প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থান থেকে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) বাস্তবায়নে ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। ২০২৩-২০৫০ সালের বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতির পরিবর্তনশীল গতিপথের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে একটি জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্রে পরিণত করেছে। রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ‘গ্লোবাল হাব অন লোকাললি লেড অ্যাডাপটেশন’ খোলার ঘোষণা দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে বসবাস করে আসছে এবং বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যসব বিপদের বিরুদ্ধে এক ধরনের স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করেছে। তারা প্রকৃতির পরিবর্তনশীল গতিপথের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে একটি জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্রে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, সরকার সম্পদ ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সমাধানগুলো সমর্থন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জিসিএ চেয়ারম্যান সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, জিসিএ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. প্যাট্রিক ভারকুইজেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন।
বাংলাদেশে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে জাপানের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান : বাংলাদেশে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে জাপানের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি লাভজনক স্থান। জাপানের বেসরকারি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি রোববার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কেএম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প যেমন মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং মেট্রোরেল বাস্তবায়নে তিনি জাপানের সহায়তার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের অব্যাহত সমর্থন কামনা করেন। রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য ভাসানচরের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে তারা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলেন। জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। আগামী দিনেও এ উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।