ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চাহিদা কমছে, ১ বছরে আইফোনের মুনাফা হ্রাস ১১ শতাংশের বেশি

দিন দিন চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় মুনাফা কমছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইফোন প্রস্তুতকারী কোম্পানি ফক্সকোন লিমিটেডের। বিগত বছরগুলোর তুলনায় গত এক বছরে আইফোন বিক্রি বাবদ মুনাফা ১১ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে বলে রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তাইওয়ানভিত্তিক এই কোম্পানি।

ফক্সকোনের রোববারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইফোন বিক্রি বাবদ কোম্পানির যে মুনাফা হয়েছিল; তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুনাফা কমেছে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

এই পরিস্থিতির জন্য চীনের করোনা মহামারি সংক্রান্ত কঠোর নীতিমালা এবং তার জেরে সেখানকার কারখানাগুলোতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলাকে দায়ী করেছে ফক্সকোন। কোম্পানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনে কঠোর করোনাবিধির কারণে আইফোনের সর্বশেষ সংস্করণ আইফোন ১৪’র উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে, বাজারে তার প্রভাব পড়ে এবং ক্রেতারা আইফোন কেনা কমিয়ে দেন।

প্রসঙ্গত,তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপলের সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্য আইফোনের এশীয় এজেন্ট এই ফক্সকোন লিমিটেড। আইফোনের অধিকাংশ ফোন প্রস্তুত করে এই তাইওয়ানভিত্তিক এই কোম্পানিটি।

চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, চেক রিপাবলিক, যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৪টি দেশে মোট ১৭৩টি কারখানা আছে ফক্সকোনের। এসবের মধ্যে চীনের ঝেংঝৌ শহরের কারখানাটি সবচেয়ে বড়। প্রায় ২ লাখ মানুষ কাজ করেন সেখানে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আইফোন ১৪’র নকশা উন্মোচন করে অ্যাপল। গত বছরের শেষদিকে বাজারে এই ফোনটির আসার কথা ছিল। কিন্তু চীনের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঝেংঝৌ শহরে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন জারি করায় নতুন এই ফোনের চালান বাজারে আসতে বিলম্ব হতে পারে বলে নভেম্বরের দিকে এক বার্তায় জানিয়েছিল আইফোনের মূল কোম্পানি অ্যাপল।

লকডাউনের জেরে আইফোনের বৃহত্তম কারখানাটিতে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। সেসময় কারখানার গোটা উৎপাদন ব্যাবস্থা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছিল বলে রোববারের বিবৃতিতে জানিয়েছে ফক্সকোন।

করোনা মহামারির প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, বাধ্যতামূলক ঘন ঘন করোনা টেস্ট— প্রভৃতি কঠোর করোনাবিধি জারি রেখেছিল চীনের সরকার। মাসের পর মাস এসব করোনাবিধির মধ্যে থাকতে থাকতে অতীষ্ঠ চীনের সাধারণ জনগণ গত বছর নভেম্বরের শেষ দিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। সেই বিক্ষোভে শামিল হন ঝেংঝৌ’র আইফোন কারখানার কর্মীরাও।

জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভের পর ডিসেম্বরে যাবতীয় করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। তার পর থেকে অন্য আর সবকিছুর মতো স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে শুরু করে শিল্প কারখানার উৎপাদন।

ঝেংঝৌ’র কারখানাতেও পুরোদমে শুরু হয় উৎপাদন এবং লোকসান কাটিয়ে উঠতে শুরু করে ফক্সকোন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আইফোন বিক্রয় করে কোম্পানির যে আয় হয়েছে, তাতে  মুনাফা আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে।

ফক্সকোনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির এক মাসে আইফোন বিক্রি করে ফক্সকোন আয় করেছে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। মাসিক ভিত্তিকে এটি ফক্সকোন লিমিটেডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

চাহিদা কমছে, ১ বছরে আইফোনের মুনাফা হ্রাস ১১ শতাংশের বেশি

আপডেট সময় ০৭:৪৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

দিন দিন চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় মুনাফা কমছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইফোন প্রস্তুতকারী কোম্পানি ফক্সকোন লিমিটেডের। বিগত বছরগুলোর তুলনায় গত এক বছরে আইফোন বিক্রি বাবদ মুনাফা ১১ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে বলে রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তাইওয়ানভিত্তিক এই কোম্পানি।

ফক্সকোনের রোববারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইফোন বিক্রি বাবদ কোম্পানির যে মুনাফা হয়েছিল; তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুনাফা কমেছে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

এই পরিস্থিতির জন্য চীনের করোনা মহামারি সংক্রান্ত কঠোর নীতিমালা এবং তার জেরে সেখানকার কারখানাগুলোতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলাকে দায়ী করেছে ফক্সকোন। কোম্পানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনে কঠোর করোনাবিধির কারণে আইফোনের সর্বশেষ সংস্করণ আইফোন ১৪’র উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে, বাজারে তার প্রভাব পড়ে এবং ক্রেতারা আইফোন কেনা কমিয়ে দেন।

প্রসঙ্গত,তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপলের সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্য আইফোনের এশীয় এজেন্ট এই ফক্সকোন লিমিটেড। আইফোনের অধিকাংশ ফোন প্রস্তুত করে এই তাইওয়ানভিত্তিক এই কোম্পানিটি।

চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, চেক রিপাবলিক, যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৪টি দেশে মোট ১৭৩টি কারখানা আছে ফক্সকোনের। এসবের মধ্যে চীনের ঝেংঝৌ শহরের কারখানাটি সবচেয়ে বড়। প্রায় ২ লাখ মানুষ কাজ করেন সেখানে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আইফোন ১৪’র নকশা উন্মোচন করে অ্যাপল। গত বছরের শেষদিকে বাজারে এই ফোনটির আসার কথা ছিল। কিন্তু চীনের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঝেংঝৌ শহরে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন জারি করায় নতুন এই ফোনের চালান বাজারে আসতে বিলম্ব হতে পারে বলে নভেম্বরের দিকে এক বার্তায় জানিয়েছিল আইফোনের মূল কোম্পানি অ্যাপল।

লকডাউনের জেরে আইফোনের বৃহত্তম কারখানাটিতে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। সেসময় কারখানার গোটা উৎপাদন ব্যাবস্থা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছিল বলে রোববারের বিবৃতিতে জানিয়েছে ফক্সকোন।

করোনা মহামারির প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, বাধ্যতামূলক ঘন ঘন করোনা টেস্ট— প্রভৃতি কঠোর করোনাবিধি জারি রেখেছিল চীনের সরকার। মাসের পর মাস এসব করোনাবিধির মধ্যে থাকতে থাকতে অতীষ্ঠ চীনের সাধারণ জনগণ গত বছর নভেম্বরের শেষ দিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। সেই বিক্ষোভে শামিল হন ঝেংঝৌ’র আইফোন কারখানার কর্মীরাও।

জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভের পর ডিসেম্বরে যাবতীয় করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। তার পর থেকে অন্য আর সবকিছুর মতো স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে শুরু করে শিল্প কারখানার উৎপাদন।

ঝেংঝৌ’র কারখানাতেও পুরোদমে শুরু হয় উৎপাদন এবং লোকসান কাটিয়ে উঠতে শুরু করে ফক্সকোন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আইফোন বিক্রয় করে কোম্পানির যে আয় হয়েছে, তাতে  মুনাফা আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে।

ফক্সকোনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির এক মাসে আইফোন বিক্রি করে ফক্সকোন আয় করেছে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। মাসিক ভিত্তিকে এটি ফক্সকোন লিমিটেডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড।