রাজধানীর উত্তরাপূর্ব থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি ও অভিনেত্রী শমী কায়সারের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিন আদালতে শমী কায়সারকে রিমান্ডে নেওয়ার শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী।
রিমান্ড শুনানির সময় অভিনেত্রী শমী কায়সার বলেছেন, ‘আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনো ধরনের অর্থ দেইনি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা অন্যায়। আমি কখনো কাউকে নিয়ে কটাক্ষ করিনি।’
শমী কায়সার আরও বলেন, ‘আমি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। এছাড়া ১৮ জুলাইয়ের যেদিনের ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেদিন আমি ই-ক্যাবের মিটিংয়ে ছিলাম। সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ায় তা যেন দ্রুত চালু করা হয় সে বিষয়ে আমরা সরকারকে অবহিত করি। আন্দোলনে এতো মানুষের মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারিনি।’
এদিন শমী কায়সারের আইনজীবী কারাগারে ডিভিশনের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে দেন। তবে তিনি অসুস্থ থাকলে যথাযথ চিকিৎসার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন।
গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাতে রাজধানীর উত্তরার ৪নং সেক্টরের ৬নং রোডের ৫৩নং বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে , বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীসহ অন্যান্যরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। উত্তরা পূর্ব থানার ৪নং সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি শমী কায়সার।
শমী কায়সার আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া, ২০২৪-র নির্বাচনে ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থন চেয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে আসনটি থেকে মনোনয়ন পাননি তিনি। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন তিনি ই-ক্যাবের সভাপতি ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ১৪ আগস্ট ই-ক্যাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন শমী কায়সার।