সমুদ্র পথে রপ্তানিকৃত রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারে বেঁধে দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা শনিবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে।
ফলে এখন থেকে পশ্চিমাদের সমুদ্র পথে আসা রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার বা এর চেয়ে কম দামে কিনতে হবে।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা করে রাশিয়া। পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করছিল, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে তেল, গ্যাস ও কয়লার মতো জ্বালানি বিক্রি করে সেগুলোর লভ্যাংশ ব্যবহার করছে রাশিয়া। জ্বালানি বেঁচে মস্কো যেন খুব বেশি লাভ না করতে পারে সেজন্য তাদের তেলের একটি নির্দিষ্ট দাম বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় বিশ্বের সাত বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশের জোট জি-৭।
সঙ্গে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম একটি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এমন প্রস্তাব দেয় তারা।
এর অংশ হিসেবেই সমুদ্র পথে রপ্তানি করা রাশিয়ার প্রতি ব্যারল অপরিশোধিত তেলের দাম ৬০ ডলারে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে জি-৭ জোট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়া যোগ দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রও এটিকে সমর্থন জানিয়েছে।
এদিকে প্রথমে রাশিয়ার তেলের মূল্য ৭৫ ডলারে বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্ত এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল পোল্যান্ড। তারা জানিয়েছিল, রাশিয়া এখন এর চেয়ে কম দামে তেল বিক্রি করছে। ফলে তাদের দাম বেঁধে দেওয়ার বিষয়টিরই কোনো মূল্য থাকবে না। পোল্যান্ডের আপত্তির মুখে তা ৬০ ডলারে নির্ধারণ করা হয়।
এখন রাশিয়া চাইলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জি-৭ এবং অস্ট্রেলিয়ায় এর চেয়ে বেশি মূল্যে তেল বিক্রি করতে পারবে না। কারণ জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলোতেই গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ পরিবহণ ও ইনসুরেন্স প্রতিষ্ঠানগুলো অবস্থিত।
অবশ্য ইউরোপিয়ানদের বেঁধে দেওয়া এ দাম আপাতত খুব বেশি কার্যকরী হবে না বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমে যাওয়ায় রাশিয়া এখন প্রতি ব্যারেল তেল ৬০ ডলারের নিচে বিক্রি করছে।
এদিকে এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, পশ্চিমাদের বেঁধে দেওয়া দামে তেল বিক্রি করবে না রাশিয়া।