বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে । সংঘর্ষে বগুড়া শহরের ৩ নম্বর রেলগেট এলাকায় অজ্ঞাত এক যুবক এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলার মুনিরুল ইসলাম মুনির নামে আরেক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে দুই শতাধিক পুলিশ ও আন্দোলনকারী আহত হন।
এ সময় শহরের সাতমাথায় জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন এবং বিটিসিএল কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং আগুন দেওয়া হয়। শহরের বড়গোলা এলাকায় সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে কয়েক দফা হামলার পর আগুন দেওয়া হয়। দরজা ভেঙে ফেলার পর অফিস থেকে মূল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র রাস্তায় এনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আসবাবপত্র ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা একই এলাকায় সিটি ব্যাংকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা আশপাশের বিভিন্ন অফিসে ঢিল ছুড়ে কাচ ভেঙে ফেলে। সাইনবোর্ড ও সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়।
দত্তবাড়ি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, আসবাবপত্র বাইরে এনে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, এখানে গুলিবিদ্ধ নিহত দুজনের লাশ আনা হয়েছে। আহত হয়ে দুপুর পর্যন্ত ২২ জন ভর্তি হন। ধারণা করা হচ্ছে, গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় এলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় ক্ষমতাসীনরা পিছু হটে। পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে সাতমাথা ত্যাগ করেন।
অন্যদিকে আন্দোলন চলাকালে শহর ও শহরতলি এবং বিভিন্ন উপজেলায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। অফিস আদালত খোলা হয়নি। প্রতিটি সড়কে গাছের গুঁড়ি, ইট ও অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। লাঠিসোঁটা হাতে মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেওয়া নারী ও পুরুষরা ছোট যানবাহনগুলো বের হলে তাড়িয়ে দেন। আন্তজেলা ও দূরপাল্লার কোনও যানবাহন চলাচল করেনি। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া নারী ও পুরুষকে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হয়। বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান সদর ও দুপচাঁচিয়া থানায় হামলার কথা নিশ্চিত করেন। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি।