দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যানের স্ত্রী হামিদা রহমান এবং তার ছেলে মো. হাসানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই দুজন বর্তমানে সিটি গ্রুপের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতারণার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয়। দুদকের উপপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-৬) সিলেটের দায়িত্বে থাকা রিজিয়া খাতুন স্বাক্ষরিত এক অনুমোদন পত্রে দেখা যায়, সিটি গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যানের ছেলে মো. হাসান ও স্ত্রী হামিদা রহমানসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।
এছাড়াও মৌলভীবাজার জুরী রেঞ্জের তৎকালীন রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ফরেস্ট রেঞ্জার মো. কামরুল মোজাহীদ এবং মৌলভীবাজার জুরী রেঞ্জের তৎকালীন বিট কর্মকর্তা, বর্তমানে মঠবাড়িয়া সামাজিক বনায়ন কেন্দ্রের ফরেস্টার ফেরদৌস খান যোগসাজশের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এই চারজনের নামেই মামলা করতে যাচ্ছে দুদক।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করার জন্য দুদক অনুমোদন দিয়েছে। সেই সঙ্গে মামলা করার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে এবং মামলা রুজুর পর এজাহারের কপি, তদন্তকারী ও তদারককারী কর্মকর্তা নিয়োগের চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিটি গ্রুপ এবং নিউ সাগরনাল টি কোং লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডিং, সাগরনাল হ্যাচারী ও ফিশারীজ লিমিটেডের পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যানের ছেলে মো. হাসান ও স্ত্রী হামিদা রহমান।
এর আগে ২০২২ সালের ১৪ জুলাই সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) করা এক মামলায় সেই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
সিটি গ্রুপের ভোজ্যতেলে সরকারের নির্ধারিত মাত্রার ভিটামিন এ না পাওয়ায় ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর আদালতে মামলা করে বিএসটিআই। সেই মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত বছর ২৫ ডিসেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফজলুর রহমান মারা যান।
সিটি গ্রুপের ৪০টিরও বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আটা-ময়দা, ভোজ্য তেল ও চিনি পরিশোধন, পোলট্রি খাদ্য ও চাল-ডালসহ আরও বিভিন্ন খাতে তাদের ব্যবসা।
সিটি গ্রুপের ব্র্যান্ড ম্যানেজার রুবায়েত আহমেদ আমাদের মাতৃভুমিকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি অবহিত নই। কোম্পানির কাদের নামে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক তাও জানি না। এটা টপ ম্যানেজমেন্ট জানেন।’