ঢাকা ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

চীনে শ্মশানে ভিড়, মরদেহ দাহ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা স্বজনদের

চীনে ব্যাপকভাবে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সংক্রমণের পাশাপাশি ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। এতে করে চীনের শ্মশানগুলোতে মরদেহের সারি বাড়ছে এবং সেখানে প্রিয়জনের মরদেহ দাহ করতে স্বজনদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম সিএনএন এই তথ্য সামনে এনেছে বলে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবদনে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে কোভিড-১৯ সংক্রমণ উল্কাগতিতে বাড়তে থাকায় এশিয়ার এই দেশটি জুড়ে শ্মশানগুলো ভর্তি হয়ে যাচ্ছে এবং লোকেরা তাদের প্রিয়জনকে দাহ করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছে বলে সিএনএন জানিয়েছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে স্বজনদের মরদেহের জন্য শবযান খুঁজে বের করার চেষ্টার পর অনেককে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। এছাড়া অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াস্থলে মরদেহ দাহ করার জন্য স্লট পেতে অসুবিধায় পড়ার বর্ণনাও সেখানে করছেন অনেকে। সিএনএন বলছে, চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে হাসপাতালগুলোতে জনাকীর্ণ ওয়ার্ড এবং জনপূর্ণ শ্মশানের দৃশ্যগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে। চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকারের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী কোভিড-১৯ এর কারণে মাত্র কয়েকজন মারা যাচ্ছে।

সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বেইজিংয়ের প্রধান একটি শ্মশান সম্পূর্ণভাবে পরিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এমনকি শ্মশান এলাকার বাইরে গাড়ির দীর্ঘ সারিও ছিল যারা ভেতরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এছাড়া শ্মশানের চুল্লি থেকে ক্রমাগত ধোঁয়া বের হতে এবং হলুদ মরদেহবাহী ব্যাগ ধাতব পাত্রের ভেতরে জমা হওয়ার কথাও বলা হয়। এর পাশাপাশি শোকাহত পরিবারগুলো সারিতে দাঁড়িয়ে নিহতদের ছবি তুলেতে অপেক্ষা করছিলেন বলেও জানায় সিএনএন।

কিছু লোক বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর মৃত প্রিয়জনকে দাহ করার জন্য তারা এক দিনেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছেন। একজন ব্যক্তি সিএনএনকে বলেছেন, যে হাসপাতালে তার বন্ধু মারা গেছে সেটি মরদেহে পূর্ণ ছিল এবং তার বন্ধুকে হাসপাতালের মেঝেতে রাখা হয়েছিল।

অন্যদিকে আশপাশের দোকানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করা হয়। তেমনই একটি দোকানের এক ফুল বিক্রেতা বলছেন, তার স্টক শেষ হয়ে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া ফুটেজের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অনেক অংশের শ্মশানগুলো মৃতদেহের ঢেউ সামলাতে লড়াই করছে।

অবশ্য করোনারয় মৃত্যু নিয়ে চীনের সরকারি তথ্যের বিষয়ে সমালোচনা রয়েছে। সংক্রামক রোগ বিষয়ক চীনের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক ওয়াং গুইকিয়াং বলেছেন, ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের সর্বশেষ নির্দেশিকা অনুসারে- কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের মৃত্যু কেবল নিউমোনিয়া এবং শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতার কারণে হচ্ছে, তারাই কোভিডে মারা যাচ্ছেন বলে বিবেচিত হচ্ছে।

ওয়াং গুইকিয়াং বলেন, যারা অন্য কোনও রোগ বা হার্ট অ্যাটাকের মতো অন্তর্নিহিত অবস্থার কারণে মারা গেছেন বলে মনে করা হয়, তাদের মৃত্যু ভাইরাসজনিত মৃত্যু হিসেবে গণ্য করা হবে না যদিও তারা মৃত্যুর সময়ে কোভিড-১৯-এ সংক্রামিত ছিলেন। কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা গণনার জন্য চীনের মানদণ্ড ব্যাখ্যা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেছেন, এই সংজ্ঞাটি ‘বেশ সংকীর্ণ’।

বুধবার রায়ান বলেন, ‘কোভিডের কারণে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন (অঙ্গ) সিস্টেমের ব্যর্থতা থেকে মারা যায়, যা মূলত সংক্রমণের তীব্রতার কারণে হয়ে থাকে।’ এটি কোভিডের সাথে সম্পর্কিত প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যাকে অনেকটাই অবমূল্যায়ন করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

চীনে শ্মশানে ভিড়, মরদেহ দাহ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা স্বজনদের

আপডেট সময় ০৩:৪৭:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

চীনে ব্যাপকভাবে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সংক্রমণের পাশাপাশি ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। এতে করে চীনের শ্মশানগুলোতে মরদেহের সারি বাড়ছে এবং সেখানে প্রিয়জনের মরদেহ দাহ করতে স্বজনদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম সিএনএন এই তথ্য সামনে এনেছে বলে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবদনে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে কোভিড-১৯ সংক্রমণ উল্কাগতিতে বাড়তে থাকায় এশিয়ার এই দেশটি জুড়ে শ্মশানগুলো ভর্তি হয়ে যাচ্ছে এবং লোকেরা তাদের প্রিয়জনকে দাহ করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছে বলে সিএনএন জানিয়েছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে স্বজনদের মরদেহের জন্য শবযান খুঁজে বের করার চেষ্টার পর অনেককে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। এছাড়া অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াস্থলে মরদেহ দাহ করার জন্য স্লট পেতে অসুবিধায় পড়ার বর্ণনাও সেখানে করছেন অনেকে। সিএনএন বলছে, চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে হাসপাতালগুলোতে জনাকীর্ণ ওয়ার্ড এবং জনপূর্ণ শ্মশানের দৃশ্যগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে। চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকারের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী কোভিড-১৯ এর কারণে মাত্র কয়েকজন মারা যাচ্ছে।

সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বেইজিংয়ের প্রধান একটি শ্মশান সম্পূর্ণভাবে পরিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এমনকি শ্মশান এলাকার বাইরে গাড়ির দীর্ঘ সারিও ছিল যারা ভেতরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এছাড়া শ্মশানের চুল্লি থেকে ক্রমাগত ধোঁয়া বের হতে এবং হলুদ মরদেহবাহী ব্যাগ ধাতব পাত্রের ভেতরে জমা হওয়ার কথাও বলা হয়। এর পাশাপাশি শোকাহত পরিবারগুলো সারিতে দাঁড়িয়ে নিহতদের ছবি তুলেতে অপেক্ষা করছিলেন বলেও জানায় সিএনএন।

কিছু লোক বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর মৃত প্রিয়জনকে দাহ করার জন্য তারা এক দিনেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছেন। একজন ব্যক্তি সিএনএনকে বলেছেন, যে হাসপাতালে তার বন্ধু মারা গেছে সেটি মরদেহে পূর্ণ ছিল এবং তার বন্ধুকে হাসপাতালের মেঝেতে রাখা হয়েছিল।

অন্যদিকে আশপাশের দোকানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করা হয়। তেমনই একটি দোকানের এক ফুল বিক্রেতা বলছেন, তার স্টক শেষ হয়ে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া ফুটেজের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অনেক অংশের শ্মশানগুলো মৃতদেহের ঢেউ সামলাতে লড়াই করছে।

অবশ্য করোনারয় মৃত্যু নিয়ে চীনের সরকারি তথ্যের বিষয়ে সমালোচনা রয়েছে। সংক্রামক রোগ বিষয়ক চীনের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক ওয়াং গুইকিয়াং বলেছেন, ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের সর্বশেষ নির্দেশিকা অনুসারে- কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের মৃত্যু কেবল নিউমোনিয়া এবং শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতার কারণে হচ্ছে, তারাই কোভিডে মারা যাচ্ছেন বলে বিবেচিত হচ্ছে।

ওয়াং গুইকিয়াং বলেন, যারা অন্য কোনও রোগ বা হার্ট অ্যাটাকের মতো অন্তর্নিহিত অবস্থার কারণে মারা গেছেন বলে মনে করা হয়, তাদের মৃত্যু ভাইরাসজনিত মৃত্যু হিসেবে গণ্য করা হবে না যদিও তারা মৃত্যুর সময়ে কোভিড-১৯-এ সংক্রামিত ছিলেন। কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা গণনার জন্য চীনের মানদণ্ড ব্যাখ্যা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেছেন, এই সংজ্ঞাটি ‘বেশ সংকীর্ণ’।

বুধবার রায়ান বলেন, ‘কোভিডের কারণে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন (অঙ্গ) সিস্টেমের ব্যর্থতা থেকে মারা যায়, যা মূলত সংক্রমণের তীব্রতার কারণে হয়ে থাকে।’ এটি কোভিডের সাথে সম্পর্কিত প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যাকে অনেকটাই অবমূল্যায়ন করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।