ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে আওয়ামীলীগ দোসরা; গত ১৫ বছর জিম্মি করে অনিয়ম ও দুর্নীতি । (প্রথম -পর্ব)

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিন্ডিকেটের গডফাদার ও সদস্যদের কাছে পুরো হাসপাতালটি জিম্মি হয়ে পড়েছিল । এখনো আ’লীগের দোসররা সক্রিয়ভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ বছর এই সিন্ডিকেটটি কোটি কোটি টাকা হাসপাতালে থেকে আত্মসাৎ করেছি বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। পনেরো বছরে আওয়ামী লীগে সরকার পন্থী পরিচালক, উপ পরিচালক, সহকারি পরিচালকসহ বিভিন্ন সেকশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এমনকি ডাক্তার ও নার্সরা নিজেদের সম্পদ মনে করে রোগীদের জন্য সরকার থেকে সরবরাহ ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, সুতা, হ্যান্ড গ্লাভ্স, আসবার পত্র, রোগীদের খাবারসহ আরো বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ক্রয়– বিক্রির মাধ্যমে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা কোটি কোটি টাকা হাতে নিয়েছে হাসপাতাল থেকে। তাদের মধ্যে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের পরিণত হয় খালিদ আহমেদ রাজুর সিন্ডিকেট ।

সে সবাইকে ম্যানেজ করে এককভাবে হাসপাতালের টেন্ডারগুলো নিতেন। অভিযোগে জানা গেছে, খালিদ আহমেদ রাজু তার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে জামানতে ভুয়া পে অর্ডার জমা দিয়ে জালিয়াতি মাধ্যমে আইসিটি স্টোর থেকে দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সামগ্রী লুটপাটের মহা উৎসবে ব্যস্ত ছিল রাজু সিন্ডিকেট । রাজুকে সহযোগিতা করে হাসপাতলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম, আইসিটির স্টোরের ইনচার্জ অফিস সহকারি মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন, তার সঙ্গবদ্ধ দলের সদস্য ছিল ওয়ার্ড বয় আব্দুল হালিম ও আব্দুল হাকিম সহ আরো অনেকেই।

তাদের মাধ্যমে সবকিছু মালামাল রাজু সিন্ডিকেটের কাছে পৌঁছে যেতে। করোনা–১৯, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ও আইসিটির ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী রোগীদের কাছে সাপ্লাই নাই দিয়ে বাইরে পাচার করে দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। ওষুধ চুরির করে বাইরে পাচার করে দিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেটের সদস্যকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করে। তারা হলেন, আব্দুল হালিম , আব্দুল হাকিম ও ফার্মাসিস্ট ইসমাইল হোসেন।

এদের মূল হোতা হল মনোয়ার হোসেন ওষুধ চুরির থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তখন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম (বর্তমানে তিনি হাসপাতালের উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন), প্রশাসন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ও খালিদ আহমেদ রাজু হস্তক্ষেপে বিপুল অর্থের বিনিময়ে মনোয়ারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অবস্থা গ্রহণ না করে ওই শাখায় সামান্য কর্মচারী আল-আমিনকে বদলির নাটক দেখানো হয়। তারা ওয়ার্ডের ইনচার্জ নার্সদের ম্যানেজ করে হাসপাতালে সাপ্লাই খাতা রোগী না থাকলেও সেসব বেধে রোগী দেখিয়ে ইন্ডেন করে রোগীদের ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী বাইরে পাচার করে আত্মসাৎ করত লাখ লাখ টাকা । এমনকি একনামশিয়া ওয়ার্ডে কোন ধরনের অপারেশন হয় না।

শেখানো সুই সুতা গ্লাভস সাপ্লাই দেওয়ার অর্ডার খাতার মধ্যে দেখা যায় । আইসিটি ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন পরবর্তী নাজদের মাধ্যমে ওয়াড বয় আব্দুল হালিম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম, টেন্ডার সরকার অফিস সহায়ক সুমন কুমার দে অফিস সহায়ক মো, আব্দুল আউয়াল লিটন এর মাধ্যমে কম দামে মেসেজ রাজু এন্টারপ্রাইজের নিকট বিক্রি করে । আবার পরবর্তীতে তাকে কার্যাদেশ প্রদান করে তার নিকট হইতে বেশি দামে উক্ত জিনিসগুলো ক্রয় করে ।

অন্যদিকে মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ তার প্রতিটি কার্যাদশের বিপরীতে যে শতকরা ১০% পারফমেন্স মানি ( সিকিউরিটি মানি) বাবদ পে- অর্ডার জমা দেওয়ার কথা সেগুলো তিনি বিগত ২ থেকে ৩ বছর যাবত ভুয়া পে- অর্ডার জমা প্রধান করে থাকেন । অত্র হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, সহকারী পরিচালক ডাক্তার আশরাফুল আলম (বর্তমানে উপ-পরিচালক হিসেবে আছেন) ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই তাদের সহযোগিতা জমা দেওয়া শুরু হয় এ সকল ভুয়া পে –অর্ডার জমা দেওয়ার প্রতিযোগিতা করার কারণে সহকারি পরিচালক ডাক্তার আশরাফুল আলমকে মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ এর পক্ষ হইতে টয়েটার ব্র্যান্ডের নোয়া গাড়ি যাহার নাম্বার ঢাকা মেট্রো চ-১৯-৭২৬০। যাহার মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ।

ওইসব কাজের জন্য রেজাউল ইসলাম পেতেন শতকরা ৫%। এই সব ভুয়া পে- অর্ডার না থাকতো হাসপাতালে ক্যাশিয়ার আলমগীর হোসেন এর কাছে তার জন্য তিনি পেতেন শতকরা ২%। ইতিপূর্বে অডিট পরীক্ষা দল এগুলো ভেরিফাই করার জন্য তাগিদ দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষক কার্যাদশের বিপরীতে শতকরা ১০% পারফমেন্স মানি (সিকিউরিটি মানি) বাবদ পে- অর্ডার জমা করে মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ করেন তা ভেরিফাই না করে বিল প্রদান করে যার পার্সেন্টেস গ্রহণ করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন । প্রশাসন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চলতি বছরে গত ৩ জুন দুর্নীতির করার অভিযোগে একটি অভিযোগও রয়েছে ।

তৎকালীন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ রাজুর পে- অর্ডারের ডকুমেন্টটি সঠিক না ভুয়া ভেরিফাই না করে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ কোন ডকুমেন্ট ভেরিফাই করেনি। উল্লেখ্য যে, একই কারণে গত ২০২০ এবং ২০২১ অর্থ বছরের মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ হোসেন ,সাকিক এন্টারপ্রাইজ বিডি স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড হাসপাতাল) ভুয়া পে- অর্ডার দেওয়ার কারণে কালো তালিকায় ভুক্ত হন । এছাড়াও খালিদ আহমেদ রাজুর আরো তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ।

সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ নিয়ে থাকেন। এমনকি তার স্ত্রীর নামেও ঠিকাদারির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই হাসপাতালে অন্য কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টেন্ডার অংশগ্রহণ করলে টেন্ডার শাখার কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম টেন্ডার শাখার অফিস সহায়ক সুমন কুমার দে অফিস সহায়ক আব্দুল আউয়াল লিটন লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অন্য কোম্পানির ডকুমেন্ট সরিয়ে একমাত্র মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ এবং রাজুর অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে কাজ দেয় ।(আব্দুল আউয়াল লিটন বর্তমানে নিউরোসার্জারি এলাকার ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন ।

অষ্টম শ্রেণী পাস করে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি নিয়ে কিভাবে একজন ওয়ার্ড মাস্টার হতে পারেন । অভিযোগে জানা গেছে, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সেক্রেটারির মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে লিটন এই পথটি নেন। রাজু এন্টারপ্রাইজকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য যা যা কিছু করা দরকার টেন্ডার শাখার কর্মরত অফিস সহায়ক রা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম তা করে থাকতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগগুলো পাওয়া গেছে হাসপাতালের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমে। হাসপাতালের টেন্ডার শাখাসহ বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে সরকারের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ক্ষতি করে নিজেরা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে ওষুধ ভান্ডারের নিয়ন্ত্রণকারী ডাক্তার মশিউর রহমান দীর্ঘ ১২ বছর যাবত একই জায়গায় কর্মরত থেকে কোটি কোটি টাকার হাতিয়ে নিয়েছেন বিভিন্ন ঠিকাদারদের কাছ থেকেও ওষুধ পাচারের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন । ওষুধ ভান্ডারে অনেক ফার্মাসিস্টও তার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর হয়েও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এছাড়াও রাজু এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে হাসপাতালের গাড়ির পার্কিং নামে ব্যবহারে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্যরা হলেন হাসপাতালের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চক্রটি হাসপাতাল থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেয়া জীবনরক্ষাকারী ওষুধসহ মূল্যবান সামগ্রী বাইরের লোকজনের মাধ্যমে বিক্রি করছে। এই সিন্ডিকেটের গডফাদাররা চিহ্নিত হলেও অজ্ঞাত কারনেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু মাঝে মাঝে ধরা পড়ে চুনাপুটিরা। মাঝে মধ্যে যারা ধরা পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলেও তা আর আলোরমূখ দেখে না। এভাবেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস-বছরের পর বছর চলছে সিন্ডিকেটদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ মূল্যবান চিকিৎসা সামগ্রীর রমরমা বাণিজ্য। সংঘবদ্ধ এই চক্রের কাছে হাসপাতালর কর্তৃপক্ষও রীতিমতো জিম্বি হয়ে পড়ছে। এতে করে সরকারি এই হাসপাতালের ভেতর-বাইরে গড়ে উঠছে ওষুধসহ অন্যান্য সামগ্রী পাচারচক্রের শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

এইসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য ডিজি ও স্বাস্থ্য বিভাগীয় উচ্চপর্যায়ে কর্মকর্তা সাধারণ মানুষ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের আকুল আবেদন দেশের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়ে আইনের আওতায় আনার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইল। এ ব্যাপারে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাদের অনেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এসব ঘটনার সাথে আমরা জড়িত নয়। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য হয়তোবা কেউ অপপ্রচার করছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে আওয়ামীলীগ দোসরা; গত ১৫ বছর জিম্মি করে অনিয়ম ও দুর্নীতি । (প্রথম -পর্ব)

আপডেট সময় ০৬:১৫:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিন্ডিকেটের গডফাদার ও সদস্যদের কাছে পুরো হাসপাতালটি জিম্মি হয়ে পড়েছিল । এখনো আ’লীগের দোসররা সক্রিয়ভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ বছর এই সিন্ডিকেটটি কোটি কোটি টাকা হাসপাতালে থেকে আত্মসাৎ করেছি বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। পনেরো বছরে আওয়ামী লীগে সরকার পন্থী পরিচালক, উপ পরিচালক, সহকারি পরিচালকসহ বিভিন্ন সেকশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এমনকি ডাক্তার ও নার্সরা নিজেদের সম্পদ মনে করে রোগীদের জন্য সরকার থেকে সরবরাহ ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, সুতা, হ্যান্ড গ্লাভ্স, আসবার পত্র, রোগীদের খাবারসহ আরো বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ক্রয়– বিক্রির মাধ্যমে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা কোটি কোটি টাকা হাতে নিয়েছে হাসপাতাল থেকে। তাদের মধ্যে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের পরিণত হয় খালিদ আহমেদ রাজুর সিন্ডিকেট ।

সে সবাইকে ম্যানেজ করে এককভাবে হাসপাতালের টেন্ডারগুলো নিতেন। অভিযোগে জানা গেছে, খালিদ আহমেদ রাজু তার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে জামানতে ভুয়া পে অর্ডার জমা দিয়ে জালিয়াতি মাধ্যমে আইসিটি স্টোর থেকে দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সামগ্রী লুটপাটের মহা উৎসবে ব্যস্ত ছিল রাজু সিন্ডিকেট । রাজুকে সহযোগিতা করে হাসপাতলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম, আইসিটির স্টোরের ইনচার্জ অফিস সহকারি মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন, তার সঙ্গবদ্ধ দলের সদস্য ছিল ওয়ার্ড বয় আব্দুল হালিম ও আব্দুল হাকিম সহ আরো অনেকেই।

তাদের মাধ্যমে সবকিছু মালামাল রাজু সিন্ডিকেটের কাছে পৌঁছে যেতে। করোনা–১৯, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ও আইসিটির ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী রোগীদের কাছে সাপ্লাই নাই দিয়ে বাইরে পাচার করে দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। ওষুধ চুরির করে বাইরে পাচার করে দিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেটের সদস্যকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করে। তারা হলেন, আব্দুল হালিম , আব্দুল হাকিম ও ফার্মাসিস্ট ইসমাইল হোসেন।

এদের মূল হোতা হল মনোয়ার হোসেন ওষুধ চুরির থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তখন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম (বর্তমানে তিনি হাসপাতালের উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন), প্রশাসন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ও খালিদ আহমেদ রাজু হস্তক্ষেপে বিপুল অর্থের বিনিময়ে মনোয়ারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অবস্থা গ্রহণ না করে ওই শাখায় সামান্য কর্মচারী আল-আমিনকে বদলির নাটক দেখানো হয়। তারা ওয়ার্ডের ইনচার্জ নার্সদের ম্যানেজ করে হাসপাতালে সাপ্লাই খাতা রোগী না থাকলেও সেসব বেধে রোগী দেখিয়ে ইন্ডেন করে রোগীদের ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী বাইরে পাচার করে আত্মসাৎ করত লাখ লাখ টাকা । এমনকি একনামশিয়া ওয়ার্ডে কোন ধরনের অপারেশন হয় না।

শেখানো সুই সুতা গ্লাভস সাপ্লাই দেওয়ার অর্ডার খাতার মধ্যে দেখা যায় । আইসিটি ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন পরবর্তী নাজদের মাধ্যমে ওয়াড বয় আব্দুল হালিম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম, টেন্ডার সরকার অফিস সহায়ক সুমন কুমার দে অফিস সহায়ক মো, আব্দুল আউয়াল লিটন এর মাধ্যমে কম দামে মেসেজ রাজু এন্টারপ্রাইজের নিকট বিক্রি করে । আবার পরবর্তীতে তাকে কার্যাদেশ প্রদান করে তার নিকট হইতে বেশি দামে উক্ত জিনিসগুলো ক্রয় করে ।

অন্যদিকে মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ তার প্রতিটি কার্যাদশের বিপরীতে যে শতকরা ১০% পারফমেন্স মানি ( সিকিউরিটি মানি) বাবদ পে- অর্ডার জমা দেওয়ার কথা সেগুলো তিনি বিগত ২ থেকে ৩ বছর যাবত ভুয়া পে- অর্ডার জমা প্রধান করে থাকেন । অত্র হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, সহকারী পরিচালক ডাক্তার আশরাফুল আলম (বর্তমানে উপ-পরিচালক হিসেবে আছেন) ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই তাদের সহযোগিতা জমা দেওয়া শুরু হয় এ সকল ভুয়া পে –অর্ডার জমা দেওয়ার প্রতিযোগিতা করার কারণে সহকারি পরিচালক ডাক্তার আশরাফুল আলমকে মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ এর পক্ষ হইতে টয়েটার ব্র্যান্ডের নোয়া গাড়ি যাহার নাম্বার ঢাকা মেট্রো চ-১৯-৭২৬০। যাহার মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ।

ওইসব কাজের জন্য রেজাউল ইসলাম পেতেন শতকরা ৫%। এই সব ভুয়া পে- অর্ডার না থাকতো হাসপাতালে ক্যাশিয়ার আলমগীর হোসেন এর কাছে তার জন্য তিনি পেতেন শতকরা ২%। ইতিপূর্বে অডিট পরীক্ষা দল এগুলো ভেরিফাই করার জন্য তাগিদ দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষক কার্যাদশের বিপরীতে শতকরা ১০% পারফমেন্স মানি (সিকিউরিটি মানি) বাবদ পে- অর্ডার জমা করে মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ করেন তা ভেরিফাই না করে বিল প্রদান করে যার পার্সেন্টেস গ্রহণ করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন । প্রশাসন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চলতি বছরে গত ৩ জুন দুর্নীতির করার অভিযোগে একটি অভিযোগও রয়েছে ।

তৎকালীন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ রাজুর পে- অর্ডারের ডকুমেন্টটি সঠিক না ভুয়া ভেরিফাই না করে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ কোন ডকুমেন্ট ভেরিফাই করেনি। উল্লেখ্য যে, একই কারণে গত ২০২০ এবং ২০২১ অর্থ বছরের মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ হোসেন ,সাকিক এন্টারপ্রাইজ বিডি স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড হাসপাতাল) ভুয়া পে- অর্ডার দেওয়ার কারণে কালো তালিকায় ভুক্ত হন । এছাড়াও খালিদ আহমেদ রাজুর আরো তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ।

সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ নিয়ে থাকেন। এমনকি তার স্ত্রীর নামেও ঠিকাদারির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই হাসপাতালে অন্য কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টেন্ডার অংশগ্রহণ করলে টেন্ডার শাখার কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম টেন্ডার শাখার অফিস সহায়ক সুমন কুমার দে অফিস সহায়ক আব্দুল আউয়াল লিটন লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অন্য কোম্পানির ডকুমেন্ট সরিয়ে একমাত্র মেসার্স রাজু এন্টারপ্রাইজ এবং রাজুর অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে কাজ দেয় ।(আব্দুল আউয়াল লিটন বর্তমানে নিউরোসার্জারি এলাকার ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন ।

অষ্টম শ্রেণী পাস করে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি নিয়ে কিভাবে একজন ওয়ার্ড মাস্টার হতে পারেন । অভিযোগে জানা গেছে, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সেক্রেটারির মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে লিটন এই পথটি নেন। রাজু এন্টারপ্রাইজকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য যা যা কিছু করা দরকার টেন্ডার শাখার কর্মরত অফিস সহায়ক রা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম তা করে থাকতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগগুলো পাওয়া গেছে হাসপাতালের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমে। হাসপাতালের টেন্ডার শাখাসহ বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে সরকারের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ক্ষতি করে নিজেরা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে ওষুধ ভান্ডারের নিয়ন্ত্রণকারী ডাক্তার মশিউর রহমান দীর্ঘ ১২ বছর যাবত একই জায়গায় কর্মরত থেকে কোটি কোটি টাকার হাতিয়ে নিয়েছেন বিভিন্ন ঠিকাদারদের কাছ থেকেও ওষুধ পাচারের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন । ওষুধ ভান্ডারে অনেক ফার্মাসিস্টও তার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর হয়েও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এছাড়াও রাজু এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে হাসপাতালের গাড়ির পার্কিং নামে ব্যবহারে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্যরা হলেন হাসপাতালের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চক্রটি হাসপাতাল থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেয়া জীবনরক্ষাকারী ওষুধসহ মূল্যবান সামগ্রী বাইরের লোকজনের মাধ্যমে বিক্রি করছে। এই সিন্ডিকেটের গডফাদাররা চিহ্নিত হলেও অজ্ঞাত কারনেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু মাঝে মাঝে ধরা পড়ে চুনাপুটিরা। মাঝে মধ্যে যারা ধরা পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলেও তা আর আলোরমূখ দেখে না। এভাবেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস-বছরের পর বছর চলছে সিন্ডিকেটদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ মূল্যবান চিকিৎসা সামগ্রীর রমরমা বাণিজ্য। সংঘবদ্ধ এই চক্রের কাছে হাসপাতালর কর্তৃপক্ষও রীতিমতো জিম্বি হয়ে পড়ছে। এতে করে সরকারি এই হাসপাতালের ভেতর-বাইরে গড়ে উঠছে ওষুধসহ অন্যান্য সামগ্রী পাচারচক্রের শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

এইসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য ডিজি ও স্বাস্থ্য বিভাগীয় উচ্চপর্যায়ে কর্মকর্তা সাধারণ মানুষ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের আকুল আবেদন দেশের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়ে আইনের আওতায় আনার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইল। এ ব্যাপারে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাদের অনেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এসব ঘটনার সাথে আমরা জড়িত নয়। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য হয়তোবা কেউ অপপ্রচার করছে।