ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদেরসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা। পটুয়াখালীতে অগ্নিকাণ্ডে ৬ টি দোকান পুড়ে ভস্মিভূত, ক্ষতি অর্ধ কোটি টাকা এসআই কামাল প্রত্যাহার হলেও এএসআই তানভীর বহাল তবিয়তে গোলাম হোসেনের নেতৃত্বে চলছে বুঙ্গার ব্যবসা বৈষম্য বিরোধীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা গাজীপুরে দিন দিন কমছে বনভূমি-জলাশয়,বাড়ছে দখলকারী কবিরহাটের অবৈধ ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন জাফলংয়ে জুম পাড় কেটে পাথর উত্তোলন, হুমকিতে বল্লাঘাট মন্দির ও ফসলি জমি মিঠাপুকুরে ওয়ার্ল্ডভিশণ কতৃক শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ দিশেহারা ইটভাটার মালিকেরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি ক্রেতা শূন্য ইটভাটা নাগেশ্বরীর কচাকাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সর্বসাধারণের জন্য এম্বুলেন্স প্রধান

শিবচরে সাংবাদিকের বসত বাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট

  • অপূর্ব দাস
  • আপডেট সময় ০৮:৩৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫১৮ বার পড়া হয়েছে

মাদারীপুরের শিবচরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার নেতৃত্বে বিবাদমান জমি দখল নিতে এক সাংবাদিকের বসত বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। যৌথবাহিনীর গাড়ি বহর আসতে দেখেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে যৌথবাহিনী ৬ টি মোটরসাইকেল আটক করেছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

জানা যায়, দৈনিক কালবেলা পত্রিকার শিবচর উপজেলা প্রতিনিধি ও মফিতউল্লাহ হাওলাদারের কান্দি গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আবু ছালেহ মুছার পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে প্রতিবেশী দাদন বেপারীর ছেলে সাদ্দাম বেপারী গংদের সাথে। সেই বিরোধের জের ধরে সোমবার সকালে শিবচর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শত লোকজন আবু সালেহ মুছার বসত বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ঘরের সকল আসবাবপত্র বাহিরে ছুড়ে ফেলে দেয়। ঘরের চাল ও টিনের বেড়া অন্যত্র ফেলে লন্ডভন্ড করে দেয় পুরো বাড়ি। শুধু তাই নয় ভাংচুরকৃত ঘরের ভিটে থেকে মাটিও কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি।

খবর পেয়ে শিবচর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও শিবচর থানা পুলিশের একটি যৌথ অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে আসে। যৌথ বাহিনীর গাড়ি বহর দেখে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের ৬ টি মোটরসাইকেল আটক করেছে। এঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিকের পরিবার।

সাংবাদিক আবু সালেহ মুছার মা লতিফা ইয়াসমিন লতা বলেন, আমরা এই বাড়িতে প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছি। আজ সকালে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে আমার বসত ঘরে ভাঙচুর করেছে। এতে আমার ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আবু সালে মুসার বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িঘর সবকিছু ভাঙচুর করে ফেলেছে ওরা। সেনাবাহিনী পুলিশ এসে আমাদেরকে রক্ষা করেছে। তা না হলে ওরা আমাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলত। আমরা এখনো চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। যেকোনো মুহূর্তেই ওরা আবারো আমাদেরকে আক্রমণ করতে পারে। এই জমি আমাদের দলিলকৃত সম্পত্তি। ওরা পরে গোপনে দলিল করেছে। আমি আদালতে মামলা দিয়েছি। রায়ও পেয়েছি। এখনো আদালতে মামলা চলছে।

সাংবাদিক আবু সালেহ মুসা বলেন, তারা মোট তিনবার আমাদের বাড়িতে হামলা করল। এর আগে আরো দুইবার হামলা করছে। আমরা এই জমিনে আদালতের রায় পেয়েছি। রায় পাওয়ার পর তারা আমাদের উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আজকে সকালে তারা আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায় ভাঙচুর করে আমাদের বসতবাড়ি একদম জমিনের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। লুটপাট করেছে দামি জিনিস।

এ বিষয়ে যার নেতৃত্বে বসত বাড়িতে হামলা করা হয় সেই অভিযুক্ত রাশেদুজ্জামান রাশেদ মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা, আমি ওখানে যায়নি। আমি দূরে আছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাদ্দাম বেপারী বলেন, ওরা দীর্ঘদিন আমাদের জমি জোর করে দখলে রেখেছিল। আমি দলিল বলে আজকে লোকজন নিয়ে ওদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছি এবং জমিতে দখলে গিয়েছি। ওই জমিনে আমার সাপ কবলা রয়েছে। আমরা অন্যের জমি জোর করে দখল করিনি বরং দীর্ঘদিন ধরে ওরাই আমাদের জমি দখল করে রেখেছিল।

এ বিষয়ে শিবচর থানার ওসি মোহাম্মদ রতন শেখ বলেন, সংবাদ পেয়ে দ্রুতই সেনাবাহিনী সহ উপজেলা প্রশাসন সমন্বয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং ভাঙচুর প্রতিরোধ করি। আমাদের গাড়িবহর দেখে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি মোটরসাইকেল জব্দ করি। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদেরসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা।

শিবচরে সাংবাদিকের বসত বাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট

আপডেট সময় ০৮:৩৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

মাদারীপুরের শিবচরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার নেতৃত্বে বিবাদমান জমি দখল নিতে এক সাংবাদিকের বসত বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। যৌথবাহিনীর গাড়ি বহর আসতে দেখেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে যৌথবাহিনী ৬ টি মোটরসাইকেল আটক করেছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

জানা যায়, দৈনিক কালবেলা পত্রিকার শিবচর উপজেলা প্রতিনিধি ও মফিতউল্লাহ হাওলাদারের কান্দি গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আবু ছালেহ মুছার পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে প্রতিবেশী দাদন বেপারীর ছেলে সাদ্দাম বেপারী গংদের সাথে। সেই বিরোধের জের ধরে সোমবার সকালে শিবচর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শত লোকজন আবু সালেহ মুছার বসত বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ঘরের সকল আসবাবপত্র বাহিরে ছুড়ে ফেলে দেয়। ঘরের চাল ও টিনের বেড়া অন্যত্র ফেলে লন্ডভন্ড করে দেয় পুরো বাড়ি। শুধু তাই নয় ভাংচুরকৃত ঘরের ভিটে থেকে মাটিও কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি।

খবর পেয়ে শিবচর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও শিবচর থানা পুলিশের একটি যৌথ অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে আসে। যৌথ বাহিনীর গাড়ি বহর দেখে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের ৬ টি মোটরসাইকেল আটক করেছে। এঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিকের পরিবার।

সাংবাদিক আবু সালেহ মুছার মা লতিফা ইয়াসমিন লতা বলেন, আমরা এই বাড়িতে প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছি। আজ সকালে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে আমার বসত ঘরে ভাঙচুর করেছে। এতে আমার ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আবু সালে মুসার বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িঘর সবকিছু ভাঙচুর করে ফেলেছে ওরা। সেনাবাহিনী পুলিশ এসে আমাদেরকে রক্ষা করেছে। তা না হলে ওরা আমাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলত। আমরা এখনো চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। যেকোনো মুহূর্তেই ওরা আবারো আমাদেরকে আক্রমণ করতে পারে। এই জমি আমাদের দলিলকৃত সম্পত্তি। ওরা পরে গোপনে দলিল করেছে। আমি আদালতে মামলা দিয়েছি। রায়ও পেয়েছি। এখনো আদালতে মামলা চলছে।

সাংবাদিক আবু সালেহ মুসা বলেন, তারা মোট তিনবার আমাদের বাড়িতে হামলা করল। এর আগে আরো দুইবার হামলা করছে। আমরা এই জমিনে আদালতের রায় পেয়েছি। রায় পাওয়ার পর তারা আমাদের উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আজকে সকালে তারা আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায় ভাঙচুর করে আমাদের বসতবাড়ি একদম জমিনের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। লুটপাট করেছে দামি জিনিস।

এ বিষয়ে যার নেতৃত্বে বসত বাড়িতে হামলা করা হয় সেই অভিযুক্ত রাশেদুজ্জামান রাশেদ মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা, আমি ওখানে যায়নি। আমি দূরে আছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাদ্দাম বেপারী বলেন, ওরা দীর্ঘদিন আমাদের জমি জোর করে দখলে রেখেছিল। আমি দলিল বলে আজকে লোকজন নিয়ে ওদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছি এবং জমিতে দখলে গিয়েছি। ওই জমিনে আমার সাপ কবলা রয়েছে। আমরা অন্যের জমি জোর করে দখল করিনি বরং দীর্ঘদিন ধরে ওরাই আমাদের জমি দখল করে রেখেছিল।

এ বিষয়ে শিবচর থানার ওসি মোহাম্মদ রতন শেখ বলেন, সংবাদ পেয়ে দ্রুতই সেনাবাহিনী সহ উপজেলা প্রশাসন সমন্বয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং ভাঙচুর প্রতিরোধ করি। আমাদের গাড়িবহর দেখে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি মোটরসাইকেল জব্দ করি। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।