিভাবে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা হবে, সেই মেকানিজমগুলো এখনও ঠিক হয়নি। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। প্রতি বছরই তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নেবে, হাজারের মতো হতে পারে।

অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গার পুনর্বাসন দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা দিয়ে বড় ধরনের কোনো সমাধান হবে না। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, এটা শুরু হবে। এটার (পুনর্বাসন) সঙ্গে আরও অন্য কোনো রাষ্ট্র যদি সম্পৃক্ত হতে চান তাদেরও আমরা সাধুবাদ জানাব এবং স্বাগত জানাব।

যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে কারা অগ্রাধিকার পাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা যখন সংখ্যা-সময় চূড়ান্ত হবে তখন বলা যাবে। তবে আমরা প্রত্যাশা করব, অতীতে যারা থেকে গেছেন। কিন্তু এটা রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত নয়। কারণ বিভিন্ন পর্যায়ে এটা ঠিক হবে।

বাংলাদেশি নাগরিকরা রোহিঙ্গা পরিচয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাইবে-এমনটা শঙ্কা করছেন সাংবাদিকরা। অবশ্য প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য, ৯০ এর দশক থেকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কারণে পরবর্তীতে যে উপাত্ত তৈরি করা হয়েছে, এটা আগের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট এবং ওয়াইডলি এভেইলেবল। সেখানে কোনো লোক ঢুকে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

এদিকে, পাঁচদিনের সফরে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে আসা যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী ও অভিবাসন মন্ত্রী রোববার (৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। সেখান থেকে তার নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকায় ফিরে যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবের বিষয়টি তুলবেন।

চল‌তি বছ‌রের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযানের পাঁচ বছর পূর্তিতে বিবৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেওয়ার ঘোষণা দেন। তবে সেই ঘোষণায় কত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।