ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অত্যাধুনিক রাডারের নজরদারিতে আসছে পুরো আকাশপথ

আন্তর্জাতিক সালিস আদালতের রায়ে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা নিজেদের সম্পত্তি হিসেবে পেয়েছে। বিশাল এ সমুদ্রসীমায় অন্য দেশের বিমান চলাচল করলেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত দীর্ঘদিনের পুরনো অ্যানালগ রাডার দিয়ে তা শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। পুরনো এই রাডারের পরিবর্তে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক রাডার যুক্ত হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩০ বছরের পুরনো রাডারটি কার্যক্ষমতা হারিয়েছে অনেক আগে।

বিমানবন্দরের বর্তমান রাডার দেশের পূর্ণ সীমানা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা দিয়ে কোনো আকাশযান উড়ে গেলে তা জানতে পারছে না বাংলাদেশ। এতে আকাশপথের কর্তৃত্ব ঝুঁকির মুখে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ফলে অন্য কোনো দেশের বিমান থেকে আকাশপথের রাজস্ব ও জরিমানা আদায়ে অত্যাধুনিক রাডারব্যবস্থা যুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার।

এভিয়েশন অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মফিজুর রহমান বলেন, ‘বারবার মেরামত করে পুরনো রাডারটি চালানো হচ্ছিল। ২০ বছর ধরে আমরা নতুন রাডার স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি। আকাশপথে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটি বড় ভূমিকা রাখবে। নতুন রাডারের সঙ্গে নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলও আসবে। এটি হলে এয়ারলাইনসগুলোর সেবা প্রাপ্তি আরো সহজ এবং নিরাপদ হবে। ’

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানায়, সাধারণত এক দেশের বিমান অবৈধভাবে অন্য দেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করলে কমপক্ষে ৫০০ ডলার জরিমানা দিতে হয়। নতুন রাডারের আওতায় বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বা আকাশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোসহ জরিমানা আদায়ের সুযোগ পাবে বেবিচক। নতুন রাডারটি আগামী বছর বসানো হবে বলে বেবিচক সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এই রাডারটি খুব জরুরি ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি ও একান্ত সহযোগিতায় আমরা রাডারটি পেতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে মূল রাডারটি তৈরি হয়ে গেছে। এখন শেষ পর্যায়ের যন্ত্রপাতি সংযোজন ও সেন্সর যুক্ত করার কাজ চলছে। আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই রাডার পরিচালনার জন্য ফ্রান্সে প্রশিক্ষণের জন্য গেছেন। আশা করছি এটি ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যে দেশে চলে আসবে। ২০২৩ সালের মধ্যে শাহজালালে রাডার বসানোর কাজ ও টাওয়ার নির্মাণ শেষ হয়ে যাবে। তৃতীয় টার্মিনালের পাশাপাশি আগামী বছরের অক্টোবরে নতুন এই রাডার উদ্বোধন করতে পারব বলে আশা করছি। ’

বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, ফ্রান্সের স্যাটেলাইট টেলিকমিউনিকেশন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেসে রাডার বানানোর কাজ চলছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৭৫ কোটি টাকা। রাডারটি বসানোর জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে এ দুটি প্রকল্প একসঙ্গে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল দিবস আজ

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস আজ বুধবার। ১৯৯৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গৃহীত এক সিদ্ধান্তে সদস্য দেশগুলোকে প্রতি বছর ৭ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস পালনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। দিবসটি পালনে ঢাকাসহ দেশের সব বিমানবন্দরে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক ব্যানারসহ নানা রঙে সাজানো হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অত্যাধুনিক রাডারের নজরদারিতে আসছে পুরো আকাশপথ

আপডেট সময় ০৯:৪৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক সালিস আদালতের রায়ে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা নিজেদের সম্পত্তি হিসেবে পেয়েছে। বিশাল এ সমুদ্রসীমায় অন্য দেশের বিমান চলাচল করলেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত দীর্ঘদিনের পুরনো অ্যানালগ রাডার দিয়ে তা শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। পুরনো এই রাডারের পরিবর্তে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক রাডার যুক্ত হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩০ বছরের পুরনো রাডারটি কার্যক্ষমতা হারিয়েছে অনেক আগে।

বিমানবন্দরের বর্তমান রাডার দেশের পূর্ণ সীমানা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা দিয়ে কোনো আকাশযান উড়ে গেলে তা জানতে পারছে না বাংলাদেশ। এতে আকাশপথের কর্তৃত্ব ঝুঁকির মুখে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ফলে অন্য কোনো দেশের বিমান থেকে আকাশপথের রাজস্ব ও জরিমানা আদায়ে অত্যাধুনিক রাডারব্যবস্থা যুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার।

এভিয়েশন অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মফিজুর রহমান বলেন, ‘বারবার মেরামত করে পুরনো রাডারটি চালানো হচ্ছিল। ২০ বছর ধরে আমরা নতুন রাডার স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি। আকাশপথে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটি বড় ভূমিকা রাখবে। নতুন রাডারের সঙ্গে নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলও আসবে। এটি হলে এয়ারলাইনসগুলোর সেবা প্রাপ্তি আরো সহজ এবং নিরাপদ হবে। ’

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানায়, সাধারণত এক দেশের বিমান অবৈধভাবে অন্য দেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করলে কমপক্ষে ৫০০ ডলার জরিমানা দিতে হয়। নতুন রাডারের আওতায় বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বা আকাশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোসহ জরিমানা আদায়ের সুযোগ পাবে বেবিচক। নতুন রাডারটি আগামী বছর বসানো হবে বলে বেবিচক সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এই রাডারটি খুব জরুরি ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি ও একান্ত সহযোগিতায় আমরা রাডারটি পেতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে মূল রাডারটি তৈরি হয়ে গেছে। এখন শেষ পর্যায়ের যন্ত্রপাতি সংযোজন ও সেন্সর যুক্ত করার কাজ চলছে। আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই রাডার পরিচালনার জন্য ফ্রান্সে প্রশিক্ষণের জন্য গেছেন। আশা করছি এটি ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যে দেশে চলে আসবে। ২০২৩ সালের মধ্যে শাহজালালে রাডার বসানোর কাজ ও টাওয়ার নির্মাণ শেষ হয়ে যাবে। তৃতীয় টার্মিনালের পাশাপাশি আগামী বছরের অক্টোবরে নতুন এই রাডার উদ্বোধন করতে পারব বলে আশা করছি। ’

বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, ফ্রান্সের স্যাটেলাইট টেলিকমিউনিকেশন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেসে রাডার বানানোর কাজ চলছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৭৫ কোটি টাকা। রাডারটি বসানোর জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে এ দুটি প্রকল্প একসঙ্গে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল দিবস আজ

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস আজ বুধবার। ১৯৯৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গৃহীত এক সিদ্ধান্তে সদস্য দেশগুলোকে প্রতি বছর ৭ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস পালনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। দিবসটি পালনে ঢাকাসহ দেশের সব বিমানবন্দরে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক ব্যানারসহ নানা রঙে সাজানো হবে।