ঈদকে সামনে রেখে দরিদ্রদের নামে বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা রাজাপুর বাজারের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলামের শাস্তির দাবি জানান।
বিক্ষোভকারীরা জানান, উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর থেকে রাজাপুর ইউনিয়নের দরিদ্রদের জন্য প্রায় ৪১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল প্রদান করার কথা; কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিবন্ধিত কার্ডধারীদের মধ্যে এসব চাল বিতরণ না করে নাজমুল নামে তার নিকটাত্মীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজাপুর বাজারের ওই ব্যবসায়ীর গুদাম তল্লাশি করে খাদ্য অধিদপ্তরের সিল সম্বলিত ১৩৭ বস্তা চাল পাওয়া যায়। তারপরও উপজেলা প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসী চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি জানিয়ে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য মো. পিকুল বলেন, দরিদ্রদের মধ্যে চাল বিতরণের জন্য চেয়ারম্যান আমার ওয়ার্ডের জন্য ১৯০টি স্লিপ দিয়েছিলেন। এসব স্লিপ নিয়ে তারা পরিষদে গেলে ১২৭ জনকে চাল দেওয়া হয়, অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান দরিদ্র মানুষকে বঞ্চিত করে আত্মসাৎকৃত চাল গোপনে নিজের লোক দিয়ে নাজমুলের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন- এমন খবর জানতে পেরে এলাকাবাসী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাজাপুর ইউনিয়নের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বুধ ও বৃহস্পতিবার ইউনিয়নের ৪ হাজার ৯৩ জন দরিদ্র মানুষের মধ্যে সরকারি বরাদ্দের সমুদয় অংশ বিতরণ করা হয়েছে। চাল পাওয়া যায়নি এমন অভিযোগ কেউ করেনি। অথচ বিগত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী এ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের ইন্ধনে কিছু লোক মিছিল করেছেন। এটি তাদের ষড়যন্ত্র।
দরিদ্রদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত চাল ব্যবসায়ীর গুদামে গিয়ে ১৩৭ বস্তা চাল পাওয়া গেলেও সেগুলো তিনি টিআর বা অন্য কোনো খাতের চাল তিনি অতীতে ক্রয় করেছিলেন বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে তার বক্তব্য সঠিক মনে হয়েছে। এরপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সতত্যা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।