ঢাকা ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রমজানের সূচনা ঘোষণায় আমিরাতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বহু দেশে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। গত মঙ্গলবার চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বুধবার শাবানের ৩০তম দিন পূর্ণ হয় এবং সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় মাহে রমজান। এদিকে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য মেনে কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে পবিত্র এই মাসের সূচনা ঘোষণা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

এদিন সন্ধ্যায় আমিরাতের বিভিন্ন স্থান থেকে ঐতিহ্যবাহী কামান থেকে দু’টি গোলা নিক্ষেপ করে রমজানকে স্বাগত জানায় দেশটি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় আরব আমিরাতের বাসিন্দারা দু’টি উচ্চ শব্দ শুনতে পান। মূলত পবিত্র রমজান মাসের শুরুর ঘোষণা দেওয়ার জন্য দেশটির বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচিত স্থানে ঐতিহ্যবাহী কামান থেকে দু’টি গোলা নিক্ষেপ করা হয়।

এদিন সন্ধ্যায় পবিত্র মাসের শুরুকে স্বাগত জানাতে আরব আমিরাতে যেসব স্থান থেকে কামানের গোলাবর্ষণ করা হয় তার মধ্যে ঐতিহাসিক কাসর আল হোসন ফোর্ট এবং দুবাইয়ের এক্সপো সিটিও রয়েছে।

অবশ্য কামান থেকে গোলাবর্ষণের এই শব্দ আমিরাতের বাসিন্দারা পুরো রমজান জুড়েই শুনতে পাবেন। দুবাইয়ের এক্সপো সিটির পাশাপাশি বুর্জ খলিফার কাছে, দুবাই ফেস্টিভ্যাল সিটি, মদিনাত জুমেইরাহ, দামাক এবং হাত্তা গেস্ট হাউস-সহ বেশ কয়েকটি স্থান থেকে কামানের গোলার শব্দ পবিত্র মাসজুড়ে প্রতিধ্বনিত হবে।

মূলত প্রতিদিনই ইফতারের সময় জানান দিতে আরব আমিরাতের বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে আটটি কামান থেকে ছোড়া হবে গোলা। প্রথা অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাস শুরুর ঘোষণা দিতে দুইবার গোলা নিক্ষেপ করা হয় এবং ইফতারের সময় ঘোষণার জন্য প্রতিদিন একবার কামান থেকে গোলা ছোড়া হয়।

এছাড়া রমজান মাস শেষে ঈদুল ফিতর ঘোষণা করার জন্য পরপর দু’বার এবং ঈদের দিন সকালে আবারও দু’বার গোলাবর্ষণ করা হয়।

১৯৬০ এর দশকের শুরু থেকে আমিরাতে ইফতারের সময় জানান দিতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ রমজানের একটি জনপ্রিয় ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে এই রীতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমাজে আরব সংস্কৃতি ও ইসলামিক রীতিনীতি, ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে বলেও মনে করা হয়। এছাড়া ইফতারের সময় কামান থেকে গোলা নিক্ষেপের এই কার্যক্রম দুবাই টিভিতে সম্প্রচার করা হয়।

কিছু ইতিহাসবিদের মতে, ১০ম শতকে মিশরে প্রথম এই প্রথাটি শুরু হয়েছিল। সেসময় মুসল্লিদের ইফতারের সময় জানাতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ করা হতো। আর দুবাইতে এই প্রথা শুরু হয় ১৯৬০ এর দশকে। আমিরাতের এসব কামান ১৯৪৫ সালে ব্রিটেনে তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

উল্লেখ্য, বুধবার গভীর রাতে পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান।

এর আগে গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের আকাশে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা যায়নি। এতে করে বুধবার ৩০ দিন পূর্ণ হয় শাবান মাসের। আর বৃহস্পতিবার থেকে সৌদি আরব-সহ বিশ্বের বহু দেশে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে।

রমজান মাসে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি (মৌলিক ধর্মীয় কর্তব্য)। পবিত্র এই মাসটি আত্ম-পরীক্ষার এবং ধর্মীয় একনিষ্ঠতা বৃদ্ধির সময়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

রমজানের সূচনা ঘোষণায় আমিরাতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ

আপডেট সময় ০১:০৩:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বহু দেশে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। গত মঙ্গলবার চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বুধবার শাবানের ৩০তম দিন পূর্ণ হয় এবং সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় মাহে রমজান। এদিকে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য মেনে কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে পবিত্র এই মাসের সূচনা ঘোষণা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

এদিন সন্ধ্যায় আমিরাতের বিভিন্ন স্থান থেকে ঐতিহ্যবাহী কামান থেকে দু’টি গোলা নিক্ষেপ করে রমজানকে স্বাগত জানায় দেশটি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় আরব আমিরাতের বাসিন্দারা দু’টি উচ্চ শব্দ শুনতে পান। মূলত পবিত্র রমজান মাসের শুরুর ঘোষণা দেওয়ার জন্য দেশটির বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচিত স্থানে ঐতিহ্যবাহী কামান থেকে দু’টি গোলা নিক্ষেপ করা হয়।

এদিন সন্ধ্যায় পবিত্র মাসের শুরুকে স্বাগত জানাতে আরব আমিরাতে যেসব স্থান থেকে কামানের গোলাবর্ষণ করা হয় তার মধ্যে ঐতিহাসিক কাসর আল হোসন ফোর্ট এবং দুবাইয়ের এক্সপো সিটিও রয়েছে।

অবশ্য কামান থেকে গোলাবর্ষণের এই শব্দ আমিরাতের বাসিন্দারা পুরো রমজান জুড়েই শুনতে পাবেন। দুবাইয়ের এক্সপো সিটির পাশাপাশি বুর্জ খলিফার কাছে, দুবাই ফেস্টিভ্যাল সিটি, মদিনাত জুমেইরাহ, দামাক এবং হাত্তা গেস্ট হাউস-সহ বেশ কয়েকটি স্থান থেকে কামানের গোলার শব্দ পবিত্র মাসজুড়ে প্রতিধ্বনিত হবে।

মূলত প্রতিদিনই ইফতারের সময় জানান দিতে আরব আমিরাতের বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে আটটি কামান থেকে ছোড়া হবে গোলা। প্রথা অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাস শুরুর ঘোষণা দিতে দুইবার গোলা নিক্ষেপ করা হয় এবং ইফতারের সময় ঘোষণার জন্য প্রতিদিন একবার কামান থেকে গোলা ছোড়া হয়।

এছাড়া রমজান মাস শেষে ঈদুল ফিতর ঘোষণা করার জন্য পরপর দু’বার এবং ঈদের দিন সকালে আবারও দু’বার গোলাবর্ষণ করা হয়।

১৯৬০ এর দশকের শুরু থেকে আমিরাতে ইফতারের সময় জানান দিতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ রমজানের একটি জনপ্রিয় ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে এই রীতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমাজে আরব সংস্কৃতি ও ইসলামিক রীতিনীতি, ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে বলেও মনে করা হয়। এছাড়া ইফতারের সময় কামান থেকে গোলা নিক্ষেপের এই কার্যক্রম দুবাই টিভিতে সম্প্রচার করা হয়।

কিছু ইতিহাসবিদের মতে, ১০ম শতকে মিশরে প্রথম এই প্রথাটি শুরু হয়েছিল। সেসময় মুসল্লিদের ইফতারের সময় জানাতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ করা হতো। আর দুবাইতে এই প্রথা শুরু হয় ১৯৬০ এর দশকে। আমিরাতের এসব কামান ১৯৪৫ সালে ব্রিটেনে তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

উল্লেখ্য, বুধবার গভীর রাতে পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান।

এর আগে গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের আকাশে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা যায়নি। এতে করে বুধবার ৩০ দিন পূর্ণ হয় শাবান মাসের। আর বৃহস্পতিবার থেকে সৌদি আরব-সহ বিশ্বের বহু দেশে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে।

রমজান মাসে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি (মৌলিক ধর্মীয় কর্তব্য)। পবিত্র এই মাসটি আত্ম-পরীক্ষার এবং ধর্মীয় একনিষ্ঠতা বৃদ্ধির সময়।