জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতরভাবে লঙ্ঘণের অভিযোগে চীন এবং ইরানকে ‘উদ্বেগজনক রাষ্ট্র’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
চীন ও ইরানের আগে বিভিন্ন সময়ে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া দেশগুলো হলো আলজেরিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কোমোরোস, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তাজিকিস্তান, কিউবা, ইরিত্রিয়া ও তুর্কমেনিস্তান।
এছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের সঙ্গে ঘনিষ্ট বেসরকারি আধা সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপকেও ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ এবং ইউক্রেনে এই বাহিনী কাজ করছে।
বিবৃতিতে ব্লিনকেন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকার এবং সরকারঘনিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠী কেবল ধর্মবিশ্বাসের অজুহাতে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করছে, হুমকি দিচ্ছে, কারাগারে বন্দি রাখছে এমনকি হত্যাও করছে।’
‘এই ধরনের নিপীড়নের প্রতিক্রিয়ায়ি যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’
তবে উদ্বেগজনক রাষ্ট্রের তালিকায় থাকা কোনো দেশ যদি এখান থেকে নিজেদের নাম মুছতে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা চায়, সেক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হবে বলেও বিবৃতিতে আশ্বা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বোরকা ও হিজাব ঠিকমতো না পরার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা ২২ বছরের তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে গত অক্টোবরের মাঝামাঝি এক অভূতপূর্ব সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসের বিক্ষোভে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেছে ৩ শতাধিক মানুষের, সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও প্রায় ১৪ হাজার জনকে।
ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী শাসকদের বিরুদ্ধে লংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। দেশটির ধর্মীয় সংখ্যালঘু বাহা’ই সম্প্রদায়ের লোকজনকে শাসকগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ নিপীড়ণের মধ্যে রেখেছে। চলতি বছর এই দমন-পীড়ণ আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যম।