সিনেমার কাজে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন ঢালিউড খল-অভিনেতা মিশা সওদাগর। ‘বরবাদ’ সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত এ অভিনেতা। এ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন শাকিব খান।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বন্ধু মৌসুমীকে নিয়ে কথার শুরুতেই এ অভিনেতা বলেন, ‘মৌসুমী যেমন সুন্দরী, তেমনি ওর মনটাও সুন্দর। শুধু তা–ই নয়, ওর মনটা অনেক নরম। কেউ কষ্ট ভাগাভাগি করলে ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। জীবন দিয়ে সে চেষ্টা করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। ভালো একটা মনের অধিকারী মৌসুমী।’
প্রায় তিন দশকের সম্পর্ক। পরিচয় থেকে সেই সম্পর্ক এখন বন্ধুত্বের মধ্যেই রয়ে গেছে। কখনো সম্পর্কের টানাপোড়েন হয়নি। ৩ নভেম্বর ছিল মৌসুমীর জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে মৌসুমীর কাছে ঋণ স্বীকার করলেন মিশা বললেন তাদের বন্ধুত্বের অজানা গল্প।
নব্বই দশকে পরিচিতি বাড়তে থাকে মিশা সওদাগরের। একসময় তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি নাম লেখান প্রযোজনায়। প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন মান্না ও মৌসুমী। সেই সিনেমার পুরো সময়ে বন্ধুর মতো পাশে ছিলেন মৌসুমী।
মিশা বলেন, ‘সেই সময়ে ছয় লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিত মৌসুমী। কিন্তু আমি সে সময় জোর করে মৌসুমীকে নামমাত্র টাকা দিতে পেরেছিলাম। এমনকি কোনো কস্টিউম সে নেয়নি। নিজেই নিয়ে এসেছে। সময়মতো আমার শুটিংয়ে এসেছে, শেষ করেছে। তাকে টাকা তো দিতেই পারিনি তখন, এমনকি এ নিয়ে সে কোনো দিন কোনো কথাও বলেনি।’
সিনেমার পর্দা থেকেই তাদের সম্পর্ক পারিবারিক পর্যায়ে গড়িয়েছে। শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সময়েও নানাভাবে মৌসুমীর কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছেন তিনি। মৌসুমীর সঙ্গে পরিচয় থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কীভাবে তৈরি হলো?—এমন প্রশ্নে মিশা বলেন, আমি মোহামেডানের ভক্ত ছিলাম। নিয়মিত খেলা দেখতাম। সেই সময় মোহামেডানের গেটে আড্ডা দিতাম। তখন পরিচয় হয় ওমর সানীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, সেই প্রথম পরিচয় ও বন্ধুত্ব। পরে নতুন মুখের সন্ধানে গিয়ে দেখেন ওমর সানী এফডিসিতে। একই অঙ্গনের মানুষ হওয়ায় সেই থেকে ওমর সানীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গাঢ় হতে থাকে।
মিশা বলেন, ‘যেহেতু ওমর সানীর সঙ্গে তত দিনে ভালো পরিচয় হয়ে গেছে। সিনেমায় ভালো করছে। তখন নতুন মুখের সন্ধান থেকে আমিও কাজ করছি। এমন সময় একটা প্রস্তাব এলো— ওমর সানী ও মৌসুমীর সঙ্গে কাজ করার। সিনেমার নাম ‘প্রিয় তুমি’। হাফিজ উদ্দিন পরিচালিত সেই সিনেমার শুটিং থেকেই আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সূচনা আরও গাঢ় হয়। সেই সুসম্পর্ক এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘ওরা প্রেম করত, আমি আঁচ করতে পেরেছিলাম। আমি কিছুটা জানতাম। কোনো দিন কিছু বলিনি। সবসময় একে অন্যের পাশে থাকতাম। আমি ওর সঙ্গে যে কোনো সময় দেখা করতে যেতাম। যদি বলেছি নির্বাচন করতে হবে, সে না করেনি। কারণ সেই আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছিল। ভালো মনের মানুষ মৌসুমী। ওর জন্য সব সময় শুভকামনা।’