ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজীপুরে সাংবাদিক পরিবারের ওপর হামলা, নারীসহ আহত ৪ জন উত্তর মানিক নগরে কাটা হলো অবৈধ গ্যাস সংযোগ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চিনাইল পাগলের মেলায় মাদক ব্যবসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ তাবলীগের তা’লীম বন্ধ, ভিক্টোরিয়া কলেজ অধ্যক্ষ অবরুদ্ধ চৌদ্দগ্রাম সেনা ক্যাম্পের সাহসী পদক্ষেপ: মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে ২৩ বীর বিষবৃক্ষ তামাক চাষের কবলে লালমনিরহাটের ফসলি জমি নাটোরের বড়াইগ্রামে ভুয়া চক্ষু চিকিৎসক গ্রেফতার; জেল, জরিমানা আর্ত মানবতার সেবায় বিএনপি : বিনা খরচে তারা পেলেন চোখের চিকিৎসা। নাটোরে লালপুর মোটরসাইকেল ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ বন্ধুর মৃত্যু  কমলনগরে ১নং চর কালকিনি ইউনিয়ন কৃষক দলের কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছেন।

বিষবৃক্ষ তামাক চাষের কবলে লালমনিরহাটের ফসলি জমি

  • রাসেল ইসলাম
  • আপডেট সময় ০৬:২৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫১৬ বার পড়া হয়েছে

কৃষি প্রধান জেলা লালমনিরহাট। এক সময়ে ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা, কাউন, জব, আলুসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি চাষাবাদের জন্য সুনাম ছিল এ জেলার কৃষকের। কিন্তু এখন শুধু মাঠের পর মাঠ, যে দিকে চোখ পড়ে শুধু বিষবৃক্ষ তামাকের ক্ষেত। যত দিন যাচ্ছে, ততো বাড়ছে বিষবৃক্ষ তামাকের চাষাবাদ। কৃষকরা অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করলেও সেসব ফসল বাজারজাতকরনে নানা সমস্যা পোহাতে হয়। ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের আগ্রহ হারাচ্ছে সাধারণ কৃষকরা। কৃষি বিভাগের সঠিক তদারকি না থাকায় এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তামাক কোম্পানি গুলো এ অঞ্চলের সাধারণ কৃষকদের বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিয়ে বিষবৃক্ষ তামাক চাষের দিকে ঝুঁকে পড়তে বাধ্য করছে। আবার কৃষকরাও অধিক মুনাফার আশায় তামাক চাষাবাদে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, লালমনিরহাটে গত অর্থ বছরে ২০২১-২২  মোট ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বিষবৃক্ষ তামাক চাষবাদ হয়েছিল। ২০২২/২৩ অর্থ বছরে তামাক চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। তবে এবারে ধারণা করা হচ্ছে গত অর্থ বছর গুলোর তুলুনায় প্রায় দ্বিগুণ তামাক চাষাবাদের সম্ভবনা রয়েছে এ জেলায়। তবে অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালিয়েন্সের (আত্মা) দাবি, কৃষি বিভাগ তামাক চাষাবাদে যে পরিমাণ জমি রেকর্ড দেখান বাস্তবে এর দ্বিগুণ জমিতে তামাক চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষি বিভাগের তেমন কোনো সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকায় এ জেলার কৃষকরা তামাক চাষাবাদ থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না, ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বিষবৃক্ষ তামাকের চাষাবাদ। বরং প্রতিবছর বিভিন্ন কোম্পানির লোভনীয় অফারের কারণে নতুন নতুন তামাক চাষি যুক্ত হচ্ছেন। এছাড়াও জাপান, আকিজ, নাসির, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোসহ বেশ কিছু তামাক কোম্পানি এ জেলার পাঁচটি উপজেলায় নিজস্ব ক্রয় কেন্দ্র করেছেন। যেখানে তৈরি করেছেন বড়বড় গুদামঘর। যার ফলস্বরূপ প্রতিনিয়তই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে তামাক চাষাবাদ। সদর উপজেলার তামাক চাষের বিষয়ে কৃষক হারুন মিয়া বলেন, বর্তমানে জমিতে যে ফসল উৎপাদন করা হয় তার সঠিক দাম পাওয়া যায় না। কেননা সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ মজুরির দাম অনেক বেশি। কিন্তু তামাক চাষাবাদ করলে তার নির্দিষ্ট দাম পাওয়া যায় এবং অধিক লাভবান হওয়া যায়। সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের ইন্দ্রারপার বাজার এলাকার তামাক চাষি রাসেল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ৭ বিঘা জমিতে তামাক লাগিয়েছি। সার, পানি, কীটনাশক দিতে যে টাকা প্রয়োজন তা তামাক কোম্পানি থেকে নিতে পারবো। আগাম টাকা চাইলে আমরা টাকা পাই, তাহলে কেন তামাক চাষ করবো না। আমার এলাকায় নিযুক্ত কৃষি অফিসার মনির আমাকে কোন প্রকার কৃষি প্রণোদনা বা সুযোগ-সুবিধা দেয় না। ওনার খাতিরের লোকজনকে প্রতিবারই কৃষি প্রণোদনা বা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। কৃষি প্রণোদনা বা সুযোগ-সুবিধা চাইলে তিনি বিভিন্ন তালবাহানা করে, উনার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে স্যান্ডেল ক্ষয় হয় অথচ কৃষি প্রণোদনা বা সুবিধা পাইনা। এভাবেই কথা গুলো বলেন তিনি। আদিতমারী উপজেলার তামাক চাষি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তামাক চাষাবাদ করলে আমাদের ফসল নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তামাক কোম্পানির লোকজন নিয়মিত মাঠে এসে ফলন ভালো হওয়ার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। ফলনে কোনো রোগবালাই দেখা দিলে সার ও কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করেন। আবার সঠিক সময়ে তামাক নিজেরাই ক্রয় করে নেন, এটাই আমাদের সুবিধা।  একই এলাকার কৃষক সামিউল ইসলাম বলেন, আগে জমিতে ধান, আলু, গম চাষাবাদ করতাম। কিন্তু বাজারজাতের অভাবে দাম ভালো পেতাম না। তামাক চাষাবাদ করলে ফসল মাঠে থাকতেই তামাক কোম্পানির লোকজন তা কিনে নেয়ার নিশ্চয়তা দেন। এমন কি আমরা অগ্রিম টাকা চাইলেও তারা টাকা দিয়ে দেয় তাই অন্যান্য ফসল চাষাবাদ না করে এখন তামাক চাষাবাদ করি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তামাক কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বলেন, কোম্পানির কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা তামাক চাষিদের সব সময় খোঁজ-খবর রাখি। মাঠের সমস্যা থেকে শুধু করে বাড়ির কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা আছে কি না তাও খবর রাখি। অর্থ প্রয়োজন হলে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এছাড়া তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা ও নানা রকম পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের তামাক চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করি। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন বলেন, এ বছর লালমনিরহাট জেলায় ১৫ হাজার ৫৭ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় প্রাশ ৯ হাজার ৮ শত ৬৫ হেক্টরের বেশি জমিতে তামাক চাষ বেশি হয়েছে । তিনি বলেন, কৃষি জমি এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য তামাক চাষ মারাত্মক ক্ষতিকর। আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সভা সেমিনার ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের তামাক চাষের প্রতি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষকদের বিনামূল্যে তামাকের বীজ, সারসহ, বিনা সুদে ঋণ দেওয়া ও অধিক লাভজনক হওয়ায় কোন পরামর্শই কাজে আসছে না। যে কারণে তামাক চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার বলেন, বিষবৃক্ষ তামাক শুধু ক্ষতিকরই নয়, মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিও বটে। এজন্য আমরা কৃষকদের তামাক চাষাবাদের জন্য নিরুৎসাহিত করছি। তামাকের পরিবর্তে এ জেলার ব্রান্ডিং ফসল ভুট্টা চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি কৃষকদেরকে কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় নানা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে সাংবাদিক পরিবারের ওপর হামলা, নারীসহ আহত ৪ জন

বিষবৃক্ষ তামাক চাষের কবলে লালমনিরহাটের ফসলি জমি

আপডেট সময় ০৬:২৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

কৃষি প্রধান জেলা লালমনিরহাট। এক সময়ে ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা, কাউন, জব, আলুসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি চাষাবাদের জন্য সুনাম ছিল এ জেলার কৃষকের। কিন্তু এখন শুধু মাঠের পর মাঠ, যে দিকে চোখ পড়ে শুধু বিষবৃক্ষ তামাকের ক্ষেত। যত দিন যাচ্ছে, ততো বাড়ছে বিষবৃক্ষ তামাকের চাষাবাদ। কৃষকরা অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করলেও সেসব ফসল বাজারজাতকরনে নানা সমস্যা পোহাতে হয়। ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের আগ্রহ হারাচ্ছে সাধারণ কৃষকরা। কৃষি বিভাগের সঠিক তদারকি না থাকায় এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তামাক কোম্পানি গুলো এ অঞ্চলের সাধারণ কৃষকদের বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিয়ে বিষবৃক্ষ তামাক চাষের দিকে ঝুঁকে পড়তে বাধ্য করছে। আবার কৃষকরাও অধিক মুনাফার আশায় তামাক চাষাবাদে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, লালমনিরহাটে গত অর্থ বছরে ২০২১-২২  মোট ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বিষবৃক্ষ তামাক চাষবাদ হয়েছিল। ২০২২/২৩ অর্থ বছরে তামাক চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। তবে এবারে ধারণা করা হচ্ছে গত অর্থ বছর গুলোর তুলুনায় প্রায় দ্বিগুণ তামাক চাষাবাদের সম্ভবনা রয়েছে এ জেলায়। তবে অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালিয়েন্সের (আত্মা) দাবি, কৃষি বিভাগ তামাক চাষাবাদে যে পরিমাণ জমি রেকর্ড দেখান বাস্তবে এর দ্বিগুণ জমিতে তামাক চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষি বিভাগের তেমন কোনো সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকায় এ জেলার কৃষকরা তামাক চাষাবাদ থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না, ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বিষবৃক্ষ তামাকের চাষাবাদ। বরং প্রতিবছর বিভিন্ন কোম্পানির লোভনীয় অফারের কারণে নতুন নতুন তামাক চাষি যুক্ত হচ্ছেন। এছাড়াও জাপান, আকিজ, নাসির, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোসহ বেশ কিছু তামাক কোম্পানি এ জেলার পাঁচটি উপজেলায় নিজস্ব ক্রয় কেন্দ্র করেছেন। যেখানে তৈরি করেছেন বড়বড় গুদামঘর। যার ফলস্বরূপ প্রতিনিয়তই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে তামাক চাষাবাদ। সদর উপজেলার তামাক চাষের বিষয়ে কৃষক হারুন মিয়া বলেন, বর্তমানে জমিতে যে ফসল উৎপাদন করা হয় তার সঠিক দাম পাওয়া যায় না। কেননা সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ মজুরির দাম অনেক বেশি। কিন্তু তামাক চাষাবাদ করলে তার নির্দিষ্ট দাম পাওয়া যায় এবং অধিক লাভবান হওয়া যায়। সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের ইন্দ্রারপার বাজার এলাকার তামাক চাষি রাসেল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ৭ বিঘা জমিতে তামাক লাগিয়েছি। সার, পানি, কীটনাশক দিতে যে টাকা প্রয়োজন তা তামাক কোম্পানি থেকে নিতে পারবো। আগাম টাকা চাইলে আমরা টাকা পাই, তাহলে কেন তামাক চাষ করবো না। আমার এলাকায় নিযুক্ত কৃষি অফিসার মনির আমাকে কোন প্রকার কৃষি প্রণোদনা বা সুযোগ-সুবিধা দেয় না। ওনার খাতিরের লোকজনকে প্রতিবারই কৃষি প্রণোদনা বা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। কৃষি প্রণোদনা বা সুযোগ-সুবিধা চাইলে তিনি বিভিন্ন তালবাহানা করে, উনার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে স্যান্ডেল ক্ষয় হয় অথচ কৃষি প্রণোদনা বা সুবিধা পাইনা। এভাবেই কথা গুলো বলেন তিনি। আদিতমারী উপজেলার তামাক চাষি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তামাক চাষাবাদ করলে আমাদের ফসল নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তামাক কোম্পানির লোকজন নিয়মিত মাঠে এসে ফলন ভালো হওয়ার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। ফলনে কোনো রোগবালাই দেখা দিলে সার ও কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করেন। আবার সঠিক সময়ে তামাক নিজেরাই ক্রয় করে নেন, এটাই আমাদের সুবিধা।  একই এলাকার কৃষক সামিউল ইসলাম বলেন, আগে জমিতে ধান, আলু, গম চাষাবাদ করতাম। কিন্তু বাজারজাতের অভাবে দাম ভালো পেতাম না। তামাক চাষাবাদ করলে ফসল মাঠে থাকতেই তামাক কোম্পানির লোকজন তা কিনে নেয়ার নিশ্চয়তা দেন। এমন কি আমরা অগ্রিম টাকা চাইলেও তারা টাকা দিয়ে দেয় তাই অন্যান্য ফসল চাষাবাদ না করে এখন তামাক চাষাবাদ করি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তামাক কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বলেন, কোম্পানির কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা তামাক চাষিদের সব সময় খোঁজ-খবর রাখি। মাঠের সমস্যা থেকে শুধু করে বাড়ির কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা আছে কি না তাও খবর রাখি। অর্থ প্রয়োজন হলে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এছাড়া তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা ও নানা রকম পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের তামাক চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করি। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন বলেন, এ বছর লালমনিরহাট জেলায় ১৫ হাজার ৫৭ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় প্রাশ ৯ হাজার ৮ শত ৬৫ হেক্টরের বেশি জমিতে তামাক চাষ বেশি হয়েছে । তিনি বলেন, কৃষি জমি এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য তামাক চাষ মারাত্মক ক্ষতিকর। আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সভা সেমিনার ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের তামাক চাষের প্রতি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষকদের বিনামূল্যে তামাকের বীজ, সারসহ, বিনা সুদে ঋণ দেওয়া ও অধিক লাভজনক হওয়ায় কোন পরামর্শই কাজে আসছে না। যে কারণে তামাক চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার বলেন, বিষবৃক্ষ তামাক শুধু ক্ষতিকরই নয়, মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিও বটে। এজন্য আমরা কৃষকদের তামাক চাষাবাদের জন্য নিরুৎসাহিত করছি। তামাকের পরিবর্তে এ জেলার ব্রান্ডিং ফসল ভুট্টা চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি কৃষকদেরকে কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় নানা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।