গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ইজতেমাস্থলে পৌঁছে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে পায়ে হেঁটেই মাইলের পর মাইল এগিয়ে যাচ্ছেন মুসল্লিরা। যতদূর চোখ যায় ততদূর পর্যন্তই দেখা যাচ্ছে শুধু মুসল্লিদের ঢল। আর এসব মুসল্লিদের যাত্রাপথে সেবা দিতে উদগ্রীব হয়ে আছেন অনেকেই। কেউ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কেউবা নিজ উদ্যোগে এসব মুসল্লিদের সেবা দিতে পাগলপারা হয়ে আছেন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে পায়ে হেঁটে পথে যেসব মুসল্লিরা যাচ্ছেন, পথে পথে তাদের খেজুর, পানি ও শরবত খাওয়াতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিরা উদগ্রীব হয়ে আছেন। মুসল্লিদের যাত্রাপথে এভাবেই সবার হাতে হাতে এসব খাবার পৌঁছে দিতে দেখা গেছে।
খিলক্ষেত পার হয়ে লা মেরিডিয়ান হোটেলের সামনে হোটেলটির পক্ষ থেকে মুসল্লিদের কাছে পানি, খেজুর আর শরবত তুলে দেওয়া হচ্ছিল। এখানে দায়িত্ব পালন করা লা মেরিডিয়ান হোটেলের কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা প্রতি বছর ইজতেমার সময় এভাবে মুসল্লিদের পানি, খেজুর ও শরবত পান করাই।
যাত্রাপথে বিমানবন্দরের আগে কাউলা এলাকায় একইভাবে খেজুর আর পানি পথিক মুসল্লিদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছিলেন হামিদুর রহমান নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিবারই এমন আয়োজন করি। এটা একটা আলাদা অনুভূতির বিষয়। লাখ লাখ মুসল্লি হেঁটে হেঁটে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে যাচ্ছেন, তাদের একটু পানি ও খেজুর দিয়ে সেবা করতে পারা একটা ভালোলাগার বিষয়। মূলত মুসল্লিদের সেবার মাধ্যমে সওয়াব পাওয়ার আশায় এমন উদ্যোগ নেওয়া।
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন তাবলীগ জামাতের কাকরাইলের শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধের পর এবার ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমায় তুরাগ নদীর তীরে ধর্মীয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ১৬০ একর জায়গার বিশাল ময়দানে চাঁদোয়া টানানো স্থানে মুসল্লিতে পরিপূর্ণ। এছাড়া আশেপাশের এলাকাতেও প্রচুর পরিমাণে মুসল্লিরা অবস্থান করছেন। ঢাকা-গাজীপুরের প্রতিটি সড়ক-মহাসড়ক, আশপাশের অলিগলির মুসল্লিরাও যেন মিশে গেছে ইজতেমা ময়দানে। আশপাশ মিলেও যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই কোথাও।
দেশের মুসল্লিদের জন্য জেলাভিত্তিক আলাদা ৯১টি খিত্তা বা ভাগ করা হয়েছে। এবারও দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব সমাপ্তির পর ৫ দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আগামী ২০ জানুয়ারি শুরু হবে। আগামীকাল সোমবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব। এই পর্বে অংশ নিয়েছেন মাওলানা জোবায়ের আহমেদের অনুসারীরা।
পরের পর্বে আগামী ২০ জানুয়ারি ফজর থেকে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নেবেন মাওলানা সাদ আহমাদ কান্ধলভীপন্থি মাওলানা অনুসারী মুসল্লিরা। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার এবারের আয়োজন।