ঢাকা ০৭:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

২২ দেশে ২৪ হাজার কোটি ডলার খরচ চীনের

অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে উত্তোলনে বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভভুক্ত (বিআরআই) ২২টি উন্নয়নশীল দেশকে ২৪০ বিলিয়ন (২৪ হাজার কোটি) ডলারের জরুরি ঋণ (বেইল আউট) দিয়েছে চীন। ২০০৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এ ঋণ দেওয়া হয়েছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে  ঋণ প্রদানের পরিমাণ আরও বেড়েছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছেন কয়েকজন গবেষক।

মূলত বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অবকাঠামো নির্মাণ করতে গিয়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় এসব দেশকে সহায়তা করার চেষ্টা করেছে বেইজিং।

বিশ্বব্যাংকের হার্ভাড কেনেডি স্কুল, এইডডাটা এবং কেইল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনোমির সমন্বয়ে গঠিত গবেষক দল জানিয়েছে, এসব জরুরি ঋণের বেশিরভাগই চীন দিয়েছে ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে। বিশেষ করে মধ্যআয়ের দেশগুলোকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। চীনের এ সহায়তা পাওয়ার তালিকায় রয়েছে আর্জেন্টিনা, মঙ্গোলিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দেশ।

বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কয়েকশ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে বেইজিং। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে দেশটি অবকাঠামো নির্মাণের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। কারণ এসব অর্থ যেসব প্রজেক্টে খরচ করা হয়েছে, সেগুলো থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী লভ্যাংশ পাওয়া যায়নি।

বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও এই গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম গবেষক কার্মেন রেইনহার্ট বলেছেন, ‘বেইজিং মূলত নিজ ব্যাংককে বাঁচাতে চাইছে। এ কারণে তারা জরুরি ঋণ দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে।’

গবেষণায় পাওয়া গেছে, ২০১০ সালে চীনের আন্তর্জাতিক জরুরি ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ৫ শতাংশ ছিল। কিন্তু সেটি ২০২২ সালের মধ্যে বেড়ে ৬০ শতাংশে উপনীত হয়েছে।

চীনের সবচেয়ে বেশি ১১১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে পাকিস্তান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে মিসর। আর নয়টি দেশ ১ বিলিয়নের কম ডলার পেয়েছে।

গবেষণায় বের হয়ে এসেছে, চীনের পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) সবচেয়ে বেশি ১৭০ বিলিয়ন জরুরি ঋণ প্রদান করেছে। ব্যাংকটির ঋণ পাওয়ার তালিকায় রয়েছে সুরিনাম, শ্রীলঙ্কা এবং মিসর। এরমধ্যে ব্রিজ লোন ছিল ৭০ বিলিয়ন ডলার।

এই গবেষণায় কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমালোচনা করা হয়েছে, যেগুলো পিবিওসির সোয়াপ লাইন ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে তাদের বৈদশিক রিজার্ভের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।

চীনের জরুরি ঋণ নিয়ে করা এ গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক ব্র্যাড পার্কস বলেছেন, চীনের ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ‘অস্বচ্ছ এবং সমন্বয়হীন।’

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ঘোষণা দিয়েছে— জাম্বিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং ঘানার মতো কয়েকটি দেশের সঙ্গে ঋণ কাঠামো পুনর্গঠন করা হবে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

২২ দেশে ২৪ হাজার কোটি ডলার খরচ চীনের

আপডেট সময় ০২:০১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে উত্তোলনে বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভভুক্ত (বিআরআই) ২২টি উন্নয়নশীল দেশকে ২৪০ বিলিয়ন (২৪ হাজার কোটি) ডলারের জরুরি ঋণ (বেইল আউট) দিয়েছে চীন। ২০০৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এ ঋণ দেওয়া হয়েছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে  ঋণ প্রদানের পরিমাণ আরও বেড়েছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছেন কয়েকজন গবেষক।

মূলত বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অবকাঠামো নির্মাণ করতে গিয়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় এসব দেশকে সহায়তা করার চেষ্টা করেছে বেইজিং।

বিশ্বব্যাংকের হার্ভাড কেনেডি স্কুল, এইডডাটা এবং কেইল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনোমির সমন্বয়ে গঠিত গবেষক দল জানিয়েছে, এসব জরুরি ঋণের বেশিরভাগই চীন দিয়েছে ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে। বিশেষ করে মধ্যআয়ের দেশগুলোকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। চীনের এ সহায়তা পাওয়ার তালিকায় রয়েছে আর্জেন্টিনা, মঙ্গোলিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দেশ।

বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কয়েকশ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে বেইজিং। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে দেশটি অবকাঠামো নির্মাণের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। কারণ এসব অর্থ যেসব প্রজেক্টে খরচ করা হয়েছে, সেগুলো থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী লভ্যাংশ পাওয়া যায়নি।

বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও এই গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম গবেষক কার্মেন রেইনহার্ট বলেছেন, ‘বেইজিং মূলত নিজ ব্যাংককে বাঁচাতে চাইছে। এ কারণে তারা জরুরি ঋণ দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে।’

গবেষণায় পাওয়া গেছে, ২০১০ সালে চীনের আন্তর্জাতিক জরুরি ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ৫ শতাংশ ছিল। কিন্তু সেটি ২০২২ সালের মধ্যে বেড়ে ৬০ শতাংশে উপনীত হয়েছে।

চীনের সবচেয়ে বেশি ১১১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে পাকিস্তান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে মিসর। আর নয়টি দেশ ১ বিলিয়নের কম ডলার পেয়েছে।

গবেষণায় বের হয়ে এসেছে, চীনের পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) সবচেয়ে বেশি ১৭০ বিলিয়ন জরুরি ঋণ প্রদান করেছে। ব্যাংকটির ঋণ পাওয়ার তালিকায় রয়েছে সুরিনাম, শ্রীলঙ্কা এবং মিসর। এরমধ্যে ব্রিজ লোন ছিল ৭০ বিলিয়ন ডলার।

এই গবেষণায় কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমালোচনা করা হয়েছে, যেগুলো পিবিওসির সোয়াপ লাইন ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে তাদের বৈদশিক রিজার্ভের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।

চীনের জরুরি ঋণ নিয়ে করা এ গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক ব্র্যাড পার্কস বলেছেন, চীনের ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ‘অস্বচ্ছ এবং সমন্বয়হীন।’

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ঘোষণা দিয়েছে— জাম্বিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং ঘানার মতো কয়েকটি দেশের সঙ্গে ঋণ কাঠামো পুনর্গঠন করা হবে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে।