সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট থাকার দায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) তিন সদস্যকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভারতের একটি আদালত। সোমবার ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) বিশেষ আদালত জেএমবির ওই তিন সদস্যকে এই সাজা দিয়েছে।
এনআইএর একজন মুখপাত্র বলেছেন, দণ্ডপ্রাপ্ত নাজির শেখ ওরফে পাতলা আনাস, হাবিবুর রহমান শেখ এবং মোশারফ হোসাইন নামের জেমএমবির ওই তিন সদস্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল; সেই মামলায় আদালতের বিশেষ বিচারক তাদের জরিমানাও করেছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেছেন, সোমবার ভারতীয় দণ্ডবিধি, বেআইনি কর্মকাণ্ড (প্রতিরোধ) আইন ও অস্ত্র আইনের বিভিন্ন ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ওই তিনজন।
তিনি বলেন, বেঙ্গালুরুতে জেএমবির একটি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ইলেক্ট্রনিকস যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক উপাদান, বোমা তৈরির জন্য ব্যবহৃত কন্টেইনার এবং ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, ডিজিটাল ক্যামেরা এবং অপরাধমূলক হাতে লেখা নথি জব্দের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছিল।
এনআইএর ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ২০১৯ সালের ৭ জুলাই কর্ণাটক পুলিশ সোলাদেভানাহালি পুলিশ স্টেশনে মামলাটি দায়ের করেছিল। পরে একই বছরের ২৯ জুলাই এএনআই পুনরায় ওই মামলা নথিভূক্ত করে।
এর আগে ২০১৮ সালে ওই তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডাকাতি সংক্রান্ত আরও চারটি মামলা দেশের বিভিন্ন জায়গায় দায়ের করা হয়েছিল। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল সেসব মামলাও পুনরায় নথিভুক্ত করে এনআইএ।
ভারতের এই জাতীয় তদন্ত সংস্থা বলেছে, তদন্ত শেষ করার পর ডাকাতির সব মামলায় জেএমবির ওই তিন সদস্যের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালতে বিচারের সময় এই চার মামলাকে ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া মামলার সাথে যুক্ত করা হয়।
এনআইএয়ের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতজুড়ে জেএমবির কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটানোর লক্ষ্যে অভিযুক্তরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডাকাতির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করতেন। পাশাপাশি জেএমবির এই সদস্যরা বিস্ফোরক দ্রব্য সংগ্রহ এবং একটি রকেট লঞ্চারের পরীক্ষা চালিয়েছিল।
ডাকাতির মাধ্যমে লুট করা স্বর্ণ বিক্রি করতেন নাজির শেখ এবং অন্যরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে জেএমবির জন্য তহবিল সংগ্রহ করতেন বলে জানিয়েছেন এনআইএর ওই মুখপাত্র।