ঢাকা ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বসন্ত-ভালোবাসায় যুগলদের পদচারণ, থেমে নেই সিঙ্গেলরাও

বসন্ত বাতাসে সইগো, বসন্ত বাতাসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ,
আমার বাড়ি আসে সইগো, বসন্ত বাতাসে

খ্যাতনামা বাউলসাধক শাহ আব্দুল করিমের গানের সেই বসন্তকাল শুরু হয়ে গেছে। বসন্তকালের প্রথম মাস ফাগুনের শুরুর দিন আজ মঙ্গলবার। অন্যদিকে একইদিনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হওয়ায় যুগলদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো রাজধানী।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় দেখা গেছে, বসন্ত বরণে নানা আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে নারীদের মুখে বাহারি রং লাগিয়ে বসন্ত উদযাপনে মেতে উঠতে দেখা যায়। বসন্তকে উদযাপন করতে ‘বসন্ত উৎসব ১৪২৯’ এর ব্যানারে একটি ফটো ফ্রেমও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নারীদের ছবি তুলতেও দেখা গেছে।

উচ্ছ্বসিত নারীদের দেখে মনে হয়েছে, তারা যেন ভালবাসার দেবীরূপে আবির্ভূত হয়েছেন।

এক যুগলদের মধ্যে সানজানা বলেন, আমরা ভালবাসা দিবসে ইউজ টু। প্রতিবছরই ভালোবাসা দিবসে আমরা এখানে আসি। আজকে সারাদিন আমরা ঘুরবো, একসঙ্গে খাব। সাধারণ দিনগুলোতে আমাদের ক্লাস এসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। যার ফলে আমরা এতটা ঘোরার সুযোগ পাই না।

এরই ফাঁকে যুগলের আরেক অংশ বলেন, আজকে আমাদের পঞ্চম বসন্ত চলছে। অর্থাৎ তাদের এই ভালোবাসার সূচনা হয়েছিল বছর পাঁচেক আগে।

ভালোবাসা শুরুর গল্প বলতে গিয়ে সানজানা বলেন, ও আমার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র। পরিচয়টা ফেসবুকে হয়েছিল। একটা বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আস্তে আস্তে আমরা পাঁচ বছর কাটিয়ে ফেলেছি। আমাদের প্রথম ফাল্গুনটা অনেক সুন্দর ছিল।

আরেক যুগল থেকে জাহিদ বলেন, বসন্ত সব সময় আসে না। আজকে ভালোবাসা দিবস একইসঙ্গে বসন্ত। তাই ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে দিনটি কাটাতে চাই। বসন্ত চলে এসেছে। এখন সবকিছুই নিজেকে নতুনভাবে রাঙিয়ে তুলবে। আমরাও নিজেদের নতুনভাবে রাঙাতে চাই।

যুগলদের ভিড়ে অনেকেই একা বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। তাদের মধ্যেও এক ধরনের আক্ষেপ দেখা গেছে। অপেক্ষায় রয়েছেন কখন তার ভালবাসার মানুষটি আসবে, তার হাত ধরে ঘুরবে। একইসঙ্গে ভালবাসা দিবস ও বসন্ত কাটাবে।

বান্ধবিদের সঙ্গে ঘুরতে আসা অন্তরা বলেন, আমি আজকে বসন্তের রঙে সেজেছি। আলহামদুলিল্লাহ বান্ধবিদের সঙ্গে আমার বসন্তের দিনটি ভালো কাটছে। সারাদিন বান্ধবিদের সঙ্গে নিয়ে খাব, ঘুরবো, ছবি তুলবো। আমি চাই সবার বসন্ত ভালো কাটুক। একইসঙ্গে আজকে ভালোবাসা দিবস, তাই ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে তাদের দিনটিও ভালো কাটুক।

কখনো ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জীবনে এখনো ভালোবাসার মানুষ আসেনি। যদি কখনো আসে, তবে অবশ্যই বের হব। একইসঙ্গে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে বাবা-মা তো আছেন তাদের সঙ্গেও সময় কাটাবো।

এদিকে আজ একই দিনে বসন্তের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ভালোবাসার দিন। ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের রঙ মিলেমিশে এক হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটেছে। আর সেই সঙ্গে ঋতুরাজের হাত ধরে এবারও এলো ভালোবাসার এই বিশেষ দিনটি।

একদিকে বাসন্তী রঙ, অন্যদিকে ভালোবাসার রঙের জোয়ারে প্রকৃতি একাকার আজ। তেমনি শীতের রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে ফুলে ফুলে সেজে উঠতে ব্যস্ত প্রকৃতি। প্রকৃতিতে ফাল্গুনের হাওয়া, বাতাসে বসন্তের উন্মাদনা। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল সাজে। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। প্রকৃতিও আগুন রাঙা ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকৃতি জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বসন্ত-ভালোবাসায় যুগলদের পদচারণ, থেমে নেই সিঙ্গেলরাও

আপডেট সময় ০৬:১৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বসন্ত বাতাসে সইগো, বসন্ত বাতাসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ,
আমার বাড়ি আসে সইগো, বসন্ত বাতাসে

খ্যাতনামা বাউলসাধক শাহ আব্দুল করিমের গানের সেই বসন্তকাল শুরু হয়ে গেছে। বসন্তকালের প্রথম মাস ফাগুনের শুরুর দিন আজ মঙ্গলবার। অন্যদিকে একইদিনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হওয়ায় যুগলদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো রাজধানী।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় দেখা গেছে, বসন্ত বরণে নানা আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে নারীদের মুখে বাহারি রং লাগিয়ে বসন্ত উদযাপনে মেতে উঠতে দেখা যায়। বসন্তকে উদযাপন করতে ‘বসন্ত উৎসব ১৪২৯’ এর ব্যানারে একটি ফটো ফ্রেমও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নারীদের ছবি তুলতেও দেখা গেছে।

উচ্ছ্বসিত নারীদের দেখে মনে হয়েছে, তারা যেন ভালবাসার দেবীরূপে আবির্ভূত হয়েছেন।

এক যুগলদের মধ্যে সানজানা বলেন, আমরা ভালবাসা দিবসে ইউজ টু। প্রতিবছরই ভালোবাসা দিবসে আমরা এখানে আসি। আজকে সারাদিন আমরা ঘুরবো, একসঙ্গে খাব। সাধারণ দিনগুলোতে আমাদের ক্লাস এসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। যার ফলে আমরা এতটা ঘোরার সুযোগ পাই না।

এরই ফাঁকে যুগলের আরেক অংশ বলেন, আজকে আমাদের পঞ্চম বসন্ত চলছে। অর্থাৎ তাদের এই ভালোবাসার সূচনা হয়েছিল বছর পাঁচেক আগে।

ভালোবাসা শুরুর গল্প বলতে গিয়ে সানজানা বলেন, ও আমার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র। পরিচয়টা ফেসবুকে হয়েছিল। একটা বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আস্তে আস্তে আমরা পাঁচ বছর কাটিয়ে ফেলেছি। আমাদের প্রথম ফাল্গুনটা অনেক সুন্দর ছিল।

আরেক যুগল থেকে জাহিদ বলেন, বসন্ত সব সময় আসে না। আজকে ভালোবাসা দিবস একইসঙ্গে বসন্ত। তাই ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে দিনটি কাটাতে চাই। বসন্ত চলে এসেছে। এখন সবকিছুই নিজেকে নতুনভাবে রাঙিয়ে তুলবে। আমরাও নিজেদের নতুনভাবে রাঙাতে চাই।

যুগলদের ভিড়ে অনেকেই একা বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। তাদের মধ্যেও এক ধরনের আক্ষেপ দেখা গেছে। অপেক্ষায় রয়েছেন কখন তার ভালবাসার মানুষটি আসবে, তার হাত ধরে ঘুরবে। একইসঙ্গে ভালবাসা দিবস ও বসন্ত কাটাবে।

বান্ধবিদের সঙ্গে ঘুরতে আসা অন্তরা বলেন, আমি আজকে বসন্তের রঙে সেজেছি। আলহামদুলিল্লাহ বান্ধবিদের সঙ্গে আমার বসন্তের দিনটি ভালো কাটছে। সারাদিন বান্ধবিদের সঙ্গে নিয়ে খাব, ঘুরবো, ছবি তুলবো। আমি চাই সবার বসন্ত ভালো কাটুক। একইসঙ্গে আজকে ভালোবাসা দিবস, তাই ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে তাদের দিনটিও ভালো কাটুক।

কখনো ভালোবাসার মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জীবনে এখনো ভালোবাসার মানুষ আসেনি। যদি কখনো আসে, তবে অবশ্যই বের হব। একইসঙ্গে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে বাবা-মা তো আছেন তাদের সঙ্গেও সময় কাটাবো।

এদিকে আজ একই দিনে বসন্তের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ভালোবাসার দিন। ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের রঙ মিলেমিশে এক হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটেছে। আর সেই সঙ্গে ঋতুরাজের হাত ধরে এবারও এলো ভালোবাসার এই বিশেষ দিনটি।

একদিকে বাসন্তী রঙ, অন্যদিকে ভালোবাসার রঙের জোয়ারে প্রকৃতি একাকার আজ। তেমনি শীতের রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে ফুলে ফুলে সেজে উঠতে ব্যস্ত প্রকৃতি। প্রকৃতিতে ফাল্গুনের হাওয়া, বাতাসে বসন্তের উন্মাদনা। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল সাজে। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। প্রকৃতিও আগুন রাঙা ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকৃতি জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।