ঢাকা ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

১৬৭ বছরের পুরোনো ক্রেডিট সুইস ব্যাংক কিনছে ইউবিএস

ব্যাংকিংখাতে বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যে বিপর্যয়ের মুখে পড়া সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট সুইস ব্যাংক কিনে নিচ্ছে বৃহত্তম সুইস ব্যাংক ইউবিএস। রোববার (১৯ মার্চ) ঐতিহাসিক এক চুক্তিতে ১৬৭ বছরের পুরোনো ক্রেডিট সুইস কিনতে সম্মত হয় প্রতিদ্বন্দ্বী এই ব্যাংকটি।

মূলত এই দু’টি ব্যাংক ছিল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে ক্রেডিট সুইস সংকটের মুখে পড়ার পর সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় ইউবিএস। সোমবার (২০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্তৃত পরিসরের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সংকট শুরু হওয়ার পর বিপর্যয়ের মুখে পড়া প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রেডিট সুইস ব্যাংকটিকে রক্ষার জন্য ৩.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউবিএস। রোববার আলোচনার পর ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এই তথ্য সামনে আসে।

সরকার বলেছে, সুইজারল্যান্ডে এবং এর বাইরে ছড়িয়ে পড়া অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধের জন্য ব্যাংক কিনে নেওয়ার এই চুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সুইজারল্যান্ড সরকারের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে। চুক্তির অংশ হিসাবে ইউবিএসকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ‘লিকুইডিটি লাইন’ দিতে সম্মত হয়েছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। অর্থাৎ ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে নগদ প্রবাহের প্রয়োজনে সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে সাহায্য পাবে ইউবিএস।

মূলত দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কায় সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতন ঘটছিল ক্রেডিট সুইসের। ১৬৭ বছরের পুরোনো ক্রেডিট সুইস যদি বন্ধ হয়ে যেত, তাহলে গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল।

এদিকে এই চুক্তি সম্পন্ন করতে নিজেদের দেশের আইন বদল করতে চলেছে সুইজারল্যান্ড। সাধারণত, এই ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাভুটি প্রয়োজন হয়। তবে এই চুক্তির ক্ষেত্রে যাতে শেয়ারহোল্ডারদের ‘হস্তক্ষেপ’ বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে জন্য আইনে পরিবর্তন আনছে দেশটির সরকার।

উল্লেখ্য, বাজারে অংশিদারিত্বের দিক থেকে বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম ব্যাংক ইউবিএস। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই ছিল ক্রেডিট সুইস। সম্প্রতি ক্রেডিট সুইস তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কথা জানায়।

আর এরপরই শেয়ারবাজারে ক্রেডিট সুইসের শেয়ারের ব্যাপক দরপতন শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে ক্রেডিট সুইসকে তহবিল দিয়েছিল সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

এমন অবস্থায় সোমবার শেয়ারবাজার খোলার আগেই রোববার ইউবিএস’র সঙ্গে বসে এই চুক্তি কার্যকর করতে মধ্যস্থতা করে সুইজারল্যান্ড সরকারের প্রতিনিধিরা।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

১৬৭ বছরের পুরোনো ক্রেডিট সুইস ব্যাংক কিনছে ইউবিএস

আপডেট সময় ১২:৩৯:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩

ব্যাংকিংখাতে বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যে বিপর্যয়ের মুখে পড়া সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট সুইস ব্যাংক কিনে নিচ্ছে বৃহত্তম সুইস ব্যাংক ইউবিএস। রোববার (১৯ মার্চ) ঐতিহাসিক এক চুক্তিতে ১৬৭ বছরের পুরোনো ক্রেডিট সুইস কিনতে সম্মত হয় প্রতিদ্বন্দ্বী এই ব্যাংকটি।

মূলত এই দু’টি ব্যাংক ছিল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে ক্রেডিট সুইস সংকটের মুখে পড়ার পর সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় ইউবিএস। সোমবার (২০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্তৃত পরিসরের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সংকট শুরু হওয়ার পর বিপর্যয়ের মুখে পড়া প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রেডিট সুইস ব্যাংকটিকে রক্ষার জন্য ৩.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউবিএস। রোববার আলোচনার পর ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এই তথ্য সামনে আসে।

সরকার বলেছে, সুইজারল্যান্ডে এবং এর বাইরে ছড়িয়ে পড়া অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধের জন্য ব্যাংক কিনে নেওয়ার এই চুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সুইজারল্যান্ড সরকারের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে। চুক্তির অংশ হিসাবে ইউবিএসকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ‘লিকুইডিটি লাইন’ দিতে সম্মত হয়েছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। অর্থাৎ ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে নগদ প্রবাহের প্রয়োজনে সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে সাহায্য পাবে ইউবিএস।

মূলত দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কায় সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতন ঘটছিল ক্রেডিট সুইসের। ১৬৭ বছরের পুরোনো ক্রেডিট সুইস যদি বন্ধ হয়ে যেত, তাহলে গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল।

এদিকে এই চুক্তি সম্পন্ন করতে নিজেদের দেশের আইন বদল করতে চলেছে সুইজারল্যান্ড। সাধারণত, এই ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাভুটি প্রয়োজন হয়। তবে এই চুক্তির ক্ষেত্রে যাতে শেয়ারহোল্ডারদের ‘হস্তক্ষেপ’ বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে জন্য আইনে পরিবর্তন আনছে দেশটির সরকার।

উল্লেখ্য, বাজারে অংশিদারিত্বের দিক থেকে বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম ব্যাংক ইউবিএস। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই ছিল ক্রেডিট সুইস। সম্প্রতি ক্রেডিট সুইস তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কথা জানায়।

আর এরপরই শেয়ারবাজারে ক্রেডিট সুইসের শেয়ারের ব্যাপক দরপতন শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে ক্রেডিট সুইসকে তহবিল দিয়েছিল সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

এমন অবস্থায় সোমবার শেয়ারবাজার খোলার আগেই রোববার ইউবিএস’র সঙ্গে বসে এই চুক্তি কার্যকর করতে মধ্যস্থতা করে সুইজারল্যান্ড সরকারের প্রতিনিধিরা।