আসাদ সরকার পতনের পর আবারও সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে তাদের দূতাবাস খোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ইরান।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দেশটির সরকারের মুখপাত্র ফাতেমা মোহাজেরানি এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে এই মুখপাত্র বলেন, সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাস চালু করার বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফাতেমা মোহাজেরানি জানান, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর ইরান নতুন একটি কূটনৈতিক অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সিরিয়া এবং ইরানের রাজধানীতে দূতাবাসগুলো পুনরায় চালুর জন্য প্রস্তুত। এই বিষয়ে আমরা কূটনৈতিক আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছি।
আসাদ সরকারের পতন এবং ইরানের প্রভাব
সিরিয়ায় ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধ শেষে চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামের (এইচটিএস) এক ঝটিকা অভিযানে প্রেসিডেন্ট আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর তিনি দেশ ছেড়ে মিত্র রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।
দীর্ঘ এই যুদ্ধে ইরান আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এমনকি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীও মোতায়েন করেছিল। তবে আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় ইরানের প্রভাব কমতে শুরু করে। নতুন শাসক এবং এইচটিএস নেতা আহমেদ আল শারা ইরানের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন।
ইরানি নাগরিকদের নিরাপত্তা সংকট
আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ইরানি নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। দামেস্কে ইরানের দূতাবাসেও হামলা হয়। এ কারণে অনেক ইরানি নাগরিক সিরিয়া ছেড়ে চলে গেছেন।
কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা
গত ১৫ ডিসেম্বর সিরিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠী ইরানের রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে কিছু সুপারিশ গ্রহণ করে। এতে সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং ইরানের জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিতের বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
ইরান এবং সিরিয়া দুই দেশই এখন কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে দূতাবাস খোলার উদ্যোগ সফল হলেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে এগোবে, তা সময়ই বলে দেবে।