ঢাকা ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিস ব্যবসার আড়ালে কালা জরিপের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, টর্চার সেল

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত ১৫ বছর ধরে ডিস ব্যবসা পরিচালনা করছেন ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত জরিপ মিয়া ওরফে কালা জরিপ (৪০)। জমির দালালি, অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারের জন্য একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। 

ডিস ব্যবসার আড়ালে সন্ত্রাসী বাহিনীকে ব্যবহার করে হাসনাবাদ এলাকায় জমি দখল করে সেখানে ‘হাসনাবাদ সুপার মার্কেট’ নির্মাণ করেন। আর সেই সুপার মার্কেটের একটি কক্ষকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতেন সন্ত্রাসী কালা জরিপ।

শুধু তাই নয়, ওই টর্চার সেলে নিয়মিত চলতো মদের আসর। বিভিন্ন নারীদের সেখানে নিয়ে আসতেন কালা জরিপ ও তার সহযোগীরা। প্রায় সময় ওই টর্চার সেলে বিভিন্ন নারীদের এনে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি র‌্যাবের।

চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক, মারামারি, ধর্ষণ ও হত্যাসহ নানা অপরাধে কালা জরিপের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরপরও দমে যাননি সন্ত্রাসী কালা জরিপ।

নিজের বিরুদ্ধে থাকা মামলার সাক্ষীদের বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে কোর্টে যেতে দিতেন না। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে টর্চার সেলে ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো।

র‌্যাব জানিয়েছে, হাসনাবাদ এলাকায় ত্রাস ছিলেন কালা জরিপ। তার ভয়ে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে থাকত স্থানীয়রা।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকার হাসনাবাদ সুপার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে কালা জরিপ ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০ এর একটি দল। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও মাদক জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া কালা জরিপের সহযোগীরা হলেন—মো. আনিসুর রহমান (৩৮), মো. জাহিদ ওরফে বাবু (৪৫) ও ঝুমুর আক্তার (২৬)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি, একটি টেজার গান, একটি এয়ার পিস্তল, একটি রাম দা, একটি ছোরা, একটি চাকু, একটি লোহার এসএস পাইপ, একটি কাঠের লাঠি, ৫৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪ বোতল বিদেশি মদ, একটি গাড়ি, ৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার কালা জরিপ কেরানীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনীর মূলহোতা। কালা জরিপের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসা, অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও হত্যাসহ বিভিন্ন প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। তাদের কাজে কেউ বাঁধা দিলে জরিপ ও তার সহযোগীরা তাদের ধরে হাসনাবাদ সুপার মার্কেটের টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালাতেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার হুমকিও দিতেন।

জরিপের সহযোগী আনিছুর রহমান দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় একটি এসএস ওয়ার্কশপ রয়েছে। সে তার ব্যবসার আড়ালে জরিপের সাথে মাদক ব্যবসাসহ সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এছাড়া আনিসুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও হত্যা মামলাসহ ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

তার অন্যতম সহযোগী জাবিদ ওরফে রহিম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় গার্মেন্টস ব্যবসা করেন। এই ব্যবসার আড়ালে জরিপের সঙ্গে হাসনাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী ছিলেন তিনি।

হাসনাবাদ সুপার মার্কেটের টর্চার সেলে প্রায় সময় নারীদের নিয়ে ফুর্তিবাজি করতেন কালা জরিপ ও তার সহযোগী জাবিদ। সেখানে অভিযানের সময় কালা জরিপের নারী সহযোগী ঝুমুর আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঝুমুর প্রায় নিয়মিত তাদের সঙ্গে ফুর্তিবাজি করতে জরিপের টর্চার সেলে আসতেন।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, কালা জরিপের এই টর্চার সেলে মাদকদ্রব্য ও নারীদের সরবরাহ করতেন জরিপের আরেক সহযোগী আনিসুর রহমান। আর মিরপুর থেকে নিয়মিত এসে জরিপের আসরে যোগ দিতেন জাহিদ। সেখানে রাতভর মদ্যপান ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতেন তারা।

dhakapost

অভিযানে জাহিদের পাজেরো জিপ গাড়িতে তল্লাশি করে একটি লাইসেন্স করা পিস্তল পাওয়া যায়। এছাড়াও পিস্তল সাদৃশ্য একটি অবৈধ এয়ার গান পাওয়া যায়। যার কোনো লাইসেন্স নেই।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, অস্ত্র আইনে ও মানবপাচার আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছে এমন কোনো ভুক্তভোগীকে পাওয়া গেছে কি না? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, পতিতাবৃত্তি বাংলাদেশের আইনে অবৈধ। সেটা জোড় করে আনুক আর স্বেচ্ছায় বা পয়সার বিনিময়ে আনুক, সেটা অবৈধ। কোনো ব্যক্তি যদি বিবাহবহির্ভূত কোনো নারীর সঙ্গে নিয়মিত মেলামেশা করে তাহলে সেটি আইনের চোখে অপরাধ।

কালা জরিপের পেছনে ইন্ধনদাতা কে বা কারা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, র‌্যাবের তদন্তে উঠে এসেছে, জরিপ নিজেই একজন বড় সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। হাসনাবাদ সুপার মার্কেটটি তার কথিত সম্পত্তি। এটাও তিনি দখল করে রেখেছেন। তার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। ওই বাহিনীতে ২২ জন সদস্য যুক্ত থাকার তথ্য ও নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের দিয়ে জরিপ সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করাতেন। তথ্য অনুযায়ী, জরিপের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় যারা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন, প্রতিনিয়ত তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হতো। মূলত এলাকায় তিনি ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছেন।

তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না? জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি অপরাধী এটাই তার পরিচয়।  আমরা তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাইনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিস ব্যবসার আড়ালে কালা জরিপের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, টর্চার সেল

আপডেট সময় ০৮:২২:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত ১৫ বছর ধরে ডিস ব্যবসা পরিচালনা করছেন ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত জরিপ মিয়া ওরফে কালা জরিপ (৪০)। জমির দালালি, অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারের জন্য একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। 

ডিস ব্যবসার আড়ালে সন্ত্রাসী বাহিনীকে ব্যবহার করে হাসনাবাদ এলাকায় জমি দখল করে সেখানে ‘হাসনাবাদ সুপার মার্কেট’ নির্মাণ করেন। আর সেই সুপার মার্কেটের একটি কক্ষকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতেন সন্ত্রাসী কালা জরিপ।

শুধু তাই নয়, ওই টর্চার সেলে নিয়মিত চলতো মদের আসর। বিভিন্ন নারীদের সেখানে নিয়ে আসতেন কালা জরিপ ও তার সহযোগীরা। প্রায় সময় ওই টর্চার সেলে বিভিন্ন নারীদের এনে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি র‌্যাবের।

চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক, মারামারি, ধর্ষণ ও হত্যাসহ নানা অপরাধে কালা জরিপের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরপরও দমে যাননি সন্ত্রাসী কালা জরিপ।

নিজের বিরুদ্ধে থাকা মামলার সাক্ষীদের বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে কোর্টে যেতে দিতেন না। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে টর্চার সেলে ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো।

র‌্যাব জানিয়েছে, হাসনাবাদ এলাকায় ত্রাস ছিলেন কালা জরিপ। তার ভয়ে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে থাকত স্থানীয়রা।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকার হাসনাবাদ সুপার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে কালা জরিপ ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০ এর একটি দল। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও মাদক জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া কালা জরিপের সহযোগীরা হলেন—মো. আনিসুর রহমান (৩৮), মো. জাহিদ ওরফে বাবু (৪৫) ও ঝুমুর আক্তার (২৬)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি, একটি টেজার গান, একটি এয়ার পিস্তল, একটি রাম দা, একটি ছোরা, একটি চাকু, একটি লোহার এসএস পাইপ, একটি কাঠের লাঠি, ৫৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪ বোতল বিদেশি মদ, একটি গাড়ি, ৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার কালা জরিপ কেরানীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনীর মূলহোতা। কালা জরিপের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসা, অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও হত্যাসহ বিভিন্ন প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। তাদের কাজে কেউ বাঁধা দিলে জরিপ ও তার সহযোগীরা তাদের ধরে হাসনাবাদ সুপার মার্কেটের টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালাতেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার হুমকিও দিতেন।

জরিপের সহযোগী আনিছুর রহমান দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় একটি এসএস ওয়ার্কশপ রয়েছে। সে তার ব্যবসার আড়ালে জরিপের সাথে মাদক ব্যবসাসহ সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এছাড়া আনিসুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও হত্যা মামলাসহ ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

তার অন্যতম সহযোগী জাবিদ ওরফে রহিম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় গার্মেন্টস ব্যবসা করেন। এই ব্যবসার আড়ালে জরিপের সঙ্গে হাসনাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী ছিলেন তিনি।

হাসনাবাদ সুপার মার্কেটের টর্চার সেলে প্রায় সময় নারীদের নিয়ে ফুর্তিবাজি করতেন কালা জরিপ ও তার সহযোগী জাবিদ। সেখানে অভিযানের সময় কালা জরিপের নারী সহযোগী ঝুমুর আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঝুমুর প্রায় নিয়মিত তাদের সঙ্গে ফুর্তিবাজি করতে জরিপের টর্চার সেলে আসতেন।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, কালা জরিপের এই টর্চার সেলে মাদকদ্রব্য ও নারীদের সরবরাহ করতেন জরিপের আরেক সহযোগী আনিসুর রহমান। আর মিরপুর থেকে নিয়মিত এসে জরিপের আসরে যোগ দিতেন জাহিদ। সেখানে রাতভর মদ্যপান ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতেন তারা।

dhakapost

অভিযানে জাহিদের পাজেরো জিপ গাড়িতে তল্লাশি করে একটি লাইসেন্স করা পিস্তল পাওয়া যায়। এছাড়াও পিস্তল সাদৃশ্য একটি অবৈধ এয়ার গান পাওয়া যায়। যার কোনো লাইসেন্স নেই।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, অস্ত্র আইনে ও মানবপাচার আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছে এমন কোনো ভুক্তভোগীকে পাওয়া গেছে কি না? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, পতিতাবৃত্তি বাংলাদেশের আইনে অবৈধ। সেটা জোড় করে আনুক আর স্বেচ্ছায় বা পয়সার বিনিময়ে আনুক, সেটা অবৈধ। কোনো ব্যক্তি যদি বিবাহবহির্ভূত কোনো নারীর সঙ্গে নিয়মিত মেলামেশা করে তাহলে সেটি আইনের চোখে অপরাধ।

কালা জরিপের পেছনে ইন্ধনদাতা কে বা কারা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, র‌্যাবের তদন্তে উঠে এসেছে, জরিপ নিজেই একজন বড় সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। হাসনাবাদ সুপার মার্কেটটি তার কথিত সম্পত্তি। এটাও তিনি দখল করে রেখেছেন। তার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। ওই বাহিনীতে ২২ জন সদস্য যুক্ত থাকার তথ্য ও নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের দিয়ে জরিপ সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করাতেন। তথ্য অনুযায়ী, জরিপের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় যারা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন, প্রতিনিয়ত তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হতো। মূলত এলাকায় তিনি ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছেন।

তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না? জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি অপরাধী এটাই তার পরিচয়।  আমরা তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাইনি।